ইনসাইড গ্রাউন্ড

অজিদের অসহায় আত্নসমর্পন, এক যুগ অপেক্ষার অবসান কিউইদের


প্রকাশ: 22/10/2022


Thumbnail

প্রতিশোধ কি নিয়েই নিলো নিউজিল্যান্ড! যদিও 'প্রতিশোধ' শব্দটি মানতে চান না অধিকাংশ ক্রিকেটারই। মাঠের খেলাটাই প্রাধান্য পায় খেলোয়াড়দের কাছে। তবে মনের গহীন কোণে প্রতিশোধের আগুনটা কি নিভু নিভু হয়ে জ্বলে না? এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়াটা কঠিনই। তবে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড ম্যাচের ফল দেখে কেউ যদি ধরে নেন-অতীতের হিসেবটা পুষিয়ে দিলো কিউইরা। তাহলে সেখানে ভুল হওয়ার খুব একটা সুযোগ নেই। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিকদের ৮৯ রানে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড।

এই অস্ট্রেলিয়ার কাছে গতবছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে ৮ উইকেটে হেরে শিরোপা স্বপ্ন ভঙ্গ হয় ব্ল্যাক ক্যাপসদের। গতবারের দুই ফাইনালিষ্টের ম্যাচ দিয়ে এবারের মূলপর্বের লড়াইটা শুরু হয়। যেখানে শেষ হাসি হেসেছে নিউজিল্যান্ডই। এ জয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরুর পাশাপাশি, প্রায় এক যুগ অপেক্ষার অবসান হলো কিউইদের। এই ম্যাচের আগে সবশেষ ২০১১ সালে অস্ট্রেলিয়ায় ম্যাচ জয়ের স্বাদ পেয়েছিলো নিউজিল্যান্ড।

ম্যাচের শুরুটা দুর্দান্ত হয় নিউজিল্যান্ডের। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে কিউইরা উড়ন্ত সূচনা পায় দুই ওপেনারের হাত ধরে। ফিন অ্যালেন ও ডেভন কনওয়ের কাছে দিশেহারা হয়ে পড়েন স্টার্ক, হ্যাজেলউড, কামিন্সরা। ব্যাটিংয়ের শুরুতেই আগ্রাসন দেখান ফিন অ্যালেন। তার সামনে বিবর্ণ ছিলেন অজি বোলাররা। ৫ম ওভারে হ্যাজেলউডের ইয়র্কারে বোল্ড হওয়ার আগে ১৪ বলে ৪২ রান করেন ফিন। এই ইনিংস খেলার পথে ৫টি চার ও ৩টি ছয় হাঁকান তিনি। ব্যাট করেছেন আড়াইশো'র উপর স্ট্রাইকরেটে।

পাওয়ার প্লেতে স্কোরবোর্ডে ১ উইকেটে ৬৫ রান যোগ করে কিউইরা। ফিন ফেরায় রানের গতি কিছুটা কমলেও নিউজিল্যান্ডকে এগিয়ে নিয়ে যান ডেভন কনওয়ে ও কেন উইলিয়ামসন। দলীয় ১২৫ রানে অ্যাডাম জাম্পার বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফিরে যান উইলিয়ামসন। তবে অজিদের সামনে দেয়াল হয়ে উঠেন আরেক ওপেনার কনওয়ে। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে এগিয়ে নেন রানের চাকা। তুলে নেন অর্ধশতক। 

কনওয়ে ও নিশামের হাত ধরে বাকিটা পথ স্বাচ্ছন্দ্যেই পার করে কিউইরা। তবে সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়ে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করতে পারলেন না কনওয়ে। নির্ধারিত ওভার শেষে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ দাড়ায় ৩ উইকেটে ২০০ রান। ৫৮ বলে ৯২ রানে অপরাজিত থাকেন কনওয়ে, যা ম্যাচে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রান। ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন নিশাম। অজিদের হয়ে ২টি উইকেট নেন জশ হ্যাজেলউড।

বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই ধুঁকতে থাকে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। ২০১ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে টিম সাউদির বলে বোল্ড হয়ে যান ডেভিড ওয়ার্নার। প্রয়োজন অনুযায়ী দলকে এগিয়ে নিতে ব্যর্থ হন অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ও মিচেল মার্শ। ৩০ রানে ফিঞ্চ ও ৩৪ রানে মার্শের উইকেট হারিয়ে চাপ পড়ে যায় অজিরা। পাওয়ার প্লে'তে স্কোরবোর্ডে রান আসে মাত্র ৩৭ রান। ৮ম ওভারের শেষ বলে দলীয় অর্ধশতক পূরণ করে স্বাগতিকরা।

ঠিক এর পরের ওভারেই মিচেল স্যান্টনারের বলে গ্লেন ফিলিপসের হাতে তালুবন্দি হন মার্কাস স্টয়নিসও। বেশ অনেকটা পথ দৌড়ে এসে শূন্যে ভেসে ক্যাচটি লুফে নেন ফিলিপস। যা বিশ্বকাপে সেরা ক্যাচের তালিকায় থাকবে তা নিশ্চত করে বলাই যায়। ব্ল্যাক ক্যাপসদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ধীর গতিতে রান তুলতে থাকে অজিরা। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে নিতে থাকেন স্যান্টনার-সাউদিরা। তাদের সামনে অসহায় আত্নসমর্পন করেন অজি ব্যাটসম্যানরা। ১৭ ওভার ১ বলেই ১১১ রানে অল আউট হয় অস্ট্রেলিয়া। ৮৯ রানের বিশাল জয় পায় নিউজিল্যান্ড। ৩টি করে উইকেট নেন মিচেল স্যান্টনার ও টিম সাউদি।

দুর্দান্ত ইনিংস খেলার স্বীকৃতি হিসেবে ম্যাচ সেরার পুরষ্কার ওঠে ডেভন কনওয়ের হাতে। আগামী ২৬ অক্টোবর আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলবে নিউজিল্যান্ড। আর ২৫ অক্টোবর অস্ট্রেলিয়ার প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭