সবজির দাম চড়া, বেড়েছে মুরগীর দামও

ঘূর্ণিঝড় 'সিত্রাং' এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে রাজধানীর বাজারগুলোতে। সরবরাহ কমে যাওয়ায় সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে বেড়েছে সবজি ও সব ধরনের মুরগির দাম। দাম বেড়েছে খোলা চিনির। তবে ডাল, পেঁয়াজ, তেল ও মাছের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে, যা আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে।

সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারগুলোতে প্রতিটি সবজির দাম কেজিতে ৫-১০ টাকা বেড়েছে। গোল কালো বেগুন ১০০ টাকা, গোল সাদা বেগুন ৮০ টাকা, লম্বা বেগুন ৭০-৮০ টাকা, শসা ৮০-১০০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা, বরবটি ৮০-১০০ টাকা, সাদা মুলা ৫০ টাকা, পটোল, ঢেঁড়স ও চিচিঙ্গা ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ছোট ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা করে। শিম ১২০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০০-১২০ টাকা, পাকা টমেটো ১৪০-১৫০ টাকা, কাঁচা টমেটো ১০০ টাকা, গাজর ১৪০-১৬০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। চালকুমড়া প্রতিটা ৫০ টাকা, লাউ আকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়।

ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। গতকাল (২৭ অক্টোবর) কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের এক ব্যবসায়ী মো. আমজাদ হোসেন জানান, ‘ব্রয়লার মুরগি ১৮৫-১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগি ৩২০ টাকা এবং দেশি মুরগির কেজি ৫০০ টাকা।’

চিনি বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ১১০ টাকা দামে। যা দুই সপ্তাহ আগেও বাজারে খোলা চিনি প্রতি কেজিতে বিক্রি হত ৯০ টাকায়। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে দাম বেড়ে খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা কেজি। 

তবে সবজি, মুরগী এবং চিনি এসবের দাম বাড়ার পাশাপাশি বাজারে গত চার-পাঁচ মাসে টানা কয়েক দফায় চালের দাম বাড়ার পর এবার কমতে শুরু করেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারে চালের দাম প্রতি বস্তায় কমেছে (৫০ কেজি) ১০০ টাকা পর্যন্ত। খুচরা বাজারে অবশ্য এর প্রভাব দেখা যায়নি।

রাজধানীতে চালের বড় পাইকারি বাজার বাবুবাজারের একাধিক পাইকারি ব্যবসায়ী বলছেন, বেশ কয়েকটি কারণে চালের দাম এখন কমতির দিকে। ব্যাপকভাবে চাল আমদানিতে বাজারে চালের মজুদ বাড়ছে। অন্যদিকে সরকার ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ভর্তুকি দিয়ে সাশ্রয়ী মূল্যে সারা দেশে চাল বিক্রি করায় বাজারে এখন চালের চাহিদা কিছুটা কম। আগামী মাসের শুরুতেই আমন ধানের মৌসুম আসছে, তাই চালকল এবং বড় ব্যবসায়ীরা মজুদ চাল বাজারে ছেড়ে দিচ্ছেন। এসব কারণে চালের দাম কিছুটা কমতির দিকে।

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) বাবুবাজার ঘুরে জানা যায়, প্রতি বস্তায় ১০০ টাকা কমে মোটা চাল ব্রি-২৮ বস্তাপ্রতি বিক্রি হয় ১৬০০-১৬৫০ টাকায়। মিনিকেট চাল প্রতি বস্তা বিক্রি হচ্ছে ৩২০০-৩৩০০ টাকায় এবং নাজিরশাইল বস্তা বিক্রি হচ্ছে ৩৫০০-৩৭৫০ টাকায়।

এ ব্যাপারে বাবুবাজারের চালের আড়ত মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন গণ্যমাধ্যমকে জানান, ‘পাইকারি বাজারে সব ধরনের চালের দাম বস্তাপ্রতি ১০০ টাকা কমেছে। সামনে আরো কমতে পারে।’

এদিকে চালের দাম কমলেও রাজধানীর রামপুরা ও বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে পাইকারিতে চালের দাম কমার প্রভাব দেখা যায়নি। আগের বাড়তি দামেই বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। মোটা চাল ব্রি-২৮ ৫৮-৬০ টাকা কেজি, মিনিকেট ৭০-৭৫ টাকা কেজি ও নাজিরশাইল ৮০-৮৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।