ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপিতে ৫ আতঙ্ক


প্রকাশ: 28/10/2022


Thumbnail

গত ১৫ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মত বিএনপি শক্তি সঞ্চয় করেছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের আবেগ উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে। এক ধরনের চাঙ্গা ভাব লক্ষ করা যাচ্ছে নেতাদের মধ্যে। দীর্ঘদিন পর বিএনপি নেতারা পারস্পারিক বিরোধ, অবিশ্বাস ভুলে পাশাপাশি দাঁড়াচ্ছেন, আন্দোলনের কথা বলছেন এবং সরকারকে চাপে ফেলছেন। বিএনপির এ ধরনের আশাবাদ, উচ্ছ্বাসের পিছনে কারণ হলো যে, বিএনপির সাম্প্রতিক কর্মসূচিগুলো সফল হওয়া। বিশেষ করে ঢাকার ১৭টি স্পটে বিএনপির সফল কর্মসূচির পর তিনটি বিভাগীয় শহরে তাদের প্রত্যাশার চেয়েও বেশি সফল জন মহাসমাবেশ করতে পেরেছে। এই সমস্ত মহাসমাবেশ গুলোতে পুলিশের বাঁধা, আওয়ামী লীগের নানা রকম টিকা-টিপ্পনির পরেও মানুষের উপস্থিতি তাদেরকে আশাবাদীই শুধু করেনি, উদ্বেলিত করেছে। তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমগুলো বিএনপির ব্যাপারে ইতিবাচক অবস্থান গ্রহণ করেছে। সব কিছু মিলিয়ে বিএনপির মধ্যে একধরণের চাঙ্গা ভাব। কিন্তু বাইরে চাঙ্গা ভাব থাকলেও ভেতরে বিএনপিতে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিএনপির নেতাদের মধ্যে এক ধরনের শঙ্কা এবং অনিশ্চয়তার বিষয়টিও কাজ করছে। বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে, বিএনপি এখন ৫ আতঙ্কে ভুগছে-

 ১. এরপরে কি: বিএনপি মনে করছে যে, বিভাগীয় সমাবেশগুলো ঠিক আছে। বিভাগীয় সমাবেশে লোক সমাগম হবে এবং এই লোক সমাগমের মাধ্যমে বিএনপির জনপ্রিয়তার একটি পরীক্ষা হচ্ছে সেটি ঠিক আছে। বিএনপি সবসময় জনপ্রিয় ছিলো। নির্দিষ্ট সংখ্যক জন সমর্থন বিএনপির সবসময় আছে। কিন্তু এই ১০ ডিসেম্বরের জন সভার পর বিএনপি কোন পথে যাবে? কি করবে? সে নিয়ে বিএনপির কাছে কোন সুস্পষ্ট ফর্মুলা নেই এবং এ ব্যাপারটি বিএনপির নেতাকর্মীরাও খুব একটা বেশি জানেন না। বিএনপির একাধিক নেতা বলছেন, এই সমস্ত চিন্তা-পরিকল্পনা সব আসে লন্ডন থেকে। কাজেই বিএনপি আগামীতে কি করবে? তার আন্দোলনের শেষ রোড ম্যাপের শেষ জায়গা কোথায় ইত্যাদি না জানার কারণে বিএনপির মধ্যে একধরনের আতঙ্ক চলছে। 

২. নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা: বিএনপির আতঙ্কের একটি বড় কারণ হচ্ছে যে, যে সমস্ত বিভাগীয় শহর গুলোতে তারা সভা-সমাবেশ করছে সেই সভা-সমাবেশ গুলোর পরে প্রত্যেকটি বিভাগীয় শহরেই নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা হচ্ছে। ফলে এই সমস্ত সমাবেশ গুলোর মধ্য দিয়ে যে সমস্ত স্থানীয় সংগঠন গড়ে তোলা সেই কাজটি ব্যাহত হচ্ছে এবং বিএনপি মনে করছে যে শেষ পর্যন্ত যদি এই ধারা অব্যাহত হতে থাকে  তাহলে পরে এই সমস্ত সমাবেশ শুধু মাত্র গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ ছাড়া আর কোন বিষয়ে লাভ হবে না। 

৩. সরকারের পরিকল্পনা: বিএনপি এখন পর্যন্ত দেখছে সরকারের মধ্যে কোন উদ্বেগ নেই, উৎকণ্ঠাও নেই এবং সরকার এসব আন্দোলনকে খুব একটা পাত্তাও দিচ্ছে না। যদিও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিএনপির বিষয় নিয়ে কঠোর সমালোচনা করছে। কিন্তু রাজনীতির শীর্ষ ব্যক্তিত্ব বিএনপির আন্দোলনকে এখন পর্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে না। বরং প্রধানমন্ত্রী বলছে বিরোধী দলের কাজ আন্দোলন করা। সরকারের কি তাহলে অন্য পরিকল্পনা আছে? সেই পরিকল্পনাটা কি? সে সম্পর্কে বিএনপি কিছুই জানে না। আর এ কারণেই বিএনপির মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক।

৪. তারেক শেষ পর্যন্ত কি করবেন: বিএনপিতে আতঙ্কের সব চেয়ে বড় বিষয় হল তারেক জিয়া। তারেক জিয়া শেষ পর্যন্ত কি করবেন। তিনি কোন সিদ্ধান্ত নেবেন? মাঝ পথে আবার নির্বাচনে চলে যাবেন কিনা? ইত্যাদি বিষয়গুলো বিএনপি নেতাদের কাছে সুস্পষ্ট নয়। এটিও বিএনপির আতঙ্কের একটি অন্যতম কারণ। 

৫. আন্তর্জাতিক সমর্থন: বিএনপি এখন পর্যন্ত এইসব আন্দোলনে বা তাদের নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির প্রতি আন্তর্জাতিক কোন সহানুভূতি এবং সমর্থন পায়নি। এ বিষয়টি বিএনপিকে ক্রমশ ভাবিয়ে তুলছে। আর এ সব কিছু নিয়েই বাইরে উচ্ছ্বাস দেখালেও ভেতরে ভেতরে বুক কাঁপছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭