ইনসাইড পলিটিক্স

অফেন্সিভ কৌশলে আওয়ামী লীগ


প্রকাশ: 28/10/2022


Thumbnail

বিএনপির আন্দোলনের পাল্টা জবাব হিসেবে অফেন্সিভ কৌশলে গেল আওয়ামী লীগ। আজ বিকেলে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে এই কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ আর চুপচাপ থাকবে না, পাল্টা আঘাত হানবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সভার উদ্বোধনী ভাষণে বিরোধী দলের কঠোর সমালোচনা করেন এবং বিরোধী দলের তথাকথিত আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস, নাশকতা বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত হবার নির্দেশ দেন। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে অধিকাংশ আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন আক্রমনাত্মক এবং তারা বিরোধী দলের এই সমস্ত অপপ্রচার ও সমাবেশ এবং নাশকতার প্রতিবাদে চুপচাপ বসে থাকা যাবে না বলেও নিজেদের মতামত প্রকাশ করেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের এই মতামতের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছেন যে, আগামী ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠের জনসভায় তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন এবং বক্তব্য রাখবেন। শুধু চট্টগ্রামে নয়, আওয়ামী লীগ প্রতিটি জেলায় জেলায় সমাবেশ করবে বলে কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এই সমাবেশগুলোতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা থাকবেন। কোথাও কোথাও গুরুত্বপূর্ণ সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও উপস্থিত থাকবেন বলে দলীয় সূত্র নিশ্চিত করেছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রতিটি জেলায় আওয়ামী লীগ যেন সংগঠিত হয় এবং নিয়মিত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে থাকে। 

বিএনপি এখন সারাদেশে বিভাগীয় সমাবেশ করছে এবং এই বিভাগীয় সমাবেশে গণজাগরণ তৈরি হচ্ছে বলে বিএনপি নেতারা দাবি করছেন। গণমাধ্যমেও তাদেরকে নিয়ে একধরনের উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে অভিমত ব্যক্ত করা হয়। এটা অন্যতম কারণ হলো যে, আওয়ামী লীগের কোন সমাবেশ নেই। আওয়ামী লীগ সমাবেশ করলে এর চেয়ে দ্বিগুণ লোক করা সম্ভব বলেই ধারণা করছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে একজন বলেছেন যে, বিএনপি সমাবেশ করে দাবি করছে যে, তাদের জনসভাগুলোতে লাখো লাখো মানুষের সমাবেশ হচ্ছে এবং এটি সরকারের প্রতি অনাস্থা প্রতীক। আমরা দেখাতে চাই যে, জনগণ আসলে আমাদের সাথে আছে এবং জন আস্থার প্রতিফলন হিসেবে আমরা বাংলাদেশের সর্বত্রই পাল্টা সমাবেশ করতে চাই। আওয়ামী লীগের প্রায় সব নেতাই এই বিষয়টির সাথে একমত পোষণ করেন। 

বৈঠকে বলা হয়েছে যে, বিএনপি নেতারা এই সমাবেশ নামে এক ধরনের নৈরাজ্য এবং নাশকতা তৈরি করছে। তারা বিভিন্ন জায়গায় হুমকি দিচ্ছে, চাঁদাবাজি করছে। এমনকি কোথাও কোথাও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপর আক্রমনাত্মক ভূমিকাও পালন করছে। এর ফলে জনগণের মধ্যে ভয় সঞ্চারিত হচ্ছে, জনগণ আতঙ্ক বোধ করছে। তাছাড়া এর ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যেও প্রশ্ন উঠেছে যে, সরকার কি তাহলে দুর্বল হয়ে পড়েছেন? আওয়ামী লীগের নেতারা এই অবস্থা চলতে দেয়া যায় না বলে জানিয়েছেন। 

প্রধানমন্ত্রী তাঁর উদ্বোধনী ভাষণে সরাসরি বলেছেন, বিএনপির আন্দোলন হল অগ্নিসংযোগ, জ্বালাও-পোড়া ও নাশকতা। এটি সহ্য করতে দেওয়া হবে না। আর এ কারণেই আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যেখানেই নৈরাজ্য, যেখানেই বিশৃঙ্খলা সেখানেই পাল্টা আঘাত করা হবে, দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে বিএনপিকে। বিএনপি এখন বিভিন্ন সমাবেশগুলোতে মিথ্যাচার এবং অপপ্রচারের ডালি সাজিয়ে বসেছে। এই বিষয়ে বিষয়টি নিয়েও আওয়ামী লীগ বিএনপি আমলে নৈরাজ্য, নাশকতা, সন্ত্রাস জঙ্গি হামলা সহ বিভিন্ন বিষয়গুলো জনগণের সামনে আবার তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেয় এবং এ নিয়ে প্রচার-প্রচারণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের এই আক্রমনাত্মক অবস্থান রাজনীতিকে উত্তপ্ত করবে নাকি বিএনপিকে পিছু হটাতে বাধ্য করবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭