ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপি এতো টাকা পাচ্ছে কোত্থেকে?


প্রকাশ: 29/10/2022


Thumbnail

বিএনপি এখন ধারাবাহিকভাবে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কর্মসূচি পালন করছে। সেই ধারাবাহিকতায় আজ রংপুরে মহাসমাবেশ করেছে দলটি। রংপুর বিভাগ থেকে কর্মীরা সেখানকার কালেক্টরেট মাঠে জমায়েত হয়েছে আগের দিন থেকেই। প্রতিটি মহাসমাবেশেই কর্মীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো এবং এটিতে বিএনপি আনন্দিত উদ্বেলিত। প্রশ্ন উঠেছে যে, মহাসমাবেশসহ বিভিন্ন যে কর্মসূচিগুলো বিএনপি ঘটা করে পালন করছে সেই কর্মসূচি পালন করার ক্ষেত্রে টাকা পাচ্ছে কোত্থেকে? আর এটি নিয়েই রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা প্রশ্ন উঠেছে। গত বছর বিএনপি বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু অর্থ সংকটের কারণে কর্মসূচীগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়নি। আগে বিএনপি ঢাকায় একটি সমাবেশ করার জন্য উদ্যোগ নিলেও আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় সমাবেশ করতে পারেনি। এমনকি বিএনপির দলীয় কার্যালয় চালানোর মতো অর্থ নেই এমন কথা বলেছিলেন খোদ বিএনপি মহাসচিব।

বাংলা ইনসাইডারের অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, প্রতিটি মহাসমাবেশের জন্য বিএনপি খরচ করছে ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকা। এই সমাবেশের খরচের মধ্যে আছে যে, সমাবেশ যে বিভাগীয় শহরে হচ্ছে সে বিভাগীয় শহরের সব গুলো জেলা থেকে লোক সমাগম করা, তাদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা, প্যান্ডেল, মাইক্রোফোন ইত্যাদির ব্যবস্থা করা এবং প্রত্যেকটি বিভাগীয় শহরভুক্ত জেলার লোকজনকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দেওয়া। সব মিলিয়ে কোথাও কোথাও ৫০ কোটি, কোথাও কোথাও ৬০ কোটি টাকা খরচ করেছে। যেমন, চট্টগ্রামে ৭০ কোটি টাকা খরচ করেছে। এতো বিপুল অর্থের উৎস কি? যে বিএনপি এক বছর আগেই অর্থ কষ্টের কারণে একটি মিছিল করতে পারেনি। দলীয় কার্যালয়ের স্টাফদেরকে বেতন দিতে পারেনি ৪ মাস, সেই বিএনপি এখন রাতারাতি বড়লোক হয়ে উঠলো কিভাবে? নির্বাচন কমিশনে বিএনপি যে আয় ব্যয় হিসেব দিয়েছে তাতে বিএনপি অর্থ খুবই সামান্য এবং এই অর্থ দিয়ে আর যাই হোক এরকম ধারাবাহিক সমাবেশ করা যায়না। একাধিক সূত্র বলছে যে, বিএনপির অর্থের উৎস এখন মূলত ৫টি।

১. চাঁদা আদায়: বিএনপি এখন বিভিন্ন ব্যবসায়ী, বড় বড় শিল্প হাউজগুলোর কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে এবং বিপুল পরিমাণ টাকা তারা পাচ্ছে। কেন টাকা পাচ্ছে? এর একটি বড় কারণ হলো যে, তারেক জিয়া সরাসরি বিভিন্ন ব্যবসায়ীদেরকে টাকা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিচ্ছেন এবং সেই নির্দেশ অনুযায়ী কেউ কেউ টাকা দিচ্ছেন। আবার অনেক জায়গায় ভয়ভীতি হুমকি প্রদান করা হচ্ছে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেখে নেওয়া হবে ইত্যাদি বক্তব্য দিয়ে তাদেরকে বাধ্য করা হচ্ছে। আবার অনেকে স্বপ্রণোদিত হয়েও টাকা পয়সা প্রদান করছেন।

২. বাইরে থেকে অর্থ: বাইরে যে সমস্ত বিএনপির নেতারা পলাতক রয়েছেন, বিপুল বিত্ত বাইরে পাচার করেছেন সেখানে অনেকে এখন স্থায়ীভাবে অবস্থা করছেন তারাও এখন আন্দোলন করার জন্য টাকা পাঠাচ্ছেন এমন অভিযোগ রয়েছে। তবে এই টাকা কোনোটাই ব্যাংকিং চ্যানেলে আসছে না। এগুলো আসছে বিভিন্ন ধরনের হুন্ডির মাধ্যমে এবং এই টাকার ফলে বিএনপির এখন জনসভা করার ক্ষেত্রে কোনো রকমের সমস্যা হচ্ছে না। 

৩. সাংগঠনিক চাঁদা: বিএনপির কর্মীরাও এখন সংগঠনের জন্য চাঁদা দিচ্ছেন। জনসভা করার জন্য অর্থ প্রদান করছেন। কারণ তারা মনে করছেন যে, এখন তাদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই এবং এই আন্দোলন করার জন্য টাকা লাগবেই। সেই জন্যই তারা নিজেরা কিছু কিছু পরিমাণ টাকা দিচ্ছে। 

৪. কমিটি বাণিজ্যের টাকা: বিএনপি এখন অনেকগুলো কমিটি দ্রুত নিষ্পত্তি করছে এবং কমিটিগুলো দিচ্ছে। প্রতিটি কমিটি থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা আয় করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময় ছাত্রদলের কমিটি থেকে ১০০ কোটি টাকার ওপর উপার্জন করা হয়েছে। এই সমস্ত টাকার একটা অংশ লন্ডনে যাচ্ছে। অন্য একটি অংশ ঢাকায় দলীয় কর্মসূচিগুলো পালনের জন্য খরচ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

৫. অনুদান: বিভিন্ন ব্যক্তি, ব্যবসায়ীক গ্রুপ তারা বিএনপিকে এখন কেউ কেউ স্বপ্রণোদিতি হয়ে অনুদান দিচ্ছে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। আর এ কারণেই বিএনপি এখন হঠাৎ করে আর্থিকভাবে ফুলে ফেঁপে উঠেছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭