ইনসাইড ইনভেস্টিগেশন

জঙ্গিবাদে ভিড়ছে নারীরা, সক্রিয় অর্থ-সদস্য জোগাড়ে


প্রকাশ: 05/11/2022


Thumbnail

নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র শীর্ষ পর্যায়ের নেতাসহ এখন পর্যন্ত মোট ৩৩ জনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অভিযান শুরুর হবার একমাসের মধ্যে এই জঙ্গি সংগঠনে নারীদের সম্পৃক্ততার তথ্যও পেয়েছে র‌্যাব।

সংগঠনের জন্য নতুন সদস্য সংগ্রহ, অর্থ জোগাড় ও সরবরাহ এবং হিজরত করা (পাহাড়ে যেসব জঙ্গি রয়েছে)জঙ্গিদের পরিবারকে সহযোগিতার কাজ করছেন এ নারীরা।

এখন পর্যন্ত অন্তত ছয়জন নারী জঙ্গির ব্যাপারে তথ্য পেয়েছে র‍্যাব। তবে মোট কতজন নারী সদস্য হিন্দাল শারক্বীয়ার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে তার সঠিক তথ্য এখনো জানা যায়নি।

সংখ্যাটা আরও বাড়বে বলে জানিয়ে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ‘’আমরা পাঁচ-ছয়জনের তথ্য পেয়েছি। এটা বাড়তে পারে। দাওয়াতি শাখা, অর্থ সরবরাহ, সংগঠনের যেসব সদস্য পাহাড়ে আছে, তাদের পরিবারের খোঁজ-খবর নেওয়াতে যুক্ত এ নারীরা। তবে সামরিক শাখায় তাদের অংশগ্রহণ পাওয়া যায়নি।‘’

গত বৃহস্পতিবার কুমিল্লার লাকসামে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় গ্রেফতার হন সংগঠনটির অর্থবিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক মুনতাছির আহম্মেদ ওরফে বাচ্চু, সারাদেশে হিজরত করা সদস্যদের সমন্বয়ক আব্দুল কাদের ওরফে সুজন ওরফে ফয়েজ ওরফে সোহেল ও ইসমাইল হোসেন ওরফে হানজালা ওরফে মানসুর এবং সামরিক শাখার তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তি হেলাল আহমেদ জাকারিয়া। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে সংগঠনের নারীদের সম্পৃক্ত থাকার তথ্য বেরিয়ে আসে।

গ্রেফতার চারজনের বিষয়ে কমান্ডার মঈন জানান, তারা জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার দাওয়াতি, সশস্ত্র প্রশিক্ষণ, হিজরত করা সদস্যদের তত্ত্বাবধানসহ অন্যান্য সাংগঠনিক কার্যক্রমে যুক্ত ছিল। দুই থেকে চারবছর আগে নিকটাত্মীয়, বন্ধু, স্থানীয় পরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে উগ্রবাদে অনুপ্রাণিত হয়ে তারা এ সংগঠনে জড়িয়ে পড়ে। এ চারজন তাত্ত্বিক, শারীরিক সশস্ত্র প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে।

র‌্যাব জানায়, দেশজুড়ে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার কার্যক্রমে জড়িত সদস্যদের বিরুদ্ধে র‌্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের কারণে তারা সংগঠনের নেতৃত্বস্থানীয়দের পরামর্শে কুমিল্লার লাকসামে আত্মগোপনে ছিলেন।

আত্মগোপনে থেকেও তারা বিভিন্ন মাধ্যমে দেশের অনেক অঞ্চলে তাদের সদস্য ও সহানুভূতিশীলদের থেকে অর্থ সংগ্রহ করতেন। সাংগঠনিক প্রয়োজনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ পাঠাতেন। এছাড়া পাহাড়ে প্রশিক্ষণরত সদস্যদের পরিবারের কাছে আর্থিক সহযোগিতাসহ অন্যান্য সহযোগিতা পাঠাতেন তারা।

বাড়ি করে পরিবার নিয়ে নাইক্ষংছড়িতে আমির

এদিকে, নতুন এ জঙ্গি সংগঠনের আমির মাহমুদ বান্দরবানের নাইক্ষংছড়িতে সাড়ে তিন বিঘা জমি কিনে বাড়ি করেছেন। সেখানে পরিবার নিয়ে থাকতেন তিনি। চাষাবাদ, পোলট্রি ফার্ম ও গবাদিপশুর খামার পরিচালনা করতেন তিনি। তবে বর্তমানে সংগঠনের আমিরের অবস্থান নিশ্চিত হতে পারেনি র‌্যাব।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার চারজন র‌্যাবকে গুরুত্বপূর্ণ এসব তথ্য দিয়েছেন।

র‌্যাব বলছে, সংগঠনের আমির মাহমুদ কুমিল্লা সদর দক্ষিণের একটি সিএনজি ফিলিং স্টেশনে ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করতেন। প্রায় দুই বছর আগে চাকরি ছেড়ে তিনি নিরুদ্দেশ হন।

একবছর আগে কুমিল্লার প্রতাপপুরে তার সেমিপাকা বাড়িসহ জমি বিক্রি করে ১৭ লাখ টাকা পান। সেই টাকা দিয়ে বান্দরবানের নাইক্ষংছড়িতে সাড়ে তিন বিঘা জমি কেনেন। পরিবার নিয়ে সেখানেই অবস্থান করছিলেন তিনি।

তবে বর্তমানে সেখান থেকে তিনি সপরিবারে সরে পড়েছেন বলে ধারণা করছে র‌্যাব। গ্রেফতাররাও আমির মাহমুদের অবস্থান জানাতে পারেনি।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭