ইনসাইড গ্রাউন্ড

পাকিস্তান বধের সুযোগ কাজে লাগাতে পারবে কি বাংলাদেশ?


প্রকাশ: 05/11/2022


Thumbnail

কাগজে-কলমের হিসাবে এটি হয়তো টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সেরা বিশ্বকাপ। এবারই যে প্রথমবার মূলপর্বে দুটি জয় পেয়েছে দল, যা গত ১৫ বছরেও বাংলাদেশ করে দেখাতে পারেনি। আর এ বর্থ্যতার দায় তো লাল সবুজের প্রতিনিধিদেরই। এবারের বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে এই জয় দুটি মোটেও অপ্রত্যাশিত ছিল না। বরং জিততে না পারলে সেটিই হত অঘটন। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণে এত বছরেও নিজেদের পায়ের নিচের মাটি শক্ত করতে পারেনি টাইগাররা। হাটি হাটি পা পা করে একদিন হাঁটা শিখে ফেলে শিশুরা। আর এত বছরেও টোয়েন্টি টোয়েন্টির ফরম্যাটটাকে বাগেই আনতে পারলেন না সাকিব-মুস্তাফিজরা। বিষয়টি তাই একই সাথে লজ্জা ও আফসোসের।

তুলনামূলক কম সময়ে এবং কম সুযোগ-সুবিধা নিয়ে যে কাজটি করে ক্রিকেট বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে এশিয়ারই আরেক দল আফগানিস্তান। টি-টোয়েন্টিতে হয়ে উঠেছে সমীহ জাগানিয়া দল। তবে কেন পারছে না বাংলাদেশ?

এত সমালোচনার ভিড়ে আবার নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটিতে দেখা গেলো ভিন্ন এক বাংলাদেশকে। যেখানে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাওয়ার মানসিকতা যেমন প্রশংসার যোগ্য। আবার হারের দায়টাও বর্তায় ক্রিকেটারদের কাঁধে। খুব কাছে গিয়েও চাপের মুখে ভেঙে পড়াটা তো বাংলাদেশ দলের পুরনো অভ্যাস।

সুপার টুয়েলভে এখনো একটি ম্যাচ রয়েছে বাংলাদেশের। সে ম্যাচে টাইগারদের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান। তাই এ ম্যাচের আগে ঘুরে ফিরছে সম্ভাবনার প্রশ্ন। অ্যাডিলেভ ওভালে পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে মাঠে নামবে লিটন-সাকিবরা। নানা জটিলতার মারপ্যাঁচে এখনো বাংলাদেশের সেমিফাইনালে উঠার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সে পথটা মোটেও সহজ নয়। কন্টকময় বন্ধুর সে পথে যেতে হলে আগে সারতে হবে নিজেদের কাজ। জয় নিশ্চিত করতে হবে পাকিস্তানের বিপক্ষে। এরপর অন্য ম্যাচের ফল যদি অনুকূলে আসে, সেক্ষেত্রেই শেষ চারের টিকিট পাবে বাংলাদেশ। অন্যথায় ফিরতে হবে বাড়ি।

ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের পর কিছুটা স্বস্তি এসেছে টাইগার শিবিরে। বেড়েছে আত্নবিশ্বাস। শক্তিশালী দলগুলোর বিপক্ষে লড়াইয়ের রসদ জুগিয়েছে ম্যাচটি। পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে ম্যাচ ভেন্যুর পাশে রোল্টন ওভালে অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ। নেটে নিজেদের ভুল শুধরে মাঠে নামতে ঘাম ঝরিয়েছেন ক্রিকেটাররা। করেছেন বিগ হিটিং প্রাকটিসও। লক্ষ্য শেষ ম্যাচেও উন্নতির ধারায় থাকা। ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে এসে সে কথা শোনালেন বাংলাদেশ দলের টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট শ্রীধরন শ্রীরাম।

তিনি বলেন, বড় দলগুলোর সামনে বাংলাদেশ এখন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়ার সামর্থ্য রাখে। সামনের ম্যাচে এবং ভবিষৎ এ দলে এর ইতিবাচক প্রতিফলন দেখতে পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন শ্রীরাম। সেই সাথে ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্টি ঝরে তার কণ্ঠে। বিশ্বকাপের আগে নিউজিল্যান্ডে ট্রাই নেশন সিরিজে পাকিস্তানের সাথে ম্যাচ খেলায় প্রতিপক্ষের বিষয়ে ভাল ধারণাও রয়েছে দলের। যা এ ম্যাচে কাজে দেবে।

তবে পুরো দল অনুশীলন করলেও নেটে আসেন নি লিটন কুমার দাস। টিম হোটেলে বিশ্রাম নিয়েছেন তিনি। ভারতের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ের সময় হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পান লিটন। তবে দলীয় চিকিৎসক জানিয়েছেন লিটনের চোট তেমন গুরুতর নয়। পাকিস্তান ম্যাচের আগেই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবেন এই টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান। তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে সাফল্য পেতে নতুন বলে বাংলাদেশের অন্যতম ভরসা তাসকিন আহমেদ। চলতি বিশ্বকাপের দারুণ ছন্দে রয়েছেন এই পেসার। নিয়েছেন ৮ উইকেট। ৪ ম্যাচ মিলিয়ে ১৫ ওভার বল করেছেন তাসকিন, যার মধ্যে ৫৪টিই ডটবল।

এ ম্যাচে শততম টি-টোয়েন্টি উইকেটের মাইলফলক ছোঁয়ার সুযোগ রয়েছে মুস্তাফিজুর রহমানের সামনে। ৪টি উইকেট পেলে টোয়েন্টি-টোয়েন্টিতে একশো উইকেট শিকারির তালিকায় ঢুকবেন কাটার মাষ্টার। তবে বাংলাদেশের সামনে বাঁধা হয়ে দাড়াতে পারেন মোহাম্মাদ ওয়াসিম। দুই দলের সবশেষ পাঁচ ম্যাচে ১০ উইকেট পকেটে পুড়েছেন এই পেসার।

৪ ম্যাচে দুটি করে জয় ও দুটি হারে দুই দলেরই পয়েন্ট সমান চার। কিন্তু রানরেটে এগিয়ে থাকায় পয়েন্ট টেবিলের ৩ এ পাকিস্তান। আর বাংলাদেশের অবস্থান চারে। সেমিফাইনালের ক্ষীণ স্বপ্ন টিকিয়ে রাখতে ম্যাচটিতে জয়ের বিকল্প নেই কোন দলের সামনেই। তবে যে দলই জিতুক না কেন, তাদেরকে তাকিয়ে থাকতে হবে ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচের ফলের দিকে। অ্যাডিলেড ওভালে সকাল ১০টায় শুরু হবে ম্যাচটি।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭