রাবেয়া ইসলাম শাওড়া। চরমোন্তাজ এ ছাত্তার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী লাইব্রেরিয়ান পদে চাকুরি করছেন। প্রতিমাসে বেতন-ভাতাও তুললেও নিয়মিত প্রতিষ্ঠানে আসছেনা। নানা ছল-ছুতোয় অনুপস্থিত থাকছেন তিনি। আবার অন্তঃসত্ত্বা না হয়েও কাটাচ্ছেন মাতৃত্বকালীন ছুটি। প্রধান শিক্ষক মো. রুহুল আমীন লাইব্রেরিয়ান রাবেয়া ইসলার শশুর হওয়াতে এমন অনিয়ম করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রাবেয়ার এমন অনিয়মে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের একাধিকবার অভিযোগ দিয়েছিল সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্টরা। জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলার বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন চরমোন্তাজ ইউনিয়নের একমাত্র মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমন অবস্থায় অভিভাবক সদস্যের মাঝে ক্ষোভের দেখা দিয়েছে।
অভিযোগ ও অনুসন্ধানে জানা গেছে-২০২০ সালে ১৭ জুন রাবেয়া ইসলাম শাওড়া এ ছাত্তার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী লাইব্রেরিয়ান পদে যোগদান করেন। অভিযোগ রয়েছে-তৎকালীন সময়ে রাবেয়ার নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির আশ্রয় নেয়া হয়েছিল। স্কুল প্রধান শিক্ষক শশুর ও ব্যবস্থাপনা পকেট কমিটি হওয়ায় নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়টি ধামাচাপা পরে যায়। অভিযোগে বলা হয়-চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত টানা সাত মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটায় রাবেয়া। অথচ রাবেয়া ইমলাম ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে সর্বশেষ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষ হলেও ওই বছর একদিনও বিদ্যালয়ের উপস্থিত হয়নি। আবার মাতৃত্বকালীন ছুটির ভেতরে মার্চ মাসে শুধু ১৩ দিন বিদ্যালয়ের উপস্থিত হয়েছেন। এরপূর্বে ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত টানা ৭ মাসের মধ্য মাত্র “একদিন” বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়েছেন। আবার ওই বছরে সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত তিন মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটায় রাবেয়া। বিদ্যালয়ের হাঝিরা রেজিষ্ট্রারেও এমন তথ্য মিলেছে। রাবেয়া ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের শেষ আগস্ট পর্যন্ত মাত্র ১৪ দিন প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন। এছাড়াও ২০২২ সালে প্রধান শিক্ষকের প্রস্তুতকৃত ক্লাস রুটিনেও রাবেয়ার কোন নাম দেখা যায়নি। রাবেয়ার অনিয়মের প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রধান শিক্ষক কর্তৃক অহেতুক হেনস্তা হয়েছেন অনেক শিক্ষক। সংশ্লিষ্টরা বলেন-প্রধান শিক্ষক রাবেয়ার শশুর হওয়াতে তার স্বেচ্ছাচারিতা দিনদিন বেড়েই চলছে। বিদ্যালয়টি চরাঞ্চলে হওয়ার কারণে নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জর্জরিত।
তার অনিয়মের সত্যতা স্বীকার করে অভিযুক্ত রাবেয়া ইসলাম শাওড়া বাংলা ইনসাইডার কে জানান, অসুস্থ থাকায় ছুটিতে ছিলাম। ২০২২ সালে অন্তঃসত্ত্বা না হয়েও মাতৃত্বকালীন ছুটির প্রসঙ্গে রাবেয়ার কোন সদুত্তর দেয়নি।
অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক মো. রুহুল আমীন বাংলা ইনসাইডার কে জানান, রাবেয়া মাতৃত্বকালী ছুটিতে ছিল। অন্তঃসত্ত্বা না হয়েও ২০২২ সালে মাতৃত্বকালীন ছুটি প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক বলেন-এ তথ্য সঠিক নয়,আমি বাহিরে আছি, পরে অফিসে গিয়ে সঠিক তথ্য দেবো।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মুঃ মজিবুর রহমান বাংলা ইনসাইডার কে জানান, বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আমি নই। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।