ইনসাইড বাংলাদেশ

মন্ত্রীদের অতিকথনে অস্বস্তিতে জনগণ


প্রকাশ: 06/11/2022


Thumbnail

বেশি কথা বলা বা ‘অতিকথন’ হল ডাক্তারি ভাষায় একটি রোগের মতো। উপমহাদেশে এই অতিকথন আমরা দেখে আসছি সেই আদ্দি কাল থেকেই। অতিকথন এখন সমাজে বিভিন্ন পেশাজীবীদের মাঝে এমন মাত্রায় ছড়িয়েছে যে, তা মাঝে মাঝে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যারপরণায় বেকায়দায় ফেলে দেয়। এমন বেকায়দায় পড়ছে সরকারও। কিছুদিন আগেই বেফাঁস মন্তব্যে আলোচনা কেন্দ্রে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এ নিয়ে সরকারের ভেতর ও বাইরে নানা আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়েছিল। অতিকথনে অতীতে ক্ষমতাসীন সরকারের সাবেক তথ্যপ্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের মতো আরও অনেকেই পদ হারিয়েছেন। কিন্তু তারপরও মাননীয়দের অতিকথনের লাগামে টান পড়ছে না।

অতিকথনে আক্রান্ত এখন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। ডেঙ্গু রোগীতে দেশে এখন টালমাটাল। হাসপাতালে জায়গায় নেই বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিজেই। ইতোমধ্যে ডেঙ্গু রোগীর চাপ সামলাতে ডিএনসিসি কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া শুরু হয়েছে। এমনই যখন অবস্থা তখন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কথা বলছেন বাজারের জিনিসপত্রের দাম নিয়ে। গতকাল শনিবার বিকালে মানিকগঞ্জের গড়পাড়ায় ৯টি ওয়ার্ডের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেছেন, দেশের বাজারে সরকার জিনিসপত্রের দাম বাড়ায়নি, বিশ্ব বাজারে দাম বেড়েছে বলে বাংলাদেশে বেড়েছে। এর আগে গত ২৬ অক্টোবর তিনি একই মন্তব্য করেছিলেন এবং বলেছিলেন, বাজারে জিনিসপত্রের নিজ থেকে দাম বেড়েছে। বাজারে জিনিসপত্রের দাম কি রকম আছে না আছে সেটা দেখার দায়িত্ব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নয়। তারপরও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এ মন্তব্যে বিরক্ত জনসাধারণ। তারা বলছেন, দ্রব্যমূল নিয়ে কথা বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজ মন্ত্রণালয়ের দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছেন। অন্যদিকে আইএমএফ এর ঋণ দিয়ে কথা বলেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত পূরণে অর্থ মন্ত্রণালয় কাজ করছে। এ সময় আইএমএফ এর ঋণ পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। অথচ বাজারের সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে তিনি বারবারই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, দেশে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সেদিকে কোনো ভূক্ষেপ নেই। তিনি কথা বলছেন বাজারের দ্রব্যমূল নিয়ে। শুধু এটিই প্রথম নয়। এর আগে ২০১৯ সালের জুলাইয়ে রাজধানীসহ সারাদেশে যখন ডেঙ্গু আতঙ্ক, ডেঙ্গু জ্বর উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে যায় তখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ঈদের ছুটিও বাতিল করা হয়েছিল। অথচ সে সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী সপরিবারে মালয়েশিয়ায় সফরে গিয়েছিলেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, সংকটময় সময়ে মন্ত্রীর এ ধরনের কথা জনসাধারণকে তো আশ্বস্ত করেছেই না। বরং জনগণকে এক নিরাশার দিকে টেলে দিচ্ছে। মন্ত্রীদের এ ধরনের অযাচিত মন্তব্য জনগণের মধ্যে থাকা অনিশ্চিয়তাকে উস্কে দিচ্ছে। যা কাম্য কোনোভাবেই কাম্য নয়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭