ইনসাইড গ্রাউন্ড

ব্যাট-বলের বাজে প্রদর্শনীতে বিদায় বাংলাদেশের


প্রকাশ: 06/11/2022


Thumbnail

বড় ম্যাচে চাপ ধরে রাখতে পারে না বাংলাদেশ। এ কথা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য যেন আপ্তবাক্য। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের উঠার হাতছানি সামনে রেখে সুপার টুয়েলভে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলতে নামে বাংলাদেশ। আগের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের কাছে দক্ষিণ আফ্রিকার হার শেষ চারের সমীকরণটা সহজ হয়ে উঠে বাংলাদেশের জন্য। পাকিস্তানকে হারাতে পারলেই প্রথমবারের মত সেমিফাইনালে খেলার সুযোগ পাবে বাংলাদেশ।

তবে সে আশায় গুড়েবালি। বাজে ব্যাটিং এবং এলোমেলো বোলিং-ফিল্ডিংয়ে পাকিস্তানের কাছে ৫ উইকেটে হেরে বিশ্বকাপ শেষ করলো বাংলাদেশ। উল্টো খাদের কিনারা থেকে ফিরে সেমিফাইনালে উঠে গেলো পাকিস্তান।

অ্যাডিলেড ওভালে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত ও লিটন দাস ভাল শুরুর ইঙ্গিত দেন। তবে শাহিন শাহ আফ্রিদির করা ইনিংসের তৃতীয় ওভারে পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে আউট হন আগের ম্যাচে দুর্দান্ত ইনিংস খেলা লিটন। ২১ রানে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। লিটনের আউটের পর শান্ত ও সৌম্য সরকার প্রতিরোধের চেষ্টা চালান। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দুজনে মিলে স্কোরবোর্ডে যোগ করেছেন ৫২ রান। ওভারপ্রতি ৭ রান করে তুলে ম্যাচের প্রথম ১০ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১ ছিলো উইকেটে ৭০ রান।

 এরপরের চিত্রটা পুরোপুরি ভিন্ন। ইনংস ব্রেকের পর ১১৩তম ওভারে বল করতে আসেন শাদাব খান। সে ওভারে এই লেগস্পিনারের জোড়া আঘাতে পথ হারায় বাংলাদেশ। ওভারের চতুর্থ বলে রিভার্স সুইপ খেলতে আউট হন সৌম্য সরকার। পরের বলে সাকিবকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন শাদাব। তবে সঙ্গে সঙ্গেই আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে রিভিউ নেন সাকিব। 

রিভিউতে স্পষ্ট দেখা যায় বল প্যাডে লাগার আগে সাকিবের ব্যাটের কানা ছুয়ে যায়। ব্যাটও মাটি স্পর্শ করেনি। তবে থার্ড আম্পায়ার অনফিল্ড আম্পায়েরর সিদ্ধান্তই বহাল রাখে। মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন সাকিব। বিতর্কিত এই সিদ্ধান্তের পর আর ঘুরে দাড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। ওয়ানডে মেজাজে ধীরগতির ইনিংস খেলে অর্ধশতক তুলে নেয় শান্ত। তবে ইফতিখারের স্টাম্প বরাবর বল রিড করতে না পেরে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরে শান্ত।

বাজে ব্যাটিংয়ের প্রদশর্নী জারি রাখেন মোসাদ্দেকও। সফট হ্যান্ডে বাজে শট খেলে শাহিন আফ্রিদির বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। থিতু হতে পারেন নি সোহানও। রানের খাতার খোলার আগেই ফেরেন প্যাভিলিয়নে। বাকিটা সময় জুড়ে পাকিস্তানি বোলারদের সামনে অসহায় হয়ে ছিলো বাংলাদেশ। 

তাই স্কোরবোর্ডেও খুব একটা রান রান যোগ করতে পারেনি দল। শেষ ১০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৫৮ রান করতে পারে সাকিব আল হাসানের দল। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাড়ায় ৮ উইকেটে ১২৭ রান। 

পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট নেন শাহিন আফ্রিদি।

ছোট লক্ষ্য ডিফেন্ড করতে নেমে শুরুতেই সাফল্য পেতে পারতো বাংলাদেশ। তাসকিনের করা ইনিংসের প্রথম ওভারে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছিলেন মোহাম্মাদ রিজওয়ান। তবে সহজ সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেন নি নুরুল হাসান সোহান। হাতে সরাসরি বল গেলেও তা গ্লাভসে রাখতে পারেন নি নুরুল। শূন্য রানে জীবন পান রিজওয়ান।

সে সুযোগ ভালভাবেই কাজে লাগান রিজওয়ান। অধিনায়ক বাবর আজমকে নিয়ে শক্ত হাতে সামল দেন বাংলাদেশি বোলারদের। মাঠের নানা প্রন্তে শট খেলে রানের চাকা এগিয়ে নেন। ধীর গতিতে রান তুললেও এগোতে থাকে লক্ষ্যের দিকে। আসরে এ ম্যাচের আগে পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটি খুব বেশি রান পায়নি। এ ম্যাচে দুই ওপেনার সে ধারার ইতি টানলেন। প্রথম ১০ ওভারে ৫৬ রান তোলে তারা।

আগের কোন ম্যাচেই দুই অঙ্কের ঘর স্পর্শ করতে পারেন নি বাবর আজম। এদিন রান পেয়েছেন তিনিও। নাসুম হোসেনের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে করেন ৩৩ বলে ২৫ রান। ৫৭ রানে ভাঙে পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটি। পরের ওভারে মোহাম্মাদ রিজওয়ানকে ফেরান ইবাদত। মাঝে খানিকটা সময়ের জন্য নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে পাকিস্তানের উপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করে বাংলাদেশ। ৯২ রানে রান আউটে কাটা পড়ে মোহাম্মাদ নওয়াজ। তবে ১৬তম ওভারে তাসকিন ১৬ রান দিলে ম্যাচের চালকের আসনে বসে পাকিস্তান। শেষ দিকে কয়েকটি উইকেট তুলে নিলেও তা কোন কাজে আসেনি।

এরপর আর খুব একটা কষ্ট করতে হয়নি পাকিস্তানকে। ১৮ বলে ৩১ রানে ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন মোহাম্মাদ হারিস। ১১ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় তার দল।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭