ইনসাইড ইকোনমি

সুদহারের সীমা নিয়ে সংকটে সরকার


প্রকাশ: 06/11/2022


Thumbnail

ঋণসহায়তা পেতে হলে সরকারকে আর্থিক খাত সংস্কার ও কার্যকর সুশাসন প্রতিষ্ঠার শর্ত দিচ্ছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। ব্যাংকে সুদহারের সীমা তুলে দেয়ার পাশাপাশি ডলারের বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দেয়া এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হিসাবায়নে সংস্কার আনারও তাগিদ দিচ্ছে বহুজাতিক ঋণ সংস্থাটি। এমন সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করছে  বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি বা ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। সুদহারের সীমা না তুলে ব্যাংকের এফিসিয়েন্সি বাড়ানোর প্রতি আহ্বার জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি মো. জসিম উদ্দীন। তিনি বলেছেন, এমনিতেই গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটের কারণে শিল্পখাত সংকটে রয়েছে। তার ওপর ব্যাংক ঋণের সুদহারে ৯ শতাংশের সীমা তুলে দিলে শিল্পখাত বড় ধরনের ভয়াবহ সংকটে পড়বে এবং এ অবস্থায় সুদের হার বাড়লে শিল্প প্রতিষ্ঠানের টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। 

অর্থনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থনীতির ওপর এখন যেভাবে চাপ তৈরি হয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে সুদহার বেঁধে রাখা ঠিক হচ্ছে না। ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির মধ্যে ঋণের সুদহার না বাড়ানোর কারণেই মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করেন তারা। তারা বলছেন, ব্যাংকে আগের মতো উদ্বৃত্ত অর্থও নেই। মানুষ আমানত তুলে নিচ্ছে। জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে, নিম্ন ও সীমিত আয়ের অনেকেই সঞ্চয় হারিয়েছে বা ভেঙে খাচ্ছে। ব্যাংকগুলোকে আবার আমদানি ও রেমিট্যান্স দায় নিষ্পন্নের জন্য নিয়মিত ডলারও কিনতে হচ্ছে। এমন বাস্তবতায় সুদহার বাড়িয়ে আমানত সংগ্রহ করা ছাড়া উপায় নাই। কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংক 
যখন আমানতের সুদহার নির্ধারণ করে দেয়, তখন ঋণের সুদহার ছিল ৯ শতাংশ আর মূল্যস্ফীতি ছিল ৫.৬৪ শতাংশ। কিন্তু  সেপ্টেম্বরে দেশের মূল্যস্ফীতি ৯.১ শতাংশ ছাড়িয়েছে। অথচ ব্যাংক ঋণের সুদহার একই রয়ে গেছে। 

এমন বাস্তবতায় ঋণের সুদহারের সামী তুলে দেয়ার কথা বলছে অর্থনীতি বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, ঋণের সুদহার বাড়লে, তা বাজারে মুদ্রা সরবরাহ কমাতে ভূমিকা রাখবে, যা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখবে। কিন্তু সরকারের উচ্চ মহলের পরামর্শেই বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২০ সালের এপ্রিলে সুদহারে ‘নয়-ছয়’ সীমা বেঁধে দেয়। ৯ শতাংশের বেশি সুদে ঋণ দেওয়া যাবে না বলে বাধ্যবাধকতা আরোপ করে, যা এখনো বহাল। ঋণের এই সীমা বেঁধে দেয়ার আগে সরকারের শীর্ষ মহল এর সপক্ষে এক ধরনের জনমত গড়ে তুলতে কাজও করেছে। যার ফলে সুদহারের সীমা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে এক ধরনের দোদুল্যমান লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সরকার সুদহারের সীমা বেঁধে দিয়ে আবার তুলে নেয় কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭