ইনসাইড হেলথ

শেরপুরে হঠাৎ করে ডায়রিয়ার প্রকোপ


প্রকাশ: 06/11/2022


Thumbnail

শেরপুরে হঠাৎ করে ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ার পর তা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে । জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা ডায়রিয়া আক্রান্ত এলাকার লোকদের সচেতন করতে শুরু করেছে প্রচারণা। প্রদান করা হচ্ছে খাওয়ার স্যালাইন, ট্যাবলেটসহ ঔষধ। গত ১০দিন আগে থেকে শীত দেখা যায়। বর্তমানে দিনে গরম, রাতে শীত ও ভোরে কুয়াশা দেখা দিচ্ছে। ফলে ঋতু পরিবর্তনের কারণে শেরপুর জেলা সদরে হঠাৎ করে দেখা দেয় ডায়রিয়ার প্রকোপ। এতে দেখা দেয় চিকিৎসা সঙ্কটও।

শেরপুর জেলা হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১৬টি সিট থাকলেও স্বাভাবিকভাবে ২০জন রোগী চিকিৎসা নিতে পারে। তবে গত দশদিন ধরে এর পাঁচগুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি থাকছে। শেরপুর পৌর এলাকাসহ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ডায়রিয়া রোগির সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। আক্রান্তদের মধ্যে বিভিন্ন বয়সী নারী–পুরুষ ও শিশুরাও রয়েছে। বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও পল্লী চিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নিয়ে অনেকেই সুস্থ হলেও অনেককেই আসতে হচ্ছে হাসপাতালে। গত দশদিনে সাত শতাধিক ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২৮ জন ডায়রিয়া  রোগী শেরপুর জেলা  হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আর জেলা হাসপাতালের বহির্বিভাগে দশদিনে অন্তত দুই সহস্রাধিক রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করে।

হঠাৎ করে আশঙ্কাজনক হারে ডায়রিয়া রোগী বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কোন জায়গা খালি নেই। রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তাঁদের হাসপাতালের মেঝেতে ও চলাচলের রাস্তা এবং সিঁড়ির নিচে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। একই সাথে এতো রোগীর চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সরা। জেলা হাসপাতালে প্রথমদিকে স্যালাইনসহ ঔষধ সঙ্কট দিলে জেলার বাকী চার উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে তা আনা হয় এবং সঙ্কট মোকাবেলা করে স্বাস্থ্য বিভাগ।

স্বাস্থ্য বিভাগের দাবী তারা জনগণকে সচেতন করতে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করেছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে নেয়া হচ্ছে নানা উদ্যোগ। ডায়রিয়া আক্রান্ত এলাকায় মাইকিং করা, স্কুল ও বাড়ী বাড়ী গিয়ে মানুষকে সচেতন করাসহ বিতরণ করা হচ্ছে খাওয়ার স্যালাইন ও বড়ি। আজ ৬ নভেম্বর দুপুরে শেরপুরের সিভিল সার্জন ডা: অনুপম ভট্রাচার্য ও সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: মোবারক আলী পাকুড়িয়া ইউিনয়নের চকপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন এবং লোকজনকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে ও বাইরের অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ না করতে অনুরোধ করেন। এসময় তারা স্থানীয় ‌ব্র্যাক স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথেও কথা বলেন। এসময় গৃহিনী লাইলী বেগম বলেন, শেরপুর থেকে বড় ডাক্তার আইয়া আমাগো ঔষধ ও স্যালাইন দিয়ে গেলো। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার কথা বলে গেলেন। রহিমা বেগম বলেন, হাসপাতাল থাইকে বড় স্যারেরা আইছিলো। আমাগোরে বাইরের খাবার খাইতে না করেছে। হাসপাতালের রোগী সবুজ মিয়া বলেন, প্রথমে ২/৩বার বাথরুমে যাই। এরপর অনর্গল পাতলা পায়খানা হতে থাকে। পরে হাসপাতালে এসে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করি। স্বজন ইব্রাহিম খলিল বলেন, আমার স্ত্রী তিনবার পায়খানা করার পর ডায়রিয়া শুরু হয়। তাই আমি তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি। তিনদিন ধরে তার চিকিৎসা চলছে। এখন কিছুটা সুস্থ ।

শেরপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ অনুপম ভট্রাচার্জ বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। হাসপাতালেও চাপ বাড়ছে। আমাদের লোকবল সঙ্কট আছে। এরপরেও আমরা ডায়রিয়ার রোগীদের চিকিৎসা চিকিৎসা দিচ্ছি। মানুষকে সচেতন করতে এলাকায় এরাকায় আমাদের লোকজন কাজ করছেন। আমরাও যাচ্ছি। 
আশাকরি খুব দ্রতই ডায়রিয়ার প্রকোপ কমে আসবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭