ইনসাইড এডুকেশন

একসঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষায় মা-মেয়ে


প্রকাশ: 06/11/2022


Thumbnail

মাধ্যমিক (এস.এস.সি) পরীক্ষা উত্তীর্ণ হওয়ার পর এবার উচ্চমাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষায় একই সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছেন মা ও মেয়ে। মাধ্যমিক পরীক্ষার উত্তীর্ণ ফলাফলে মেয়ের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন মা। উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো ফলাফল করে লক্ষ্য এবার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। ঘটনাটি ঘটেছে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায়। মা মারুফা আক্তারের সাথে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন মেয়ে শাহী সিদ্দিকা। তারা উভয়েই ডিমলার উপজেলার শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সরকারি মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। মেয়ে শাহী সিদ্দিকা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবং মারুফা আকতার একই কলেজের বাণিজ্য শাখা থেকে পরীক্ষায় বসেছেন।
২০২০ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় একসঙ্গে অংশ নিয়ে মেয়ের চেয়ে ভালো ফলাফল করেন মারুফা আকতার। তিনি এসএসসিতে জিপিএ-৪.৬০ পেয়ে উত্তীর্ণ হন এবং তাঁর মেয়ে শাহী সিদ্দিকা পেয়েছিলেন জিপিএ-৩।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ' মারুফা আক্তারের বাবার বাড়ি নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার নাউতারা গ্রামে। বিয়ে হয় একই উপজেলার খালিশা চাপানি ইউনিয়নের পুন্যারঝার গ্রামের সাইদুল ইসলামের সঙ্গে। সাইদুল ইসলাম পেশায় একজন মাছ ব্যবসায়ী। দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে এইচএসসি পরীক্ষার্থী মেয়ে শাহী সিদ্দিকা বড়।'

২০০৩ সালে দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় বিয়ে হয়ে যায় মারুফা আক্তারের। এরপর থেমে যায় তাঁর লেখাপড়া। পরপর চার ছেলেমেয়েকে মানুষ করতে কেটে যায় ১৫ বছর। তবে লেখাপড়ার প্রতি প্রবল ইচ্ছে তাঁর রয়েই যায়। সেটিরই প্রতিফলন হিসেবে নিজের সুপ্ত ইচ্ছাশক্তির জোরে নিজের মেয়ের সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন মাধ্যমিক। এবার বসেছেন উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষায়।

পরীক্ষা শেষে মারুফা আক্তারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ' বিয়ের সময় নিয়েছিলেন আর কখনো পড়াশোনা করা হবে না। নিজের ইচ্ছা শক্তি আর  স্বামী-সন্তানদের অনুপ্রেরণায় ছোটখাতা ফাজিল মাদ্রাসায় নবম শ্রেণীতে ভর্তি হই। সেই সময় তাঁর মেয়েও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এরপর ২০২০ সালে মেয়ের সঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হয়েছি।'

তিনি বলেন, ‘সমাজের আর দশটা মানুষের মতো আমিও একজন শিক্ষিত মানুষ হিসেবে যাতে নিজের পরিচয় দিতে পারি, সে জন্য কষ্ট করে পড়াশোনাটা আবার শুরু করেছি। এখন আমার স্বপ্ন এইচএসসি পাস করে দেশের ভালো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার।’

এ বিষয়ে মারুফা আক্তারের স্বামী সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি আমার স্ত্রীর ইচ্ছের মর্যাদা দিয়েছি। সে যত দূর পড়াশোনা করতে পারে, আমি চালিয়ে যেতে সহযোগিতা করব।'


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭