ইনসাইড থট

রাষ্ট্রনায়ক ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংযোগ বাড়াতে হবে


প্রকাশ: 07/11/2022


Thumbnail

আগামী ১১ নভেম্বর বাংলাদেশের বিভিন্ন কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য বেশকিছু কমিউনিটি হেলথ ওয়ার্কার নিয়োগ দেওয়া হবে। আমি প্রথমবারের মতো কেন্দ্রীয়ভাবে না করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী এবং খুলনা এই চার বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা নেয়ার বন্দোবস্ত করেছি। ১১ নভেম্বর সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর সব রেজাল্ট এক সাথেই অনলাইনে দেয়া হবে। যারা পাস করবে তাদেরকে মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। সেটিও পরীক্ষা শেষের সাথে সাথে জানানো হবে। তবে ফাইনাল রেজাল্ট দেয়ার সময় কতগুলি পদ্ধতিগত কারণে কিছুটা সময় লাগতে পারে। আমি এটি উল্লেখ করলাম এই কারণের জন্য যে, এই পরীক্ষা নেয়ার জন্য গত কিছুদিন ধরে আমাকে বাংলাদেশের অনেক প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে যেতে হয়েছে এবং কথা বলতে হয়েছে এবং আরও হবে। জনগণের সাথে আলাপ করে কতগুলি বিষয় আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে যেগুলি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণকে জানানো খুব গুরুত্বপূর্ণ আমি মনে করছি। এখন আওয়ামী লীগ নেতারা গুরুত্বপূর্ণ ভাববেন কিনা সেটা অবশ্য তাদের বিষয়। কারণ তারা তো নেতা, সুতরাং পরিশেষে তাদের বিচার তো হতেই পারে।

আমি যখন সাধারণ কর্মীদের কাছে যাই তারা মনে করেন যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে পাঠিয়েছেন। আমিও তাদেরকে বলি যে, হ্যাঁ, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার প্রতিনিধি হিসেবে আমি আপনাদের কাছে এসেছি। তাদের সুখ দুঃখের সব কথা বলেন এবং আমি শুনি। কিছু করতে পারি বা না পারি অন্তত তাদের কথা শোনা প্রয়োজন। আর যে কথাগুলি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বা তার নেতাদের দৃষ্টিতে আনা প্রয়োজন সেটাও আমি আনার চেষ্টা করি। তারা একটি খুব সাধারণ অনুরোধ করেছেন। কিন্তু এই অনুরোধটা আমার কাছে গুরুত্বের দিক থেকে অসাধারণ মনে হয়েছে। উদাহরণ হিসাবে বলছি গত নভেম্বর দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক যে বক্তব্য পেশ করেন তার ভিতরে নেতাকর্মীদের প্রতি যেরকম উপদেশ আছে, এই উপদেশ এর সাথে দেশের অবস্থা, বিশ্বের অবস্থা এবং এই সমস্যা সমাধানের উপায় সরূপ তার কি দর্শন সেটিও তিনি বলেছেন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী যখন জানতে পারেন যে শেখ হাসিনা কোনো বক্তব্য প্রদান করবেন তখন তারা গ্রামে প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই টেলিভিশনের সামনে বসেন তার বক্তব্য শোনার জন্য। তারা দার্শনিকের মুখ থেকে দেশের অবস্থা এবং তার আকাঙ্ক্ষা শুনতে চান। জনসভায় বক্তব্য দিলে যে ফল হয় টেলিভিশনের বক্তব্য দিলে তার চেয়েও বেশি ফলদায়ক হয় বলে আমার মনে হয়। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী মনে করেন যখন দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক টেলিভিশনে কথা বলেন তারা মনে করেন শেখ হাসিনা তাদের সাথে সরাসরি কথা বলছেন। কিন্তু অনেক সময় অনেক গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠী জানতেন পারেন না। সে কারণে আমি মনে করি আওয়ামী লীগের মতো একটা বড় দল যদি মনে করে তাহলে শুধু টেলিভিশনে নয় দার্শনিকের কথাগুলো যদি উপজেলা পর্যায়ের নেতাদেরকে বলা হয় তাহলে তারা আবার ইউনিয়ন পর্যায়ে খুব সহজেই শেখ হাসিনার কথা পৌঁছে দিতে পারবে। কিন্তু এই সহজ কাজটি আওয়ামী লীগের নেতারা যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত তারা কেন করেন না এইটা আমি বুঝতে অক্ষম। তাদের প্রতি আমার অনুরোধ করে বলছি দয়া করে তারা যেন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতি অন্তত একটু দয়া-মায়া দেখিয়ে এই কাজটি এখন থেকে করেন।

বাড়ির কাছে এক ইঞ্চি জমিও ফাঁকা না রাখতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে বারবার অনুরোধ করছেন এই কথা তারা জানেন। যার বাড়ি ঘর ছিল না প্রত্যেকের এখন ঠিকানা আছে। বিধবা ভাতার কথা, বৃদ্ধ ভাতার কথা প্রান্তিক মানুষ জানেন। বিভিন্ন স্বাস্থ্য সেবার ব্যবস্থা হচ্ছে এগুলো তারা জানেন। কিন্তু তবুও তাদের কাছে বারবার এমন ভাবে বলতে হবে যে ভাষায় তারা অন্যান্য সহকর্মীদেরকে, তাদের সহকর্মী বলতে যারা একই গ্রামে থাকেন, চায়ের আড্ডায় যারা যান, হাট-বাজারে যান, তারা যেন বলতে পারেন সেই ভাবে তাদেরকে বারবার বলতে হবে। এই কাজটি অবশ্যই সব নেতাদের দায়িত্ব। অনেক এমপি তার নিজের এলাকাতেই যান না। এটা হতে পারে না। আপনারা অন্তত ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রতিটি সংগঠনকে শক্তিশালী করুন এবং তাদের মাধ্যমে দার্শনিক শেখ হাসিনার দর্শনকে পৌঁছে দিন। এটা আপনাদের নৈতিক দায়িত্ব। কিন্তু যারা মনে করেন তাদের এই দায়িত্ব পালন করতে অসুবিধা আছে দয়া করে তারা পথ ছেড়ে দেন, পথ ধরে রাখবেন কাজও করবেন না এটা তো হতে পারে না। যারা সরকারে আছেন তাদের যেমন দায়িত্ব যারা দলে আছেন তাদেরও দায়িত্ব। এই দায়িত্ব প্রান্তিক পর্যায়ে যে সকল সরকারি কর্মকর্তারা আছেন তারাও বাদ যান না। তাদের দল করার দরকার নাই। তারা তো দেশের সেবা করবেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক দেশের সেবা করে চলেছেন। আওয়ামী লীগ প্রধান আর দার্শনিক শেখ হাসিনা এক জিনিস নয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আর আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা এক বিষয় নয়। সুতরাং তিনি যখন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে একজন দার্শনিক হিসেবে বক্তব্য দেন সেই বক্তব্য সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের সকলেরই। যারা নিজেদেরকে দেশের নাগরিক হিসেবে দাবী করি তিনি যে দলের বিশ্বাসী হোন না কেন নির্বাচন হবে নির্বাচনে আপনার পছন্দমত প্রার্থীকে ভোট দিবেন। আপনার পছন্দমত মার্কায় ভোট দিবেন সেটা আপনার স্বাধীনতা। কিন্তু দার্শনিক শেখ হাসিনার দর্শন সবার কাছে পৌঁছাবে না এটা তো হতে পারে না। এটা তো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। এটা আমাদের করতেই হবে।

প্রান্তিক জনগোষ্ঠী আরও আশা করেন যে, দার্শনিক শেখ হাসিনা যেন তাদের সাথে যোগাযোগ রাখেন, তাদের সাথে আরেকটু বেশি করে যোগাযোগ করেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ হওয়ার কারণে গণভবন থেকে বসেই তিনি একসাথে ইচ্ছা করলে অনেক জেলায় বক্তৃতা দিতে পারেন। এক সাথে অনেক জেলায় দরকার নেই। সপ্তাহে অন্তত পক্ষে দুই-তিনদিন পর তিনি ১৫ থেকে ২০ মিনিট প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে উদ্দেশ্য করে তার আশা আকাঙ্ক্ষার কথা বলেন তার কথায় লোকের বিশ্বাস একশতভাগ। আমাদের ৬৪টি জেলা আছে। এভাবে করতে পারলে দেখা যাবে প্রতি দুই তিন মাস পরপরই আবার এইসব লোকজনদের সাথে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়কের দেখা হবে। আমি মনে করি দার্শনিক শেখ হাসিনার এটা করা তার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। কেননা তিনি যেসব কাজ করছেন তার মুখ দিয়ে জনগণ শুনতে চান। যেহেতু তার প্রতি বিশ্বাস আছে এই কারণেই তাকে বলতে হবে। এই দায়িত্বটি তারই। আমরা এটা হাজার হাজার বার বলি না কেন জনগণ শেখ হাসিনার কাছে একবার শুনে যতটা মনেপ্রাণে গ্রহণ করে ততটা আমাদের ক্ষেত্রে নয়। যখন তারা দার্শনিক শেখ হাসিনার নিজের মুখ থেকে শোনেন তখন তাদের বিশ্বাসের মাত্রা অনেক বেড়ে যায়। সুতরাং আমি মনে করি যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেভাবে তিনি বিভিন্ন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিনে বলেন সেভাবে তো বলবেনই। এছাড়াও তিনি একদিন অন্তত দশটা বা পনেরোটা জেলায় একসাথে কথা বলবেন, তাদেরও কথা শুনবেন। ধরুন তিনি তার জন্য ঘণ্টা সময় নিলেন বা দেড় ঘণ্টা সময় নিলেন। এরকম সময় নিয়ে এই যোগাযোগ করতে হবে। কারণ এখন কোন বিকল্প নাই। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা যেটা বলেন, দার্শনিক শেখ হাসিনা যেটা বলেন সেটাই যেহেতু জনগণ বিশ্বাস করে এই কারণের জন্য এখানে আর কোন বিকল্প পথ খোলা নেই। কারণ প্রান্তিক জনগোষ্ঠী যে দার্শনিক শেখ হাসিনাকে কি পরিমাণ ভালবাসেন, যারা তাদের সাথে আলাপ না করেছেন, যারা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর এমনকি সেখানে যারা চাকরি করে তারা পর্যন্ত কি পরিমাণ সম্মান করে, কি পরিমাণ বিশ্বাস করে, কি পরিমাণ তার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ এটা প্রান্তিক জনগোষ্ঠির সাথে না মিশলে কেউ বুঝতে পারবে না। তাই আমি মনে করি যে দার্শনিক শেখ হাসিনা আর প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এই সংযোগটা এখন সময় এসেছে যখন সরাসরি করা প্রয়োজন। তাই আমি বিশ্বাস করি যে দার্শনিক শেখ হাসিনা অবশ্যই আমাদের আশা পূরণ করবেন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭