ইনসাইড আর্টিকেল

শীতের আগমন: খেজুর রস সংগ্রহে আগাম প্রস্তুতিতে ব্যস্ত গাছিরা


প্রকাশ: 08/11/2022


Thumbnail

শীত মানেই ভাপা পিঠা আর খেঁজুরের রস যেন বাঙ্গালীর ঐতিহ্য। শীতের শুরুতেই খেঁজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে গাছিরা। প্রকৃতিতে বইছে শীতের আগমনী বার্তা। শীত আর পিঠা যেন সমার্থক। আর শীতের পিঠায় অন্যতম অঙ্গ খেজুরের গুড়। এ গুড় পাওয়া যায় খেজুরের রস থেকে।

রাতের কুয়াচ্ছন্ন আকাশ আর শেষ রাতে শীতের আভাস জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে শীত আসন্ন। শীতের আগমনী বার্তায় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়িতে গাছিরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন রস আহরনের জন্য। 

পুরোপুরি শীত শুরু না হলেও খেজুরের রস সংগ্রহের প্রস্তুতিতে গাছের শাখা প্রশাখা ও আগাছা কেটে সাফ করে প্রস্তুতি নিচ্ছেন গাছিরা। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে হলে প্রথমে খেজুর গাছের মাথা ভালো করে পরিষ্কার করে সাদা অংশ কেটে রোদে শুকিয়ে আবারও কেটে নলি লাগিয়ে ছোট-বড় বাসন বেঁধে রস সংগ্রহ করা হয় । এ রস অনেকে  হাট-বাজারে খাওয়ার জন্য বিক্রি করেন । আবার কেউ জ্বাল  দিয়ে গুড় তৈরি করেন । 

ফুলবাড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জমির আইল, রাস্তার পাশ এমনকি পুকুর পাড়ে খেজুর গাছের ডাল কেটে পরিষ্কার করছেন গাছিরা (এ পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তি)। কোমরে রশি বেঁধে নিপুন হাতে গাছ ছেঁটে দিচ্ছেন। গাছিরা জানান, শুকানোর পর আবারও ছেটবেন। এরপর ১০ থেকে ১৫ দিন পরে নলি লাগাবেন। এরপর শুরু করবেন রস সংগ্রহ। খেজুর গাছ থেকে রস পাওয়ার এ প্রক্রিয়াকে আঞ্চলিকভাবে কাম দেওয়া বলে।

উপজেলা সদর ইউনিয়নের পানিমাছকুটি গ্ৰামের গাছি জামাল হোসেন বলেন, এবার তিনি ২৫ টি খেজুর গাছ কেটেছেন। গাছগুলো তার নিজের। সব প্রস্তুতি শেষ।  অপেক্ষা রস সংগ্রহের। ফুলমতি গ্রামের গাছি জসিম উদ্দিন বলেন, তিনি ২০টি গাছ থেকে এবার রস সংগ্রহ করবেন। 

উপজেলার  কুরুষাফেরুষা গ্রামের গাছি আমিনুল ইসলাম বলেন, আগের মতো আর খেজুর গাছ নেই। অন্য দিকে গাছে রসও কমে গেছে ।

নাওডাঙ্গা গ্রামের গাছি খায়রুল ইসলাম জানান, তার ৩০টি গাছ আছে । গুড় তৈরিতে জ্বালানি সহ তার প্রতিদিনের খরচ প্রায় ৪০০ টাকা। রবিউল ইসলাম বলেন গত বছর ৮০ টাকা কেজি দরে গুড়  বিক্রি করেছি। আর নালি বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। এবারও একই রকম দাম থাকলে সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতিদিন ৭ থেকে ৮০০ টাকা লাভ হবে।

ফুলবাড়ী জছিমিয়া সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাহবুব হোসেন জানান, এখন আর খাঁটি গুড় পাওয়া দুষ্কর। ফুলবাড়ী বাজারের গুড় ব্যবসায়ী তাজুল ইসলাম বলেন, চাহিদার চেয়ে উৎপাদন কম হওয়ায় গুড়ের দামও অনেক বেশি। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন জানান, উপজেলায়   তিন হাজার খেজুর গাছ রয়েছে। চলতি বছর ৫০ টন গুড় উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এবার গাছের সংখ্যা কিছুটা কমেছে। খেজুর গাছের জন্য বাড়তি কোন পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না বলে কৃষি বিভাগ কৃষকদের বাড়ির আশপাশ, জমির আইল, পুকুরপাড় এবং সড়কের ধারে খেজুর গাছ লাগানোর পরামর্শ দেয়া হয়। পরিত্যক্ত জমিতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে খেজুর বাগান গড়ে তোলা হলে কৃষকরা লাভবান হবেন। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭