ইনসাইড বাংলাদেশ

অগ্নি সন্ত্রাসের মামলাগুলো বাক্সবন্দী কেন?


প্রকাশ: 08/11/2022


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী গত রোববার একটি আবেগঘন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করেছিলেন। বিএনপি-জামাতের অগ্নিসংযোগ বর্বরতার শিকার যে সমস্ত নাগরিকরা হয়েছিলেন তাদেরকে সান্ত্বনা দিতে জাতীয় জাদুঘরে সশরীরে উপস্থিত হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ‘অগ্নি সন্ত্রাসের আর্তনাদ: বিএনপি-জামাতের অগ্নি সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের খণ্ডচিত্র’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৩, ’১৪ এবং ’১৫ সালে তথাকথিত আন্দোলনের নামে সারা দেশজুড়ে বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসীরা নৈরাজ্য এবং সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। এই সময় পাঁচশোর বেশি মানুষ বিএনপির সন্ত্রাসী তাণ্ডবলীলায় নিহত হয়েছিলেন, আহত হয়েছিলেন প্রায় চার হাজার মানুষ। এই ঘটনাগুলোর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। প্রায় সারা দেশে ১০ হাজারের বেশি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী এই অগ্নি সন্ত্রাস যেন ফিরে না আসে, সেজন্য সতর্ক করেছিলেন সেদিনের অনুষ্ঠানে। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আমার শুধু একটাই আহ্বান থাকবে দেশবাসীর কাছে। রাজনীতি করতে চাইলে সুষ্ঠু রাজনীতি করুন, আমার আপত্তি নেই। কিন্তু সাধারণ মানুষের গায়ে কেউ হাত দিলে তাদের রক্ষা নাই। তিনি বলেন, আমি শুধু দেশবাসীকে এটুকুই বলবো, এই দুঃসময়ের কথা যেন কেউ ভুলে না যায়।

প্রধানমন্ত্রীর এরকম বক্তব্য যখন দিচ্ছেন, যখন অগ্নি সন্ত্রাসে আহত-নিহত পরিবারগুলো প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে আবেগঘন দৃশ্যের অবতারণা হচ্ছে, ঠিক সেই সময় এই মামলাগুলোর কি অবস্থা সেটির খোঁজ নিতে গেলে হতাশার চিত্র ফুটে উঠে। প্রধানমন্ত্রী নিজেও তার বক্তৃতায় বলেছেন যে, এদের বিচার হচ্ছে, হবে এবং মহান আল্লাহর তরফ থেকেই হবে। হয়তো প্রত্যেক মামলারই বিচার চলছে না কিন্তু যারা এধরনের অগ্নি সন্ত্রাসে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে, অনেকের বিচারকাজ চলছে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকেই সুস্পষ্ট ভাবে বোঝা যায় যে, অগ্নি সন্ত্রাসের যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সেই বিচারগুলো শ্লথগতিতে এগুচ্ছে। দেখা যাচ্ছে যে, অগ্নি সন্ত্রাসের ঘটনার প্রেক্ষিতে সারাদেশে ১০ হাজারের বেশি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু এই সমস্ত মামলার মধ্যে কোনো মামলাই চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হয়নি। সবচেয়ে বড় কথা প্রত্যেকটি মামলার পিছনে হুকুমদাতা বা হুকুমদাত্রী ছিল। বেগম খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর -এরা নির্দেশদাতা বা হুকুমদাতা হিসেবে এই সমস্ত মামলায় আসামি ছিলেন। কিন্তু মামলাগুলো সেভাবে এগুচ্ছে না।

বিভিন্ন মামলাগুলোর ব্যাপারে পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, এই সমস্ত মামলাগুলো কোনোটার চার্জশিটও হয়নি, কোনোটার চার্জশিট হলেও উচ্চ আদালতের নির্দেশে আটকে আছে, কোনটা বিচার মাঝ পথে গিয়ে থমকে রয়েছে। সংশ্লিষ্ট মনে করেন যে, বাংলাদেশে সন্ত্রাস-নৈরাজ্য বন্ধ করার জন্য এই ধরনের মামলাগুলোর বিচার এবং যারা প্রকৃত অপরাধী তাদেরকে আইনের আওতায় আনা উচিত। সারা দেশে যে অগ্নি সন্ত্রাস নিয়ে মামলাগুলো হয়েছে সে সমস্ত মামলাগুলোর বিচার যদি না হয় তাহলে ভবিষ্যতে এই সমস্ত সন্ত্রাসীরা আবার উস্কানি পাবে এবং এ ধরনের ঘটনাগুলো ঘটাবে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই মামলাগুলোর বিচার হওয়া উচিত ছিল। এখনো সময় আছে। প্রধানমন্ত্রীর এই আহ্বানের পর এবং ওই সময় যারা আহত-নিহত হয়েছেন, তাদের পরিবারের আর্তনাদের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন যে, দ্রুতই এই সমস্ত অগ্নি সন্ত্রাসের ঘটনাগুলোর তদন্ত শেষ করে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা উচিত। এটি বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং শান্তিপূর্ণ স্বদেশ বিনির্মাণের জন্য অত্যন্ত জরুরী।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭