ক্লাব ইনসাইড

ইবির হলের তরকারিতে পোকা, খাবারের মান তলানিতে


প্রকাশ: 09/11/2022


Thumbnail

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আবাসিক হলগুলোতে খাবারের মান নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ অনেক পুরনো। সম্প্রতি হলগুলোতে খাবারের দাম বাড়ানো হলেও সে তুলনায় মান বাড়েনি। খাবারে প্রায়শই বিভিন্ন পোকা-মাকড় পাওয়া যায় বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

সোমবার (০৭ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলে দুপুরে খাবার খেতে গিয়ে তরকারির মধ্যে পোকা পেয়েছেন এক ছাত্র। খাবারে পোকা দেখে বমি করে ওই ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন শিক্ষার্থীরা। কর্তৃপক্ষের যথাযথ তদারকির অভাবে হলগুলোতে খাবারের এই অবস্থা বলে দাবি করছেন তারা।

হলগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য মোট আটটি আবাসিক হল রয়েছে। এর মধ্যে ছাত্রহল ৫টা আর ছাত্রী হল তিনটা। করোনায় বন্ধের আগে আবাসিক হলগুলোতে খাবারের মেন্যু ভেদে দাম ছিল ২২, ২৫ ও ৩০ টাকা। বর্তমানে সর্বনিম্ন মিলরেট ২২ টাকা থাকার কথা থাকলেও দুটি হল বাদে অন্য কোথাও সেই দামে খাবার পায় না শিক্ষার্থীরা।  বর্তমানে হল ভেদে খাবারের মূল্য ২৫, ৩০, ৩৫ ও ৪০ টাকা। এছাড়া কয়েকটি হলে মেন্যু ভেদে ৫০ টাকা পর্যন্ত খাবারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এদিকে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে অবস্থিত হোটেলগুলোতেও খাবারের দাম বাড়ানো হয়েছে। প্রতিটি খাবারে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত করে বাড়ানো হয়েছে বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ। তবে আবাসিক হল ও ক্যাম্পাসের হোটেলগুলোতে খাবারের দাম বাড়লেও মান ও পরিমাণ আগের থেকে অনেক কমেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে শিক্ষার্থীরা হলের খাবারে প্রায়শই বিভিন্ন পোকা-মাকড় ও আবর্জনা পান বলে অভিযোগ করেছেন। গত মে মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জিয়াউর রহমান হলের খাবারে এক শিক্ষার্থী তেলাপোকা পেয়েছিলেন। একইমাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে এক ছাত্র খাবারে পোকা পান বলে জানা যায়। এছাড়া বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলসহ অন্যান্য হলগুলোর খাবারে প্রায়শই টিকটিকি, তেলাপোকা, চুল, শামুকসহ বিভিন্ন ধরণের পোকা পাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। আবাসিক হলগুলোতে পঁচা ডিম এবং বাসী খাবার দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এতে অনেক সময় শিক্ষার্থীরা পেটের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। এর আগে গত ২৩ অক্টোবর রাতে হলে নিম্নমানের খাবার পরিবেশনের অভিযোগে সাদ্দাম হলের ডাইনিংয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ছাত্র মুনতাকিম বলেন, হলের খাবারের দাম বাড়ানো হলেও মান প্রতিনিয়তই কমে যাচ্ছে। জাতির শ্রেষ্ঠ মেধাবীদের অত্যন্ত নিম্নমানের খাবার খাওয়ানো হয়। প্রতিনিয়তই খাবারের ভেতরে পোকা, চালের ভেতরে পোকা, আধাকাচা সবজি, খাবারে মাছি, অত্যন্ত ঘিঞ্জি নোংরা পরিবেশে খাবার রান্না এগুলো নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। হলের খাবারে পুষ্টি তো নেই, বরং নানাবিধ শারীরিক দুর্বলতা সহ অসুস্থতা দেখা দেয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদ্দাম হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মিলন বলেন, হলের খাবারের মান অত্যন্ত নিম্ন মানের। স্যাঁতস্যাঁতে ও দুর্গন্ধযুক্ত পরিবেশে খাবার রান্না করা হয়। বিভিন্ন সময় খাবারে পোকা-মাকড় পাওয়া যায়। কর্তৃপক্ষকে এদিকে সুদৃষ্টি দেয়া উচিত।

খাবারে পোকা-মাকড় পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে লালন শাহ হলের ডাইনিং ম্যানেজার শাবু চৌধুরী বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের ভালোভাবে খাবার দেয়ার চেষ্টা করি। তবে অনেক সময় অসাবধানতায় এমন অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু পড়ে যায়। খাবারের মান কেন বৃদ্ধি পাচ্ছে না? এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষার্থী প্রতি মাসে ১০০ টাকা করে ভর্তুকি দেয়া হয়। যা বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির তুলনায় অনেক কম। ভর্তুকি না বাড়ালে আমরাও সেভাবে কিছু করতে পারছি না।

প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন আরা সাথী বলেন, আমরা ডাইনিং ম্যানেজারদের বলেছি স্বাস্থ্যসম্মতভাবে খাবার পরিবেশন করতে। এ বিষয়ে তাদের আগেও অনেকবার সতর্ক করা হয়েছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭