ইনসাইড গ্রাউন্ড

৯২ বিশ্বকাপের পুর্নমঞ্চায়ন, ফাইনালে পাকিস্তান


প্রকাশ: 09/11/2022


Thumbnail

ক্রিকেটে ইতিহাসে অঘটন-ঘটন পটিয়সী বলা হয় পাকিস্তানকে। এই দাবির পেছনের যথার্থতাও প্রমাণ করেছে দলটি। যার মধ্যে সবচেয়ে চর্চিত ১৯৯২ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ওয়াসিম আকরাম-ইমরান খানদের দলটি সেবার করকম ছিটকেই গিয়েছিলো বিশ্বকাপ থেকে। খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাড়িয়ে সেমিফাইনালে উঠে চমক দেখায় দলটি। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও গল্পটা তেমনই। প্রথম দুই ম্যাচে ভারত ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার শঙ্কাই ছিলো বেশি। তবে নানা সমীকরণ মিলিয়ে শেষ চারের টিকিট পায় বাবর আজমের দল। ৯২ এর মতো এই বিশ্বকাপেও সেমিতে প্রতিপক্ষ হিসেবে পায় নিউজিল্যান্ডকে।

বিশ্বকাপ ও নকআউট মিলিয়ে কিউইদের বিপক্ষে অতীত পরিসংখ্যান পক্ষে ছিলো পাকিস্তানের। তবে পারফরম্যান্সের বিচারে বাবর আজমরা পিছিয়ে থাকায় ম্যাচে ফেভারিট ছিলো নিউজিল্যান্ডই। তবে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ভিন্ন এক গল্প লিখলো পাকিস্তান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারিয়ে ১৩ বছর পর ফাইনালে উঠলো আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তান।

টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় নিউজিল্যান্ড। ম্যাচের প্রথম বলে শাহিন আফ্রিদির বলে বাউন্ডারি মেরে রানের খাতা খোলেন ফিন অ্যালেন। পরের বলেই তাকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন শাহিন। রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান অ্যালেন। তবে নতুন জীবন পেলেও তা কাজে লাগাতে পারেন নি ফিন অ্যালেন। তৃতীয় বলে আফ্রিদিকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আবারও লেগ বিফোর উইকেটের আবেদন জানায় পাকিস্তান। রিভিউ নিলেও এ যাত্রায় আর বাঁচতে পারেন নি এই মারকুটে ব্যাটসম্যান। ৪ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি।

এরপর নিয়ন্ত্রিত বোলিং এ রানের চাকায় লাগাম টানেন পাকিস্তানি বোলাররা। পাওয়ার প্লে'র শেষ বলে রান আউটে কাটা পড়েন কনওয়ে। ক্রিজে এসে থিতু হতে পারেন নি টুর্নামেন্টজুড়ে দুর্দান্ত ব্যাট করা গ্লেন ফিলিপস। দলীয় ৪৯ রানের ফিলিপসের বিদায়ের পর ধুঁকতে থাকে কিউইরা। চতুর্থ উইকেটে ৬৮ রানের জুটি গড়ে ধাক্কা সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন কেন উইলিয়ামসন ও ড্যারেল মিচেল। আফ্রিদির দ্বিতীয় শিকার হয়ে উইলিয়ামসন আউট হলে ভাঙে তাদের প্রতিরোধ। ৪২ বলে ৪৬ রান করেন উইলিয়ামসন। শেষ দিকে জিমি নিশামকে নিয়ে ব্ল্যাক ক্যাপসদের টেনে নেন মিচেল। ৩২ বলে তুলে নেন আসরে নিজের প্রথম অর্ধশতক। তার অপরাজিত ৫৩ রানের ইনিংসে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৫২ রান তোলে নিউজিল্যান্ড।

কিউইদের দেয়া ১৫৩ রানের টার্গেট তাড়ায় দুই ওপেনার মোহাম্মাদ রিজওয়ান ও বাবর আজম উড়ন্ত সূচনা এনে দেন পাকিস্তানকে। পাওয়ার প্লে'র সুবিধা কাজে লাগিয়ে দ্রুত গতিতে রান তুলে নিতে থাকেন দুই ব্যাটসম্যান। মাঠের চারপাশে শট খেলে শাসন করতে থাকেন কিউই বোলারদের।

সুপার টুয়েলভে ৫ ম্যাচ খেলে পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম করেছিলেন ৩৯ রান। যার মধ্যে প্রথম চার ম্যাচেই ছুঁতে পারেন নি দুই অঙ্কের ঘর। বাংলাদেশের বিপক্ষে ২৫ রান করলেও, স্ট্রাইক রেটের কারণে সমালোচিত হয়েছিলেন। তবে সেমিফাইনালে বাবর নিজেও ফিরলেন, দলকে নেতৃত্ব দিলেন সামনে থেকে। রিজওয়ানকে নিয়ে রীতিমত তান্ডব চালালেন বোল্ট-সাউদিদের উপর। আর তাদের ব্যাটে ভর করে এবারের আসরে সর্বোচ্চ রানের উদ্বোধনী জুটি দেখলো পাকিস্তান। এর আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫৭ রান ছিলো সর্বোচ্চ। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তারা ছাড়িয়ে গেলেন সেটি। প্রথম ১০ ওভারে ৮.৭০ গড়ে স্কোরবোর্ডে তোলেন ৮৭ রান।

৩৯ বলে আসরে নিজের প্রথম হাফসেঞ্চুরির দেখা পান বাবর। দলীয় ১০৫ রানে তিনি ট্রেন্ট বোল্টের শিকার হলে ভাঙে পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটি। প্রথম সাফল্য পায় নিউজিল্যান্ড। তবে ততক্ষণে ম্যাচ থেকে অনেকটাই ছিটকে গেছে ব্ল্যাক ক্যাপসরা। বাবর বিদায় নিলেও রিজওয়ানের ব্যাটে জয়ের কক্ষপথেই ছিলো পাকিস্তান। আসরের প্রথম অর্ধশতক তুলে নেন তিনিও। আক্রমণাত্নক ব্যাটিংয়ে জয়ের পথে এগোতে থাকে দলটি। রিজওয়ান-হারিস দুজনেই আউট হলেও ৫ বল হাতে রেখে তুলে নেয় জয়।

যাদের নকআউট পর্বের স্বপ্ন ছিলো দূরের বাতিঘর, সেই দলটিই ২০০৯ সালের পর আবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে গেলো দাপুটে জয়ে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭