ইনসাইড আর্টিকেল

গণতন্ত্রের আন্দোলন এবং বর্তমান বাস্তবতা


প্রকাশ: 10/11/2022


Thumbnail

গণতন্ত্রের মূল সৌন্দর্য হলো বহু দলের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। বিভিন্ন মত ও পথের মানুষ পাশাপাশি বসবাস করবেন। প্রত্যেকে তার কথা, বিশ্বাস, চিন্তা-চেতনা বিনা বাধায় প্রকাশ করবেন। জনগণের ভোটের মাধ্যমে নির্ধারিত হবে কারা দেশ পরিচালনা করবেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্যদিয়ে দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়। এরপর ক্ষমতা স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান ক্ষমতা কুক্ষিগত করে। পরবর্তীতে স্বৈরশাসক এরশাদ ১৪ বছর ধরে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখে। স্বৈরশাসক এরশাদের সময়কালে ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে বুকে-পিঠে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক’, ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ স্লোগান লিখে মিছিলে অংশ নেয়া নূর হোসেন নিহত হন এবং তাঁর রক্তে রঞ্জিত হয় রাজপথ। তাঁর আত্মত্যাগ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে বেগবান করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পতন ঘটে। কিন্তু তারপরও গণতন্ত্র পরিপূর্ণ প্রতিষ্ঠা পায়নি বলেই অনেকে মনে করেন।

স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমানের হাতেগড়া বিএনপি এবং স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি জামায়াত কখনোই গণতন্ত্রের পক্ষে ছিল না। ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়ন শুরু করে, যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানাল, জঙ্গিবাদের মদদ দিয়ে গণতন্ত্রকে আবারও হত্যা করে। তারপর এক-এগারোর অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার মানুষকে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গণতন্ত্র রক্ষা‍য় ছিলেন আপোষহীন। আন্দোলনের মুখে এক-এগারোর সরকার নির্বাচন দেয় এবং সেই নির্বাচনে জনগণের বিপুল সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। তখন বিএনপি-জামায়াত-হেফাজতে বিভিন্ন সময় জ্বালাও-পোড়াও এবং পেট্রোল বোমার মাধ্যমে অগ্নি সন্ত্রাসী তৎপরতা চালায়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় লড়ে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রয়েছে। কিন্তু সেই গণতন্ত্র নিয়ে এখনও নানা রকম ষড়যন্ত্র চলছে। স্বাধীনতাবিরোধী নানামুখী অপশক্তি দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করতে দেশে-বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র করে চলেছে।

সেই সাথে বর্তমান সরকারের অনেক এমপি-মন্ত্রী, নেতাকর্মী থেকে শুরু করে আমলাদের কর্মকাণ্ডে গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন ওঠছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার দেশের অভূতপূর্ব উন্নতি সাধন করেছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ থেকে শুরু করে মেট্রোরেলের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ তার সক্ষমতার নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। জনগণের অধিকার সমুন্নত রাখতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু তবুও আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র আজ প্রশ্নবিদ্ধ। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতা তা নয়। কারণ, বাংলাদেশ সম্পর্কে আন্তর্জাতিক মহলে প্রতিনিয়ত মিথ্যাচার এবং অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তাই গণতন্ত্রের প্রকৃত অবস্থাকে খারাপ দেখিয়ে প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্র করে চলেছে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকরা। নূর হোসেনের আত্মদানকে ম্লান করে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ইতিহাস থেকে গণতন্ত্রকে মুছে দিতে চায়। কিন্তু গণতন্ত্রকে পরিপূর্ণ প্রতিষ্ঠা করতে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিকে নির্মূল করে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির হাতে থাকতে হবে রাষ্ট্র পরিচালনার ভার।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭