ইনসাইড পলিটিক্স

১০ ডিসেম্বর: ঢাকার পাঁচ সড়ক দখল করতে চায় বিএনপি


প্রকাশ: 11/11/2022


Thumbnail

আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপি ঢাকায় কি করতে চায় তারা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানারকম আলোচনা। বিএনপি বলছে এই দিনে সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে যাবে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ১০ ডিসেম্বর কিছুই হবে না। রাজপথ বিএনপিকে দখল করতে দেয়া হবে না। ডিসেম্বর মাসজুড়ে আওয়ামী লীগ নানারকম কর্মসূচির মধ্যে থাকছে। ৩ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের সমাবেশ করেছে। আর এই নিয়ে পাল্টাপাল্টি অবস্থান রাজনীতিতে উত্তাপের আভাস দিচ্ছে। তবে বিএনপির ১০ ডিসেম্বর নিয়ে যে সমস্ত পরিকল্পনা করছে তা সবই গোপনে এবং নীরবে। একাধিক সূত্র বলছে, বিএনপি আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকার পাঁচটি সড়ক দখল করে রাখতে চায়। এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপি কোথায় সমাবেশ করবে সে সম্পর্কে কোনো ঘোষণা দেয়নি। এমনকি বিএনপি সমাবেশস্থল সম্পর্কে ডিএমপির অনুমতি নিতে হয় সে অনুমতির জন্য আবেদন করেন। বিএনপি পুরো পরিস্থিতি বুঝতে চাইছে বলেই একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। যে পাঁচটি সড়ক বিএনপি দখল করে রাখতে চায় তা হল পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনের সড়ক। বিজয় স্মরণী থেকে সোনারগাঁও হোটেল পর্যন্ত সড়ক।  শাহবাগ থেকে বাংলামোটর পর্যন্ত সড়ক। ধানমন্ডি সংলগ্ন মিরপুর রোড এবং প্রেসক্লাব এবং সচিবালয় সংলগ্ন এলাকায়।

এই সড়কগুলোতে বিএনপি আগের দিন থেকে অবস্থান গ্রহণ করতে চায় বলে জানা গেছে। বিএনপির একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছে যে, ঢাকায় মহাসমাবেশের অবয়ব প্রকৃতি কেমন হবে সেটি নিয়ে আমরা খুব শীগ্রই বৈঠক করব। তবে আমরা কোথায় এই মহাসমাবেশ করব সে ব্যাপারটি এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি। সেজন্য সবগুলো বিকল্পই রাখা হয়েছে। যেকোনো একটিতে মহাসমাবেশ করা হবে। তবে ৫ টি সড়কে অবস্থান সম্পর্কে বিএনপির ওই নেতা বলেছেন যে, আমাদের এরকম কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। কিন্তু বিএনপি ঢাকা মহানগরসহ বিভিন্ন নেতারা গোপনে গোপনে এই পরিকল্পনা গ্রহণ করছেন এবং যে যেভাবে পারে এই সড়কগুলোতে অবস্থান গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছে। অবশ্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, বিএনপি রাজনৈতিক সমাবেশ করলে সেটিতে তাতে বাধা দেওয়া হবে না। কিন্তু রাজনৈতিক সমাবেশ এর বাহিরে যদি তারা জনগণের ওপর আঘাত করে তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বয়ং বলেছেন যে, জনগণের ওপর যদি কেউ হাত তুলে তাহলে তার সহ্য করা হবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন যে, বিএনপি যদি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করে তাহলে বাধা দেওয়া হবে না। কিন্তু দেশে যদি কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায় সেটি কঠোরভাবে দমন করা হবে। 

বিএনপির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে, বিএনপি আসলে দুটি বিকল্প নিয়ে ভাবছে। একটি বিকল্প হলো স্বাভাবিকভাবে শান্তিপূর্ণ একটি সমাবেশ করা এবং সেটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বা পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে। আর যদি তারা দেখে যে তাদের লোকসমাগম অনেক ভালো হচ্ছে, ঢাকার বাইরে থেকে প্রচুর লোক আসছে সে ক্ষেত্রে তারা বিভিন্ন সড়কগুলোতে অবস্থান গ্রহণ করে একটি অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। তবে যে পাঁচটি সড়ক দখলের কথা বিএনপি বলছে সে দখল করার জন্য যে ধরনের কর্মীর বাইরে থাকা দরকার এবং যে ধরনের সাংগঠনিক সামর্থ্য থাকা দরকার সেটি বিএনপির আছে কিনা তা নিয়ে বিএনপির মধ্যে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। অবশ্য সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি দেশে একটি নাশকতা এবং অরাজকতা সৃষ্টি করতে চায়। কাজেই এই ব্যাপারটি সরকারের মাথায় আছে। সরকার জনগণের জানমালের হেফাজত করতে বদ্ধপরিকর। আর তাই ১০ ডিসেম্বর কোন রকম অরাজকতা বরদাস্ত করতে দেয়া হবে না। আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে যে, ১০ ডিসেম্বরকে ঘিরে বিএনপির যে পরিকল্পনা সেই পরিকল্পনা রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক দুইভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭