ইনসাইড পলিটিক্স

কাদের কি সংকেত পেয়েছে?


প্রকাশ: 11/11/2022


Thumbnail

আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আগামী ২৫ ডিসেম্বর। এই কাউন্সিল অধিবেশন উপলক্ষে এখন সাজ সাজ রব। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উৎসাহ-উদ্দীপনায় কমতি নেই। এই কাউন্সিলের আগেই আওয়ামী লীগের অনেকগুলো অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ নিয়েও আওয়ামী লীগের মধ্যে টানটান উত্তেজনা। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে প্রধান প্রশ্ন হচ্ছে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে নতুন সাধারণ সম্পাদক কে হবে? বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরই কি আবার সাধারণ সম্পাদক থাকবেন নাকি আওয়ামী লীগে নতুন কোনো সাধারণ সম্পাদক হবে? এ নিয়ে বিভিন্ন নেতারা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছেন, বিভিন্ন ব্যক্তির নাম আলোচনায় উঠেছে। তবে হঠাৎ করেই কাউন্সিলের দিন তারিখ চূড়ান্ত করার পর ওবায়দুল কাদের পাদপ্রদীপে এসেছেন। তিনি ছুটে বেড়াচ্ছেন বিভিন্ন সমাবেশে, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। তাঁকে বেশ সরব এবং স্বতঃস্ফূর্ত দেখা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে তাহলে কাদের কি সংকেত পেয়েছেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতি সম্পর্কে যারা ওয়াকিবহল আছেন তারা জানেন যে, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেষ পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক পদটি চূড়ান্ত করেন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে যাকে চূড়ান্ত করা হবে তিনি আগে থেকেই একটি সংকেত পান এবং এই সংকেতটি অবশ্য তিনি গোপন রাখেন। কারো সাথে প্রকাশ করেন না। কিন্তু তার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ এবং তার মনোভাব দেখলেই বোঝা যায় যে, তিনি সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন। 

১৯৯২ সালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে যখন আব্দুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ এবং আব্দুল জলিল এর ত্রিমুখী লড়াই তখন জিল্লুর রহমান সংকেত পেয়েছিলেন। আর সংকেত পেয়েছিলেন জন্যই রাতে যখন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে কমিটি ঘোষণা করা হবে তখন বাড়ি থেকে এসে তিনি সম্মেলনস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন। অর্থাৎ তিনি আগে থেকেই জানতেন যে, তিনি সাধারণ সম্পাদক হতে যাচ্ছেন। ২০০১ এ  নির্বাচনে বিপর্যয় এরপর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন আব্দুল জলিল। তিনিও আগে থেকেই সংকেত পেয়েছিলেন এবং কাউন্সিল হওয়ার আগেই সবাই জানতেন যে আব্দুল জলিল এবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হতে যাচ্ছেন, এটি ছিল প্রায় পূর্বনির্ধারিত। আওয়ামী লীগের একটি সংকটকালীন সময়ে ওয়ান-ইলেভেনের সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম  ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন। ২০০৯ কাউন্সিলে যখন সৈয়দ আশরাফকে সাধারণ সম্পাদক পদে পুর্ননিয়োগ দেওয়া হয় তখন কারো কোনো সন্দেহ ছিল না যে সৈয়দ আশরাফই সাধারণ সম্পাদক হতে যাচ্ছেন। আগে থেকেই তাকে এ ব্যাপারে সংকেত দেওয়া হয়েছিল। একই ব্যাপার ঘটেছিল ওবায়দুল কাদেরের ক্ষেত্রে। ওবায়দুল কাদের যখন সৈয়দ আশরাফের কাছ থেকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেন তার আগেই একটি জাতীয় দৈনিকে খবর বেরিয়েছিল যে ওবায়দুল কাদেরই সাধারণ সম্পাদক হতে যাচ্ছে। অর্থাৎ তিনি সংকেত পেয়েছেন এবং তিনি যে সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন এই বিষয়টি সকলেই তখন জানতেন। এখন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কে হচ্ছেন এ নিয়ে নানামুখী আলোচনা চলছে। কাউকে কি আওয়ামী লীগ সভাপতি সংকেত দিয়েছেন? সেই প্রশ্নটি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন আলোচনায় বারবার ঘুরেফিরে আসে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো নেতার কাছ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়নি যে তিনি সাধারণ সম্পাদক হওয়ার কোনো সংকেত পেয়েছেন। 

ওবায়দুল কাদের অবশ্য গত কিছুদিন ধরে ফুরফুরে। অসুস্থ্যতাকে পাশ কাটিয়ে তাকে সপ্রতিভ দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন সমাবেশ এবং সভায় তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করছেন এবং বিরোধী দলকে আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিচ্ছে। এর পিছনে কোনো কারণ আছে কি না সেটি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা গুঞ্জন এবং আলোচনা। কেউ কেউ মনে করছেন যে সাম্প্রতিক সময়ে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা, সামনে নির্বাচন ইত্যাদি নানা বাস্তবতার কারণে আওয়ামী লীগ সভাপতি হয়তো শেষ পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তন নাও মানতে পারেন এবং এই বিষয়টি ওবায়দুল কাদের হয়তো জানতে পারেন। আবার অনেকের ধারণা যে, আওয়ামী লীগ সভাপতি এখন পর্যন্ত কাউকে সংকেত দেননি। ওবায়দুল কাদের তৃতীয় দফায় সাধারণ সম্পাদক হতে আগ্রহী এ জন্য তিনি তার কর্মকাণ্ডকে দৃশ্যমান করছেন। তিনি বিভিন্ন কাজে সরব থেকে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে চাইছেন। আসলে শেষ পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক কে হবে সেটির একটি সংকেত পাওয়া যাবে সম্মেলনে ঠিক আগে আগে, এতো আগে নয়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭