ইনসাইড পলিটিক্স

তবুও হতাশা বাড়ছে বিএনপিতে


প্রকাশ: 12/11/2022


Thumbnail

অন্যান্য বিভাগীয় সমাবেশের মতো আজ ফরিদপুরেও বিভাগীয় সমাবেশ করেছে বিএনপি। ফরিদপুর আওয়ামী লীগের একটি শক্ত ঘাঁটি। সেখানেও বিএনপি সফল সমাবেশ করেছে। কিন্তু প্রতিটি সাংগঠনিক বিভাগীয় শহরে সফল সমাবেশ করার পরও বিএনপির মধ্যে হতাশা বাড়ছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রশ্ন করছেন, এরপর কি? শুধুমাত্র এই ধরনের সমাবেশ করে বিএনপি কতটা লাভবান হবে সেই প্রশ্ন বিএনপির মধ্যে উঠেছে। বিএনপি নেতাকর্মীরা মনে করছেন, এসব সমাবেশের পাশাপাশি বিএনপিকে অন্য ভিন্ন ধরনের কর্মসূচিও প্রদান করা উচিত, যে সমস্ত কর্মসূচিতে সরকারের ওপর চাপ পড়বে। এ ধরনের মহাসমাবেশের মাধ্যমে বিএনপি তার নিজের সাংগঠনিক শক্তি প্রমাণ করতে পারছে বটে কিন্তু এ ধরনের সমাবেশ সরকারের ওপর কোনো চাপ সৃষ্টি করতে পারছে না। বিএনপি নেতারাই এখন বলছেন, এ ধরনের সমাবেশের মাধ্যমে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করা সম্ভব হবে না। এটি শুধুমাত্র একটি শোডাউন ছাড়া অন্য কোনো কিছুই নয়।

বিএনপির পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হচ্ছে যে, ১০ ডিসেম্বরের পরে তারা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে। কিন্তু বিএনপির নেতারাই বলছেন যে, ইতোমধ্যে সরকার লোডশেডিং পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক করে ফেলেছে এবং আগামী শীতে দেশে কোনো লোডশেডিং হবে না। বিএনপি নেতারা এটাও বলছেন যে, আইএমএফের লোন পাওয়ার ফলে সরকার একটা সুবিধাজনক অবস্থানে চলে গেছে। কাজেই, বিএনপি যেটা আশা করেছিলো যে অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়ে সরকারকে চাপে ফেলা যাবে, সেটি সম্ভব হচ্ছে না। তাছাড়া এই ধরনের কর্মসূচিগুলোর ফলে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে যে উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হচ্ছে সেই উৎসাহ-উদ্দীপনায় ক্রমশ ভাটার টান লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিএনপি নেতারা বলছেন যে, কর্মসূচি ফলোআপ কি হচ্ছে সেটাও একটা দেখার বিষয়। কিন্তু এই ধরনের কর্মসূচিতে নেতারা বক্তৃতা দিচ্ছেন, কর্মীরা হাততালি দিচ্ছেন, এরপর আর কোনো ফলোআপ হচ্ছে না। যেমন- চট্টগ্রামে বিএনপি সমাবেশ করেছে, সমাবেশ সফল হয়েছে। কিন্তু এরপর চট্টগ্রামে বিএনপিতে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। আর কোনো কর্মসূচি নেই। বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেছেন যে, সমাবেশের পাশাপাশি ছোটখাটো বিভিন্ন বিষয়ে বিএনপির কর্মসূচি পালন করা উচিত এবং এই কর্মসূচিগুলো যদি না পালন করা হয় তাহলে কর্মীরা হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকবে এবং সরকারের বিরুদ্ধে বড় ধরনের আন্দোলন করা সম্ভব হবে না।

বিএনপির একজন নেতা বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন, একটি আন্দোলন গড়ে তুলতে দেড় থেকে দুই বছর সময় লাগে। কিন্তু এখন যেভাবে কর্মসূচি দেওয়া হচ্ছে তাতে ১০ ডিসেম্বরের আগে বড় ধরনের কোনো কর্মসূচি দেয়া সম্ভব না। ১০ ডিসেম্বরের কর্মসূচি নিয়ে সরকারও একটি শক্তিশালী অবস্থান গ্রহণ করছে। এরকম বাস্তবতায় সরকারকে চাপে ফেলার জন্য এখন থেকেই কর্মসূচি দরকার। ১০ ডিসেম্বরের পরে যদি সরকার কঠোর অবস্থানে চলে যায় তাহলে আবারও অতীতের আন্দোলনের মতো এ আন্দোলনও ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। এরকম বাস্তবতায় বিএনপির মধ্যে এক ধরনের হতাশা বাড়ছে এবং এই হতাশা গুলো ক্রমশ বিএনপিকে একটি নতুন সংকটের দিকে নিয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিএনপির নেতারাই বলছেন যে, যদি এ ধরনের আন্দোলনে বড় ধরনের কোনো ঝাঁকুনি না দেওয়া যায় তাহলে আগামীতে নির্বাচন ঠেকানো অসম্ভব হয়ে পড়বে। আর এসব আন্দোলন করতে করতে ক্লান্ত বিএনপির ওপর নতুন নতুন মামলার খড়গ নেমে আসছে। এর ফলে যখন সত্যি সত্যি চূড়ান্ত আন্দোলন করবে, তখন নেতাকর্মীরা কেউই বের হতে পারবে না। এটি বিএনপির জন্য একটি বড় ধরনের সংকট তৈরি করবে বলেই মনে করছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭