ইনসাইড আর্টিকেল

প্রথম আলোর প্রীতি সম্মেলনে মন্ত্রী-আমলাদের ভিড়


প্রকাশ: 13/11/2022


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি যে পত্রিকাটির সমালোচনা করেন, জাতীয় সংসদের গত ২ নভেম্বরের অধিবেশনে বিরোধি দলীয় সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা যখন খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ে প্রথম আলোসহ বেশকিছু পত্রিকার প্রতিবেদনের উদাহরণ দেন প্রধানমন্ত্রী তখন বলেছিলেন, এই পত্রিকার কোনো বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। এই পত্রিকার একমাত্র কাজ বিভ্রান্তি ছড়ানো বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি এই পত্রিকা পড়ি না, এমনকি পড়ার প্রয়োজনও মনে করিনা। এবারই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিবার প্রধানমন্ত্রী এমন মন্তব্য করেছিলেন। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী যে পত্রিকাটিকে বিভ্রান্তি ছড়ানোর দায়ে দুষ্ট করেছেন, সেই পত্রিকার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, রাজনীতিক, বিদেশী কূটনীতিক থেকে শুরু করে সমাজের সর্ব স্তরের মানুষ।

উল্লেখ, প্রথম আলোর ২৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী নিয়ে শুরু হয়ে ধারাবাহিক আয়োজন। জেলায় জেলায় হচ্ছে সুধী সমাবেশসহ নানা অনুষ্ঠানের। সেই ধারাবাহিকতায় গতকাল শনিবার (১২ নভেম্বর) রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে আয়োজিত হয় প্রীতি সম্মেলন। সেখানে মন্ত্রীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসুরল হামিদ ও তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তাদের সরব উপস্থিতির পাশাপাশি দেশের অনেক সিনিয়র রাজনীতিকরাও উপস্থিত ছিলেন।

অথচ এই প্রথম আলো ইতিহাসের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত নানা বিতর্কে জড়িয়ে আছে। ১৯৯৮ সাল থেকেই পত্রিকাটির প্রধান লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিভ্রান্তি ছড়ানো, বিরাজনীতিকরণ, রাজনীতিবিদদের চরিত্রহনন করা এবং একটি সুশীলনীতি বাস্তবায়ন করা। ২০০৭ সালে প্রথম আলো সেই উদ্যোগে সফলও হয়েছিলো। প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান চেয়েছিলেন মাইনাস ফর্মুলা বাস্তবায়ন করতে। ওয়ান-ইলেভেনের সময় প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের নেত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার চেষ্টায় আদাজল খেয়ে নেমেছিলো, যা মাইনাস টু ফর্মুলা হিসেবে পরিচিত।

মাইনাস টু ফর্মুলার প্রবক্তা মতিউর রহমান ২০০৭ সালের ১১ জুন ‘দুই নেত্রীকে সরে দাঁড়াতে হবে’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। মাইনাস টু ফর্মুলার মাধ্যমে বিরাজনীতিকরণের চেষ্টা করে প্রথম আলো। এছাড়াও আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে দুর্নীতিসহ নানা ধরণের মিথ্যাচার, কুৎসা ছড়ায় পত্রিকাটি। কিন্তু জনগণ শেখ হাসিনার পাশে ছিলো বলে তাতে সফল হয়নি এক-এগারোর কুশীলবরা। এ কারণেই জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, প্রথম আলো তিনি পড়েন না। ‘কারণ, প্রথম আলোর লক্ষ্যই হলো বিভ্রান্তি ছড়ানো। এরা কখনো বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকুক তা চায় না। একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তারা পছন্দ করে।’

যেই পত্রিকা বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়ার জন্য রাজনীতিবিদদের চরিত্র হনন করে, রাজনীতিবিদদের সম্পর্কে কুৎসিত, নোংরা আপত্তিকর তথ্য উপস্থাপন করে। রাজনীতিবিদদের দুর্নীতিবাজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য চেষ্টার কোনো ক্রটি রাখে না, যেই পত্রিকার স্বয়ং সরকার প্রধান পছন্দ করেন না, সেই পত্রিকার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী-আমলাদের যাবার রুচি কীভাবে হয়, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন মহল।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭