ইনসাইড গ্রাউন্ড

এবারই শেষ বিশ্বকাপ যাদের? (দ্বিতীয় পর্ব)


প্রকাশ: 16/11/2022


Thumbnail

কাতারে অনুষ্ঠিতব্য এই বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে অনেক তারকা ফুটবলারের শেষ বিশ্বকাপ। ২০২৬ বিশ্বকাপে আর দেখা যাবে না বর্তমান সময়ের মহাতারকাদের একটি বড় অংশকে। কেউ বয়সের ভারে, কেউ পারফরম্যান্সের পড়তির কারণে বিদায় জানাবেন ফুটবল বিশ্বকাপকে। তবে ক্লাব ফুটবলে এসব তারকারা হয়তো খেলা চালিয়ে যাবেন। খেলবেন আরো কিছুদিন। কিন্তু কাতার বিশ্বকাপের পর জাতীয় দলের জার্সি ও বুটজোড়া তুলে রাখার এই তালিকাটাও নেহায়েত ছোট নয়। এই তালিকায় থাকা ফুটবলারদের নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদনের দ্বিতীয় পর্ব।

লুইস সুয়ারেজ

বর্তমান সময়ের অন্যতম প্রতিভাবান ফুটবলার লুইস সুয়ারেজ। উরুগুয়ে দলের সবচেয়ে বড় তারকাও তিনি। ফুটবল মাঠে বল পায় মুগ্ধতা ছড়ানোর পাশাপাশি দেখিয়েছেন বুদ্ধিমত্তাও। আধুনিক ফুটবলের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকারও বলা হয় তাকে। সব মিলিয়ে যেন এক পরিপূর্ণ প্যাকেজের নাম লুইজ সুয়ারেজ। ২০০৭ সালে উরুগুয়ের জার্সিতে অভিষেক হয় কলম্বিয়ার বিপক্ষে। ক্যারিয়ারের প্রথম বিশ্বকাপ খেলেন ২০১০ সালে। এরপর লা সিলেস্তেদের নীল জার্সিতে খেলেছেন ১৩৪ ম্যাচ। ৬৬ গোল করে দলটির ইতিহাসের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা সুয়ারেজ। ক্যারিয়ারের চতুর্থ বিশ্বকাপ খেলতে যাবেন ৩৫ বছর বয়সে। কাতার বিশ্বকাপেই হয়তো তাই শেষবারের মত ফুটবলের বিশ্বমঞ্চে দেখা যাবে তাকে।

দানি আলভেজ

ফুটবলের সর্বকালের সেরা রাইটব্যাক বলা হয় তাকে। ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে খেলায় সে কথার যথার্থতা প্রমাণ করেছেন দানি আলভেজ। শীর্ষ পর্যারের ফুটবলে জিতেছেন ৪৭টি ট্রফি। রক্ষণ থেকে আক্রমণভাগ সবখানেই সরব উপস্থিতি থাকে তার। ২০০৬ সালে অভিষেকের পর থেকে ব্রাজিল জাতীয় দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ তিনি। সেলেকাওদের হয়ে খেলেছেন ২টি বিশ্বকাপ ও ৫টি কোপা আমেরিকা। কাতারে অনুষ্ঠিত আসরটি তাই হতে যাচ্ছে ক্যারিয়ারের তৃতীয় বিশ্বকাপ।

ব্রাজিলের হলুদ জার্সিতে বিশ্বকাপ অভিষেক ২০১০ সালে। পরের বিশ্বকাপে ব্রাজিল কোচ স্কলারির রক্ষণের অন্যতম ভরসা ছিলেন আলভেজ। তবে হাঁটুর ইনজুরিতে পড়ে খেলতে পারেন নি ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপ। বয়স হয়ে গেছে ৩৯। এই বয়সে এসেও মাঠে দারুণ তৎপর এই রাইটব্যাক। প্রতিপক্ষকে নাকানি চুবানি খাওয়ান আগের মতই। তবে ২০২৬ বিশ্বকাপের আগেই হয়তো জাতীয় দলের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ইতি টানতে পারেন দানি আলভেজ।

আনহেল ডি মারিয়া

বৈচিত্রময় ফুটবলার তিনি। উইঙ্গার কিংবা অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার দুই ভূমিকাতেই স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে পারেন। গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে আর্জেন্টিনার অন্যতম ভরসার প্রতীক। উইং ধরে দ্রুত আক্রমণে উঠায় তার জুড়ি মেলা ভার। তবে ক্যারিয়ারে প্রতিপক্ষের সাথে তো বটেই সমানতালে যুদ্ধ করতে হয়েছে ইনজুরির সাথেও। তাই অনেক ফুটবল বিশ্লেষকের মতে, নিজের সামর্থ্যকে পুরোপুরি মেলে ধরতে পারেন নি আনহেল ডি মারিয়া।

২০০৮ সালে মাত্র ২০ বছর বয়সে আকাশি-নীল জার্সিতে অভিষেক হয় রোজারিওর এই বিস্ময় বালকের। ইনজুরির কারণে ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে তার দলে না থাকা, জার্মানির বিপক্ষে হারের বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ফুটবল পন্ডিতেরা। তবে ২০২১ কোপা আমেরিকায় তার একমাত্র গোলে ২৮ বছরের শিরোপা খরা কাটায় আর্জেন্টিনা। চতুর্থ বিশ্বকাপ খেলার অপেক্ষায় থাকা ডি মারিয়ার বয়স ৩৪। ক্যারিয়ারও এসে পড়েছে গোধূলী লগ্নে। তাই এই বিশ্বকাপ দিয়েই হয়তো সমাপ্ত হবে জাতীয় দলের সাথে পথচলা।

রবার্ট লেভানডোফস্কি

হাল সময়ে মাঠ দাপয়ে বেড়ান যে কজন স্ট্রাইকার তাদের একজন পোল্যান্ডের রবার্ট লেভানডোফস্কি। খাঁটি নাম্বার নাইন বলতে যা বোঝায় মাঠের খেলায় তিনি ঠিক তাই। নিখুঁত টেকনিক, পজিশন ও ফিনিশিং এর কারণে প্রতিপক্ষের ডিফেন্সে ভীতি ছড়ান নিয়মিত। জাতীয় দলে অভিষেক ২০০৮ সালে। জাতীয় দল ও ক্লাবের হয়ে করেছেন ছয়শোর বেশি গোল। যা তাকে বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকারের খেতাব এনে দিয়েছে। পোল্যান্ড জাতীয় দলের অধিনায়কও তিনি।

জাতীয় দলের জার্সি গায়ে করেছেন ৭৬ গোল। ইউরোপের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছেন তিনি। তার উপরে রয়েছেন হাঙ্গেরিয়ান কিংবদন্তি ফেরেঙ্ক পুসকাস ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। তবে ২০০৮ সাল থেকে পোল্যান্ড জাতীয় দলের হয়ে খেললেও লেভানডোফস্কির বিশ্বকাপ অভিষেক হয় ২০১৮ সালে। কারণ ২০০৬ থেকে টানা ৩টি বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি পোল্যান্ড। ফলে ফুটবল মহাযজ্ঞের ২২তম আসর হতে যাচ্ছে তার ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ। লেভার বয়স এখন ৩৪। তবে মাঠে এখনো তিনি দুরন্ত আগের মতই। ফিটনেস ধরে রাখতে পারলে হয়তো খেলবেন আরো একটি বিশ্বকাপ। তার ব্যতয় হলে, বিশ্বকাপের পরের আসরে তাকে নাও দেখা যেতে পারে।

চলবে......



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭