গত ২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে এসেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। প্রায় দুই মাস হয়ে গেলে বাংলাদেশে কূটনীতিক পাড়ায় সক্রিয় দেখা যায়নি তাকে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যখন উত্তাপ, বাংলাদেশ নিয়ে যখন পশ্চিমা দেশগুলো নানারকম কথাবার্তা বলছে সেই সময়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে পাশ্ববর্তী বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের দূতাবাসের নীরবতা অনেক প্রশ্নের ডালা বেঁধে ছিল। যেখানে এর আগে ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বাংলাদেশে আসার পরই অত্যন্ত সরব ছিলেন। সেখানে প্রণয় ভার্মার মৌনব্রত অবলম্বনে প্রশ্ন উঠে বাংলাদেশ নিয়ে ভারত নীরব কেন? তবে অবশেষে তাকেও সক্রিয় হতে দেখা গেলো। গত সোমবার বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী ও চেম্বারের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রণয় ভার্মা। কথা বলেছেন ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে। এর মধ্য দিয়ে ভারত বাংলাদেশের ব্যাপারে নীরবতা ভাঙ্গলো বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সভায় উপস্থিত হয়ে প্রণয় ভার্মা জানিয়েছে যে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য গত পাঁচ বছরে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে।
হাইকমিশনার বলেন, গত অর্থবছরে ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি প্রায় ২০০ কোটি মার্কিন ডলারে পৌঁছেছিল। এতে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের জন্য ভারত সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য হয়ে উঠেছে।
দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততার গুরুত্ব তুলে ধরে প্রণয় ভার্মা বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে আমাদের দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ককে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে।
হাইকমিশনার কমপ্রিহেনসিভ ইকনোমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্টের (সেপা) গুরুত্বের ওপর জোর দেন যা উভয়পক্ষই আলোচনায় সম্মত হয়েছিল।
তিনি সীমান্তে উন্নত যোগাযোগ এবং বাণিজ্য অবকাঠামোর গুরুত্বের ওপর জোর দেন যা ভারত ও বাংলাদেশ উভয়েরই দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করবে। এছাড়া অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের পূর্ণ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সহায়তা করবে।
এই প্রেক্ষাপটে তিনি অন্যান্য স্থলবন্দরে অবকাঠামোগত উন্নতির মাধ্যমে আইসিপি পেট্রাপোল-বেনাপোলের ওপর চাপ কমানো এবং বিধিনিষেধহীন বন্দরের সংখ্যা বৃদ্ধি করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। এতে স্থলবন্দরে বিনিয়োগে বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করবে।
হাইকমিশনার সড়ক, রেলপথ, অভ্যন্তরীণ নৌ-পথ ও কোস্টাল শিপিংয়ের মাধ্যমে এই উপ-অঞ্চলের বৃহত্তর সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন।