ইনসাইড আর্টিকেল

দেশ দেউলিয়া হলেও অপপ্রচারের জন্য খরচ কোটি টাকা


প্রকাশ: 17/11/2022


Thumbnail

বেশ কিছুদিন হল এই গান বাজানো হচ্ছে - রিজার্ভ শূন্য, সরকার সব টাকা পাচার করে দিয়েছে, দেশ দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে। তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে কোষাগার শূন্য হয়ে যাবে - গত পাঁচ বছরে এমন ঘোষণা দেয়া হয়েছে বহুবার।

এদিকে দেশ "দেউলিয়া" হলেও, অপপ্রচারের জন্য কোটি টাকা খরচ করছে, অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনে চলছে আরও জোর প্রচারণা। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে ঈদের চাঁদ দেখার খবরের মতো দেশ দেউলিয়া হওয়ার খবর অপপ্রচার করা হচ্ছে।

১০ ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে - এমন গুজব ছড়ানো হচ্ছে। প্রবাসীদের রেমিট্যান্স না পাঠাতে বা হুন্ডির মাধ্যমে পাঠানোর আহ্বান জানানো হচ্ছে।

প্রবাসীদের রেমিট্যান্স অবশ্যই দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু রেমিট্যান্সের টাকায় সরকার চলে, দেশের সকল উন্নয়ন রেমিট্যান্সের টাকায় হয় – এটা একটা মিথ ছাড়া আর কিছুই না। সকলে টাকা পাঠায় পরিবার-পরিজনের জন্য, সরকারের জন্য নয়। ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা এলে সরকার কমিশন বাবদ ক্ষুদ্র একটি অংশ পায়, যা হুন্ডির মাধ্যমে পাঠালে অন্যরা পেতো। বৈধ চ্যানেলে রেমিটেন্স এলে সরকারের পক্ষে আমদানি সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্যয় নির্বাহ করা ও আর্থিক সমন্বয় করা সহজতর হয়।

ইসলামী ব্যাংকের চট্টগ্রাম শাখার একটি নোটিশ সোনালী ব্যাংকের নামে ফেসবুকে প্রচার হচ্ছে। সেখানে বলা হয়েছে - ১ লাখ টাকার বেশি তুলতে হলে আগের দিন জানাতে হবে। ব্যাংকের ছোট শাখাগুলোতে এই নিয়ম চালু আছে অনেক আগে থেকেই। অথচ গুজব ছড়িয়ে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিতে প্ররোচনা দেয়া হচ্ছে।

দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, এসবে যে সরকারের কিছুই হবে না তা বোঝার জ্ঞানটুকু তাদের নেই।

সরকার চলে কর, আয়কর, ভ্যাট ও গ্যাস, বিদ্যুৎ সহ বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রমের বিনিময়ে অর্থ গ্রহণ করে। বাংলাদেশে করের পরিধি অনেক বেড়েছে এবং এটি ক্রমবর্ধমান। সরকার তার রাজস্ব দিয়েই চলতে সক্ষম।

রেমিট্যান্স পাঠানো কমিয়ে দিলে বা ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিলে অর্থনীতিতে যে প্রভাব পড়বে তার ভুক্তভোগী হবে শুধুই জনগণ, সরকার নয়। এর প্রভাবে ব্যবসা সীমিত হয়ে আসবে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাবে, ক্রয়ক্ষমতা কমে আসবে। সরকারের কিছুই যাবে আসবে‌ না। সরকার বিরোধীরা বড়জোর নতুন ইস্যু পাবে। আন্তর্জাতিকভাবে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হলে হয়তো বিনিয়োগ ও বাজার কমতে পারে। ফলাফল যা-ই হোক সুফল বা কুফলের পরিণতি ভোগ করতে হয় শুধু জনগণকেই।

আমরা ২০১০ সালের বিশ্বমন্দার মাঝেও অর্থনৈতিকভাবে অগ্রসর হয়েছি। অর্থনীতি সচল রেখে করোনার মতো মহামারির সঙ্কট কাটিয়ে উঠেছি। কিন্তু সম্প্রতি যে অপপ্রচার চলছে তা এক অর্থে জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। এ জাতীয় কার্যক্রম কোনোভাবেই বাক-স্বাধীনতা বা মুক্তবুদ্ধি চর্চার মধ্যে পড়ে না। এসব অপপ্রচারকারীদের গণশত্রু হিসেবে আখ্যা দিয়ে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭