ইনসাইড টক

‘যুক্তরাষ্ট্র বা বাহিরের শক্তি বাংলাদেশের গণতন্ত্র ঠিক নয় বরং সমস্যা তৈরি করে’


প্রকাশ: 17/11/2022


Thumbnail

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেছেন,  মনে হয় না ওই ধরণের কোনো প্রভাব পড়বে। আমেরিকার এই কথাবার্তায় তাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। আমাদেরই মিডিয়া, সুশীল সমাজ, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোই এই জায়গা তৈরি করে দেয়। সেজন্যই তাঁরা আসা-যাওয়া করেন, কথাবার্তা বলেন। যুক্তরাষ্ট্র বা বাহিরের শক্তি বাংলাদেশের গণতন্ত্র ঠিক করে দিবে এই জিনিসটি কখনোই বাংলাদেশের ইতিহাসে নেই, হয়নিও। বরং আরও সমস্যা তৈরি করে। এই সুযোগ তো আমরা করে দেই। রিপাবলিকানরা নিম্নকক্ষে গিয়েছে বলে কিছু হবে বলে মনে হয় না। এই সুযোগ যেহেতু আমরা করে দিয়েছি, আমাদের যারা স্টেকহোল্ডার তাঁরা যেহেতু সুযোগটা করে দিয়েছে সেই সুযোগের ব্যবহার তো তাঁরা করবেই। বাংলাদেশের যারা স্টেকহোল্ডার তাঁরা এই বিষয়ে সচেতন না হবে এবং এটা বুঝবে যে এতে আমেরিকারই লাভ বেশি, এতে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের খুব একটা লাভ হয়না। যেখানে সুশীল সমাজ সব সময় মনে করে যে আমেরিকাই বুঝি আমাদের গণতন্ত্র ঠিক করে। ওই মানসিকতা থাকলে তো এসব কখনোই কমবে না। এটা আগেও নির্বাচনের আগে হয়েছে, এবারও তাই হবে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনের ফলে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিশ্ব রাজনীতিতে এর প্রভাব, বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনের প্রভাবসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বাংলা ইনসাইডারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ এসব কথা বলেছেন। পাঠকদের জন্য অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলা ইনসাইডার এর নিজস্ব প্রতিবেদক মাহমুদুল হাসান তুহিন।

অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, আমেরিকার রাজনীতির এই পরিবর্তন ইউক্রেন যুদ্ধে প্রভাব ফেলবে কিনা সেটি বলা মুশকিল। যেই সরকারই থাকুক না কেন, যতদিন নির্বাচন না হয় ততদিন এই ধরণের একটি মারমুখী ফরেন পলিসি থাকে। কারণ, তাঁরা মনে করে যে ওই ধরণের পজিশন নিলে ভোটের রাজনীতিতে এক ধরণের প্রভাব পড়ে। যেহেতু নির্বাচন এখন শেষ হয়ে গেছে এবং পরের নির্বাচন আরও দুই বছর পরে, সেই হিসেবে নির্বাচনটা শেষ হওয়াতে তাঁর সাথে যুদ্ধের যে সম্পর্কটা এই কয়েক মাস ধরে ছিল সেটা আর থাকলো না। জো বাইডেনের কাছে একটি সুযোগ তৈরি হবে যে সে এখন সমঝোতায় যাবে নাকি এটাকে টানতে টানতে আরও দুই বছরে নিয়ে যাবে, সেটাই দেখার বিষয়। তবে একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে কোনো সন্দেহ নেই। রিপাবলিকানরা নিম্নকক্ষে জিতেছে বলে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে কোনো প্রভাব পড়বে বলে আমার মনে হয়না। কারণ, রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাট, দুটোই বিশেষ করে মিলিটারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্সের সাথে তাদের একটি বড় ধরণের সম্পর্ক। ফরেন পলিসিতে মোটামুটি একটা সম্মতি আছে তাদের। কিন্তু প্রভাব পড়তে পারে এই কারণে যে, যেহেতু নির্বাচন এখন আর নেই সেই হিসেবে জো বাইডেন হয়তো ডিপ্লোম্যাসি বেছে নিতে পারে। কারণ, অনেক দেশ যে সমালোচনা শুরু করেছে এবং যে বিশ্ব মন্দার কথা বলা হচ্ছে সেটা কাটিয়ে তোলার ব্যাপারে। আমেরিকা এখন সেই পদক্ষেপ নিবে কিনা সেটা দেখা দরকার।

তিনি আরও বলেন, মার্চ মাস থেকে যুদ্ধের একটি আভাস এমনকি পারমানবিক যুদ্ধ ইত্যাদি করতে করতে নির্বাচন পর্যন্ত আসলো। এখন নির্বাচনে যেহেতু নিম্নকক্ষ তাঁরা হারিয়ে ফেলে যদিও সিনেটে যেভাবে হারার কথা সেটা হয়নি। সব মিলিয়ে নির্বাচনটা তাদের পররাষ্ট্র নীতিতে এখন আর থাকবে না স্বাভাবিকভাবেই। তাতে যেটা হচ্ছে যে একটা সুযোগ তৈরি হবে জো বাইডেনের জন্য। নাহলে জো বাইডেন যদি মনে করে যে না, আমি এটাকে টানতে টানতে আরও দুই বছর পরে যে নির্বাচন হবে ততদিন টানবো সেই টেনে নিয়ে যাওয়াটা কিন্তু অত সহজ হবে না। কারণ, যেহেতু অর্থনৈতিক একটি মন্দার কথা সবাই বলে যাচ্ছে, ইউরোপেরও সেই অবস্থা। সব মিলিয়ে চেষ্টা করবে হয়তো সেটাকে সামাল দিয়ে একটা ভালো অবস্থায় নিয়ে যেতে দুই বছরে। এখন সেটা তাঁরা করবে কিনা! কারণ, এখানে মনে রাখতে হবে, যারা অস্ত্র বিক্রি করে তাদের সঙ্গে যুদ্ধের একটি সম্পর্ক। যেমন- আমেরিকার অস্ত্র বিক্রির সঙ্গে তাঁর অর্থনীতির একটি সম্পর্ক। কারণ, তাঁরা যদি মনে করে যে অস্ত্র বিক্রি করার মাধ্যমে অর্থনীতি জিইয়ে রাখতে পারবে তাহলে যুদ্ধ থামাবার কোনো লক্ষণ নেই। যেহেতু নির্বাচন বিষয়টি আপাতত দুই বছরের জন্য থাকলো না জো বাইডেন-যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে সমঝোতা বা ডিপ্লোম্যাসির মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করার।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭