এডিটর’স মাইন্ড

ক্ষমতা গ্রহণের প্রস্তুতি গ্রহণ করছে সুশীল সমাজ!


প্রকাশ: 19/11/2022


Thumbnail

বাংলাদেশের সুশীল সমাজ যখনই অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতার রদবদল হয় তখনই তারা ক্ষমতা গ্রহণ করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে ক্ষমতা গ্রহণের চেষ্টা করে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের সুশীল সমাজের তৎপরতা দৃশ্যমান। বিভিন্ন দূতাবাসগুলোতে প্রতিদিনের চা-চক্র ককটেল পার্টিতে সুশীল সমাজের উপস্থিতি লক্ষণীয়। শুধু তাই নয়, সুশীল সমাজ দেশের গণমাধ্যমে এমন সব তথ্য দিচ্ছে যে সমস্ত তথ্যের ভিত্তিতে মনে হতে পারে যে দেশের পরিস্থিতি বোধহয় খুবই খারাপ। পরিকল্পিতভাবে সুশীল নিয়ন্ত্রিত তিন-চারটি পত্রিকা সরকারকে ব্যর্থ হিসেবে প্রতিপন্ন করার আপ্রাণ চেষ্টা করছে। আর পর্দার আড়ালে সুশীল সমাজ ক্ষমতা গ্রহণের চেষ্টা করছে বলেও একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বিএনপি এখন ক্ষমতা গ্রহণে রাজি নয়। সুশীল সমাজ এখন বিএনপিকে পরামর্শ দিচ্ছে আগামী নির্বাচনে কোনো পরিস্থিতিতে তারা যেন অংশগ্রহণ না করে। সুশীলরা খুব ভালো মতই জানে যে, সরকার কোনো অবস্থাতেই নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নেবে না। আর এর ফলে দলীয় সরকারের অধীনে বিএনপি এবং তার অনুগত সংগঠনগুলো যদি নির্বাচন করতে অস্বীকৃতি জানায় সেক্ষেত্রে সরকার একটি বড় ধরনের রাজনৈতিক সংকটে পড়বে এবং এই সংকটে এবার আন্তর্জাতিক মহল ২০১৪ সালের মত নির্বাচন করতে দেবে না বলেই সুশীল সমাজের অধিকাংশ নেতৃবৃন্দ মনে করছেন। ফলে দেশে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা হবে। এই অনিশ্চয়তাই সুশীল সমাজের ক্ষমতায় আরোহণের পথ প্রশস্ত করে দেবে বলে কেউ কেউ মনে করছেন এবং এরকম একটি পরিকল্পনা নিয়েই সুশীল সমাজ কাজ করছে। সুশীল সমাজের ক্ষমতায় আসার জন্য পাঁচটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করছে।

প্রথমত, বিরোধী দলকে ক্ষেপিয়ে তুলেছে। তারা যেন কোনো অবস্থাতেই আন্দোলন ছেড়ে চলে না যায় এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সেই জন্য সরকারকেও উত্ত্যক্ত করার চেষ্টা করছে।

দ্বিতীয়ত, সুশীল সমাজ দেশের মূল ধারার কয়েকটি গণমাধ্যমে লাগাতারভাবে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এমন সব তথ্য-উপাত্ত দিয়ে বিভিন্ন প্রতিবেদন সাজানো হচ্ছে যাতে সাধারণ মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয় যে সরকার অর্থনৈতিক সংকট সামাল দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।

তৃতীয়ত, কূটনৈতিক মহলের কাছে সুশীল সমাজ সরকারের বিরুদ্ধে নানা রকম অভিযোগ উত্থাপন করছে। অর্থনৈতিক সংকটের পাশাপাশি মানবাধিকার, সুশাসনের অভাব, দুর্নীতি ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সরকার সম্পর্কে একটি নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টির চেষ্টা করছে।

চতুর্থত, সুশীল সমাজ চাইছে যে বাংলাদেশের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একটি বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা বা স্যাংশন আসুক। বিশেষ করে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা সশস্ত্রবাহিনী যারা দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক তাদের বিরুদ্ধে যদি কোনো নিষেধাজ্ঞা আনা যায় তাহলে সরকারের অবস্থান নড়বড়ে হয়ে পড়বে বলেই তারা মনে করছে।

সর্বশেষ, সুশীল সমাজ ব্যবসায়ী মহলকে একীভূত করার চেষ্টা করছে সরকারের বিরুদ্ধে। আর তাই ব্যবসায়ী নিয়ন্ত্রিত সংগঠনগুলো এখন সরকারের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ থেকে নিজেদেরকে কিছুটা দূরে সরিয়ে রেখেছে।

এই পাঁচ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সুশীল সমাজ মনে করছে যে এমন একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে যাতে সরকার নির্বাচন করার মতো অবস্থায় থাকবে না এবং নির্বাচন না হলেই সুশীলদের ক্ষমতা গ্রহণের পথ প্রশস্ত হবে। বাংলা ইনসাইডার অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে সুশীল সমাজের একটি থিংকট্যাংক ক্ষমতায় আসার জন্য নিবিড় ভাবে কাজ করছে। সার্বক্ষণিকভাবে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মহলের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখছে। এদের মধ্যে রয়েছেন- বদিউল আলম মজুমদার, দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান, ড. আসিফ নজরুলসহ আরও বেশ কয়েকজন সুশীল বুদ্ধিজীবী। এদের ধারণা যে, খুব শীঘ্রই এমন একটি পরিস্থিতি হবে যেখানে সরকার শেষ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছেড়ে দিতে বাধ্য হবে। কিন্তু আরেকটি এক-এগারোর আনার মত সক্ষমতা বা সে রকম পরিস্থিতি তৈরি মত বাস্তবতা বাংলাদেশে আছে কিনা, সেটি হলো এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭