ইনসাইড বাংলাদেশ

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার বেশিরভাগ শিকার কিশোর ও তরুণ


প্রকাশ: 21/11/2022


Thumbnail

বর্তমানে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা যেন নিত্যদিনের খবরে পরিণত হয়েছে। দেশে কয়েক বছর ধরেই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার সংখ্যা ও মৃত্যু দুটোই বাড়ছে। এক্ষেত্রে কিশোর-তরুণদের মৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটছে।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাসে দেশে ২ হাজার ৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২ হাজার ৯৭ জন। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দুর্ঘটনা ২১ শতাংশ এবং প্রাণহানি ১৯ শতাংশ বেড়েছে।

দুর্ঘটনা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বেশ কিছু বিষয় চিহ্নিত করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। বেপরোয়াভাবে কিশোর-যুবকদের মোটরসাইকেল চালানোর ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা, ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারির ক্ষেত্রে শিথিলতা এবং সড়ক-মহাসড়কে বিভাজক না থাকাকে দুর্ঘটনা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে সংগঠনটি।

একটি অনুসন্ধানে দেখা যায়, ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতাল) বিভিন্ন দুর্ঘটনায় আহত হওয়া যত মানুষ সেবা নেন, তাঁদের ৬৫ শতাংশই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার। গত মে মাসের প্রথম সাত দিনে বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনায় আহত ১ হাজার ৪৭৪ জন পঙ্গু হাসপাতালে সেবা নিয়েছিলেন। এর মধ্যে ৬৫ শতাংশই ছিলেন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় কেউ হাত বা পা ভাঙলে সুস্থ হতে ৩ থেকে ৯ মাস সময় লাগছে।

দেশের ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন দুর্ঘটনা প্রতিবেদন তৈরি করে। রোববার (২০ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিবেদনে তারা বলেছে, চলতি বছর মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে সাড়ে ১৬ শতাংশের বয়স ১৩ থেকে ১৭ বছর। আর ৭৩ শতাংশের বয়স ১৮ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় এ বছর এখন পর্যন্ত ৭৬৪ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। আর মোটরসাইকেলের ধাক্কায় ৯২ জন পথচারী নিহত হয়েছেন।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে দেশে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা যান ৯৪৫ জন। ২০২০ সালে তা বেড়ে হয় ১ হাজার ৪৬৩ জন। আর ২০২১ সালে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মারা যান ২ হাজার ২১৪ জন। চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসেই মৃত্যুর সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

মহাসড়ক, আঞ্চলিক সড়ক ও গ্রামীণ সড়কে মোটরসাইকেল চালানোর সময় অনেকে ক্ষেত্রেই চালকেরা নিয়ম মানছেন না। আবার ঢাকার বাইারে চালক ও আরোহীদের মধ্যে হেলমেট পরার প্রবণতা কম। এক মোটরসাইকেলে দুজনের বেশি না ওঠার নিয়মটিও ঠিকমতো মানা হয় না। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে অনিবন্ধিত মোটরসাইকেল চলে। অনেকেরই মোটরসাইকেল চালানোর কোনো প্রশিক্ষণ থাকে না।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, এ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাসে দেশে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৬২৯টি। মোটরসাইকেলের পেছনে অন্য যানবাহনের ধাক্কা ও চাপা দেওয়ার ঘটনা ৯৫৮টি, অন্য যানবাহনের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে ৩৭৪টি। আর ৮৩৭টি দুর্ঘটনার জন্য মোটরসাইকেলচালক নিজেই এককভাবে দায়ী।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭