চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় গুঁড়িয়ে দেয়া ইটভাটায় ফের কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে অবৈধ ইটভাটার মালিকরা।
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন ছাড়পত্র ছাড়াই আবারও শুরু করেছে ইটভাটার কার্যক্রম। গত দুই মৌসুমে লোহাগাড়ায় প্রায় ৩ ডজন অবৈধ ইটভাটা ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন। আগামী ৭ দিনের মধ্যে অবৈধ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেবার জন্য নির্দেশনা জারি করেছে হাইকোর্ট। তবে উচ্চ আদালতের এসব নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে এসব অবৈধ ইটভাটার মালিকরা।
সরেজমিন পরিদর্শনে জানা যায়, লোহাগাড়ায় অর্ধশতাধিক ইটভাটা রয়েছে। যেগুলোর অধিকাংশরই নেই বৈধ কাগজপত্র। তারপরও এসব ইটভাটার মালিকরা আইনের তোয়াক্কা না করেই শুরু করে দিয়েছে কার্যক্রম। প্রস্তুত রেখেছে ইট তৈরির মাটির টপ সয়েল ও পোড়ানো জন্য জ্বালানি কাঠের স্তূপ। তবে ইটভাটা কর্তৃপক্ষ কোন প্রকার কাগজপত্র দেখাতে নারাজ। চরম্বা, পুটিবিলা ও চুনতি এলকায় গড়ে ওঠা এসব অবৈধ ইটভাটাসমূহ পাহাড় ও টিলা কেটে মাটি মজুদ শুরু করেছে। ইট পোড়ানোর জন্য জ্বালানি কাঠও মজুদ রেখেছে। তবে মালিকপক্ষ এ প্রতিবেদককে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য নিষেধ করেন বারবার।
এদিকে লোহাগাড়ায় এসব আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ভাটাসমূহে কার্যক্রম শুরু করায় সচেতন মহলের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সচেতন মহল দাবী তুলেছেন অবৈধ ইটভাটাসমূহ গুঁড়িয়ে দিয়ে অবৈধ ভাটার মালিকদের আইনের আওতায় আনা হলে অবৈধ কোন ইটভাটা লোহাগাড়ায় আর থাকবে না।
অপরদিকে, ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের কয়লা ও জ্বালানি কাঠ। যার ফলে প্রচুর ছাই ও ধোঁয়া তৈরি হচ্ছে। ফলে বায়ুমণ্ডলে দুষিত উপাদান তৈরি হচ্ছে। স্কুল-কলেজ ও মাদরাসার পাশে অবৈধ ইটভাটাসমূহ দেদারছে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রশাসনের লোকদের ম্যানেজ করে অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন সচেতন মহল।
তবে লোহাগাড়া ব্রিকফিল্ড মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সরওয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, লোহাগাড়ায় যে কটি ইটভাটা রয়েছে তাদের মধ্যে বেশ কটি পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পেয়েছে। বাকি ইটভাটার মালিকরাও পরিবেশের ছাড়পত্র পাবার জন্য দৌড়ঝাঁপে রয়েছেন। এছাড়া যেসব ইটভাটায় কাজ শুরু করেছে অনেকে হাইকোর্টে রিট করেছেন।
চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আফজালুর রহমান বলেন, এই মৌসুমে অবৈধ কোন ইটভাটায় কার্যক্রম চালাতে দেওয়া হবে না। যেসব ইটভাটায় বৈধ কোন কাগজপত্র থাকবে না, সেসব ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।
লোহাগাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, পরিবেশের ক্ষতি হবে এমন ইটভাটার কার্যক্রম লোহাগাড়ায় কোন মতে চলতে দেওয়া হবে না। তবে খুব শীঘ্রই অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।