ইনসাইড বাংলাদেশ

ইটের ভাটায় কাঠ পোড়ানোর মহোৎসব


প্রকাশ: 22/11/2022


Thumbnail

পটুয়াখালীতে নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে চলছে একাধিক ইটভাটা। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমোদন ছারাই চলতি মৌসুমে এসকল ইটভাটায় কাঠ পোড়ানোর প্রস্তুতি নিয়েছেন মালিক পক্ষ। উচ্চ আদালত, জেলা প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কয়লা পোড়ানোর নির্দেশনা দেয়া হলেও অধিকাংশ ভাটায় কাঠের বদলে রয়েছে কাঠের স্তুপ। বেশিরভাগ ইটভাটার মালিকরা প্রভাবশালী হওয়াতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হিমশিম খাচ্ছেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা গুলো। আবার জেলা প্রশাসনের এলআরফান্ডে আর্থিক দন্ড দিয়েও নির্দ্বিধায় নিয়ম-নীতি ভঙ্গ করছেন মালিকরা। সরেজমিনে কাঠ পোড়ানো প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে জেলার প্রায় অর্ধশত ভাটায়। যদিও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামাল হোসেন বাংলা ইনসাইডার কে  বলেন-চলতি মৌসুমে পটুয়াখালীর কোনো ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো হবেনা। জেলা প্রশাসন থেকে মালিকদের এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্র বলছে-জেলায় বৈধ-অবৈধ অন্তত ৮০টি ইটভাটা রয়েছে। এরমধ্য ২৩ টি ইটভাটা অনুমোদিত এবং ১৬টি অনুমোদনের অপেক্ষায়। পটুয়াখালী পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কাজী সাইফুদ্দিন বলেন-জেলায় ৭২টি বৈধ-অবৈধ ইটভাটার মধ্যে ৪৬টি ইটভাটাকে ছাড়পত্র দিয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তর। এদিকে নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে-ছোট-বড় এবং বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে অন্তত শতাধিক ইটভাটা রয়েছে। এসকল ইটভাটা নির্মাণের প্রথম ধাপে মানা হয় না নূণ্যতম নীতিমালা। কৃষি জমি বিনষ্ট ও নিরীহদের জমি দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে ইটভাটা গুলো। আবার যত্রতত্র বসত-বাড়ী এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশেপাশে রয়েছে ইটভাটার রমরমা বাণিজ্য। ইটভাটার অধিকাংশ মালিক সরকার দলীয় এবং প্রভাবশালী থাকায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা গুলো ব্যবস্থা নিতে গড়িমসি করেন। ভুক্তভোগীরা বলেন-২০১৩ সালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের “ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইনের” সিকিভাগও মানছে না ভাটার মালিকরা। প্রতিবছর জেলা প্রশাসনের অভিযানে অবৈধ ভাটার মালিকরা আর্থিক দন্ড দিচ্ছেন। অভিযুক্ত ও নিষিদ্ধ ইটভাটার নাম পরিবর্তন করে প্রতিবছর চালু করা হচ্ছে। 

অভিযোগ ও সরেজমিনের দেখা গেছে-লাউকাঠি ও লোহালিয়া নদীর তীরে গড়ে ওঠা একাধিক ইটভাটায় কোনো কয়লার নামগন্ধ নেই। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ট্রলার যোগে কাঠ এনে স্তুপ করছেন ভাটা গুলোতে। ওই এলাকায় এলটিএন ব্রীক্স, বাবু ব্রিকস, সুচনা বিকস, বিএন ব্রিকস, রুপালী বিকস, এফখান ব্রিকস, বুশরা ব্রিকস গুলোতে রয়েছে কাঠের স্তুপ। ইতোমধ্যে এলটিএন ও সুচনা ইট ভাটা কাঠ দিয়ে পোড়ানো শুরু করেছে। এছাড়াও পাকার মাথায় মুন ব্রিকস, ইটবাড়িয়া ইউনিয়নের রয়েছে রুশদা ব্রিকসসহ বেশ কয়েকটি অবৈধ ইটভাটা রয়েছে। 

ভুক্তভোগীরা বলেন-বাউফল উপজেলার বগাবন্দরের ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন লোকালয়ের স্থাপন করা হাওলাদার ব্রিকসের নাম পরিবর্তন করে চলতি মৌসুমে আবিদ আমীন নামে চালু করেছেন এবং তারই পাশে এমবিসি নামে আরো একটি অবৈধ ইটভাটায় কাঠ পুড়ছেন। আদাবাড়িয়া মহাশ্রাদ্ধি গ্রামে তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রর পাশে রয়েছে এইচ.বি.সি ও এমবিবি ব্রিকস নামে আরো দুটি অবৈধ ভাটা রয়েছে। দশমিনা সদর ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামে অস্থায়ীভাবে ভাইভাই নামে একটি ইটভাটা প্রতিবছর ইটমৌসুমে অবৈধ বাণিজ্য করছেন। দুমকী উপজেলায় অবৈধ জয়েন্ট ব্রিকস এ বছর নাম পরিবর্তন করে দুমকী ব্রিকস নামে চালু করেছেন। 

এ প্রসঙ্গে এলটিএন ব্রিকস‘র মালিক সফিকুর রহমান চানসহ একাধিক ইটভাটার মালিক বলেন কোনো মালিক স্বেচ্ছায় কাঠ ব্যবহার করছেনা। এককভাবে কাঠ নয় কয়লাও  ব্যবহার হচ্ছে। তাছারা বর্তমান প্রেক্ষাপটে কয়লা এবং ডলারে যথেষ্ট ঘাটিত দেখা দিয়েছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭