এডিটর’স মাইন্ড

আরও শতাধিক সরকারি কর্মকর্তা বাধ্যতামূলক অবসরে যাচ্ছেন


প্রকাশ: 24/11/2022


Thumbnail

তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মকবুল হোসেনের পর এবার বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হলো উপসচিব রেজাউল করিমকে। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ভাবে ধর্ষণের অভিযোগ ছিল এবং বিভাগীয় তদন্তের পর তাকে বাধ্যতামূলক অবসরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকার এখন প্রশাসনের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাঁচটি অভিযোগের যেকোনো একটি প্রমাণিত হলেই সেই সরকারি কর্মকর্তাকে চাকরিতে রাখা হবে না বলে সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো মনে করছে। তবে সবচেয়ে বেশি রাজনৈতিক বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। নবম-দশম ব্যাচে যে সমস্ত সরকারি কর্মকর্তারা বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে সুবিধাভোগী ছিল এবং বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত তাদের তালিকা করা হয়েছে। এরকম ৫৬ জন সরকারি কর্মকর্তাকে পাওয়া গেছে যাদের চাকরির মেয়াদ ২৫ বছর উত্তীর্ণ হয়েছে এবং যারা বিএনপি এবং জামায়াতের পক্ষে কাজ করতেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ কারণে তাদের পদোন্নতি বঞ্চিত হয়েছে। নবম ব্যাচের অধিকাংশ কর্মকর্তাই সচিব অথবা অতিরিক্ত সচিব হয়েছেন। এখন নবম ব্যাচের অনেকেই অবসরে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ আছেন যারা এখনও উপসচিব বা যুগ্ম-সচিবের পর্যায়ে পড়ে আছেন। এদের পদোন্নতি হয়নি একাধিক গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে। জানা গেছে যে, এই সমস্ত কর্মকর্তারা বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এদের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের এখনো যোগাযোগ রয়েছে। এই ৫৬ জনকে পর্যায়ক্রমে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট দুর্নীতির অভিযোগ আছে তাদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং তাদেরকেও বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর প্রক্রিয়া খুব শিগগিরই শুরু হবে বলে জানা গেছে।

ইতিমধ্যে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য আয়-ব্যয়ের হিসাব দেওয়া বা তাদের সম্পদের বিবরণী দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং এ সংক্রান্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী শৃঙ্খলা আইন অনুযায়ী যে সমস্ত সরকারি কর্মকর্তারা তাদের সম্পদের হিসাব বিবরণী দাখিল করবেন না তাদের বিরুদ্ধে পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা হবে। যাদের আর্থিক অনিয়ম পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছে। অতীতে দেখা গেছে যে, যারা প্রশাসনে শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ড করতো, অসদাচরণ করতো বা দুর্নীতি করতো তাদের বিরুদ্ধে পদাবনতি বা বেতন কমিয়ে দেওয়ার মতো লঘু শাস্তি গুলো দেওয়া হত। কিন্তু সেই অবস্থান থেকে সরে আসছে সরকার। নির্বাচনের আগে প্রশাসনে একটি ক্লিন ইমেজ দাঁড় করাতে চায় আওয়ামী লীগ সরকার। আর এ কারণেই দুর্নীতি, অনিয়ম এবং সরকারের বিরুদ্ধে গোপন তৎপরতা যারা চালাবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরকমভাবে ১০০ জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে যাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে বাধ্যতামূলক অবসরের ধারাটি প্রয়োগ করা হবে।

সরকারের একাধিক সূত্র বলছে, ইতিমধ্যে পুলিশ প্রশাসনে পর্যায়ক্রমে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া শুরু হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় এখন পর্যন্ত ৭ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে অবসর দেওয়া হয়েছে। সামনে আরও ৪০ জনের অবসরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে। পুলিশ প্রশাসন এবং সিভিল প্রশাসনে যারা অযোগ্য এবং সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করে তাদেরকে চাকরি থেকে সরিয়ে দিয়ে সরকার বিরোধীদলের যে ষড়যন্ত্র সেটি মোকাবেলায় একটি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে বলে বিভিন্ন মহল মনে করছে। আর নির্বাচনের আগে প্রশাসনের ভেতর থেকে যেন কোনো ক্ষতি সাধিত না হয়, সে ব্যাপারটি জন্যই এই শুদ্ধি অভিযান বলে সরকারের সূত্রগুলো বলছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭