ইনসাইড পলিটিক্স

কাউন্সিলেই আসল চমক দেখাবেন শেখ হাসিনা


প্রকাশ: 25/11/2022


Thumbnail

আগামী ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই কাউন্সিলের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নতুন নেতৃত্ব দেবে, নাকি বর্তমান নেতৃত্বকেই ঈষৎ পরিবর্তন করে রাখবে সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। কাউন্সিলের আগে আওয়ামী লীগ বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ের সম্মেলন অনুষ্ঠান করছে। এই সম্মেলন অনুষ্ঠানগুলোতে মোটামুটি পুরনোদের প্রতি আস্থার একটি লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। অর্থাৎ যারা পুরনো নেতৃত্বে ছিলেন তাদেরকেই নেতৃত্বে রাখার একটি প্রবণতা দৃশ্যমান হচ্ছে। এর ফলে অনেকের মধ্যে ধারণা হয়েছে, আগামী কাউন্সিলে আওয়ামী লীগ হয়তো বড় ধরনের কোনো নেতৃত্বের পরিবর্তন আনবে না। বিশেষ করে নির্বাচনের মাত্র এক বছর আগে নেতৃত্বে পরিবর্তন আনার ঝুঁকি আওয়ামী লীগ নিবে না। তবে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, বিভিন্ন জেলায় পুরনো নেতৃত্ব রাখা মানে এই নয় যে কাউন্সিলেও পুরনো নেতৃত্বে রাখা হবে। বরং বিভিন্ন জেলায় পুরনো নেতৃত্ব রাখার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলকে আরও চমকপ্রদ করে তোলা হচ্ছে।

যারা শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ইতিহাস পর্যালোচনা করতে পারেন, শেখ হাসিনার রাজনীতি নিয়ে গবেষণা করেন তারা মনে করেন যে, এটাই শেখ হাসিনার ব্যতিক্রম। তিনি যেহেতু জেলা পর্যায়ে, স্থানীয় পর্যায় গুলোতে কাউন্সিলে বড় ধরনের পরিবর্তন আনছেন না, আসল পরিবর্তনটি তিনি তুলে রেখেছেন কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের জন্য এবং সেই কাউন্সিলে তিনি বড় ধরনের চমক তৈরি করবেন। প্রতিটি কাউন্সিলে শেখ হাসিনা কিছু না কিছু চমক দেখান এবং এই চমকগুলো নিয়ে রাজনীতিতে ব্যাপক রকম আলোচনা হয়। যেমন- ২০০৯ সালের কাউন্সিলের মাধ্যমে শেখ হাসিনা প্রবীণ নেতাদেরকে প্রেসিডিয়াম থেকে হটিয়ে উপদেষ্টার মত অলঙ্কারিক জায়গায় স্থানান্তর করেন। এটি ছিল ওই কাউন্সিলের অন্যতম চমক। এর পরবর্তী কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ওবায়দুল কাদেরকে মনোনীত করে তিনি আরেকটি চমক দেখান এবং সেখানে তিনি সরকার এবং দলকে আলাদা করার একটি সুস্পষ্ট বার্তা দিয়ে দেন। আবার বিগত কাউন্সিলেও শেখ হাসিনা জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমানের মত অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতাদেরকে প্রেসিডিয়ামে নিয়ে এসে তারুণ্যকে মূল নেতৃত্বে নিয়ে আসার একটি সঙ্কেত দেন। ওই কাউন্সিলে শেখ হাসিনা দল এবং সরকারকে আলাদা করার বার্তা দিয়েছিলেন। বিশেষ করে বাহাউদ্দিন নাছিম, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেনের মতো মাঠের সদা তৎপরদেরকে নেতৃত্বের মূল কেন্দ্রে নিয়ে এসে শেখ হাসিনা সংগঠনকে শক্তিশালী করার একটি ইতিবাচক বার্তা দিয়েছিলেন।

আর এবার কাউন্সিলে শেখ হাসিনা কি চমক দেখাবেন তা নিয়ে বিভিন্ন রকম আলোচনা চলছে। তবে আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, শেখ হাসিনা কাউন্সিলের ব্যাপারে একেবারেই মুখ খুলছেন না, কারো সাথেই কোনো কথা বলছেন না। এখন পর্যন্ত তিনি কাউকে কোনো বার্তা দেননি বা কে সাধারণ সম্পাদক হতে পারে বা কি ধরনের পরিবর্তন হতে পারে সে সম্পর্কে কোনো ধারণাও দেননি। যারা শেখ হাসিনাকে চিনেন তারা জানেন যে, এটি হলো একটি চমক দেওয়ার পূর্বে শেখ হাসিনার অবস্থান। শেখ হাসিনা যদি কাউন্সিলে বর্তমান নেতৃত্বকে বহাল রাখতেন তাহলে হয়তো তিনি এ নিয়ে কথাবার্তা বলতেন। কিন্তু শেখ হাসিনার এই নীরবতাই কাউন্সিলে একটি বড় চমকের অপেক্ষা করছে। সেই চমকটি কি হবে? সাধারণ সম্পাদকের পরিবর্তন, প্রেসিডিয়ামে বড় ধরনের পরিবর্তন নাকি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আমূল পরিবর্তন? ২৪ ডিসেম্বরই তার উত্তর পাওয়া যাবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭