ইনসাইড পলিটিক্স

আওয়ামী লীগে সোহেল তাজের দরজা বন্ধ হয়ে গেল


প্রকাশ: 27/11/2022


Thumbnail

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হয়েছেন জাতীয় চার নেতার অন্যতম বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদের মেয়ে সিমিন হোসেন রিমি এমপি। গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর শূন্য হওয়া প্রেসিডিয়াম সদস্য পদে রিমিকে নিয়োগ দেওয়া হলো। কাউন্সিলের মাত্র এক মাস আগে রিমিকে নিয়োগ দেওয়ার কারণ কি, এ নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে নানামুখী আলোচনা চলছে। অনেকেই মনে করছেন যে, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যপদ শূন্য রাখা উচিত নয়। এই জন্যই সিমিন হোসেন রিমিকে প্রেসিডিয়ামের সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে আওয়ামী লীগের জাতীয় চার নেতার দুই সন্তান প্রেসিডিয়ামে অন্তর্ভুক্ত হলেন। এর আগে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনকে প্রেসিডিয়ামে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিলো। এবার রিমিকে অন্তর্ভুক্ত করা হলো। আওয়ামী লীগ সভাপতি সবসময় জাতীয় চার নেতার প্রতি আলাদা সম্মান দেখান এবং জাতীয় চার নেতার উত্তরসূরিদেরকে বিশেষ মর্যাদা দান করেন, এর মধ্য দিয়ে এটি প্রমাণিত হলো।

তবে আওয়ামী লীগের কিছু কিছু নেতা বলছেন যে, বিষয়টা এত সাদামাটা নয়। কাউন্সিলের এক মাস আগে রিমিকে প্রেসিডিয়ামের সদস্য অন্তর্ভুক্তির পেছনে অন্যকিছু কারণও রয়েছে। এর অন্যতম কারণ হলো সোহেল তাজ। সাম্প্রতিক সময়ে সোহেল তাজ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লাইমলাইটে আসার চেষ্টা করছেন। বিভিন্ন মাধ্যমে তিনি বলতে চাচ্ছেন যে, তিনি আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হতে চান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক করার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে দাবি ওঠছে। সুশীল সমাজের মধ্যে থেকে কেউ বলতে চাইছে যে, সোহেল তাজ তাজউদ্দীন আহমেদের সন্তান, তিনি কেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হতে পারবেন না ইত্যাদি। এরকম পরিস্থিতিতে সিমিন হোসেন রিমিকে প্রেসিডিয়ামে অন্তর্ভুক্ত করে সোহেল তাজের জন্য আওয়ামী লীগের দরজা কি চিরতরে বন্ধ করে দেয়া হলো, অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক এরকম অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

সোহেল তাজ আওয়ামী লীগ সভাপতির অত্যন্ত স্নেহভাজন। আওয়ামী লীগ সভাপতি তাকে পুত্রস্নেহে সব সময় দেখেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তিনি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তিনি সম্ভাবনা জাগিয়েও হুট করে পদত্যাগ করেন। শুধু মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ নয়, এরপর তিনি সংসদ সদস্যের পদ থেকেও পদত্যাগ করেন এবং আমেরিকায় চলে যান। এসময় তিনি সরকারের জন্য একটা বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন। তার শূন্য হওয়া শুনেই সিমিন হোসেন রিমিকে মনোনয়ন দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। এরপর সোহেল তাজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাঝে মাঝে আসেন, মাঝে মাঝে আওয়ামী লীগের সমালোচনা করেন এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করে বক্তব্য রাখেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি এই সমস্ত বিষয় গুলো সহ্য করেছেন কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সোহেল তাজের আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসার যে অভিপ্রায় জেগেছিল তা আওয়ামী লীগের মধ্যে একটা ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি করতে পারে। এমনকি জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার একটা সূক্ষ্ম প্রয়াসও লক্ষ্য করা গিয়েছিল। এই সমস্ত দ্বিধা-দ্বন্দ্ব এবং অপপ্রচারগুলো বন্ধের জন্য তাজউদ্দীনকন্যা রিমিকে প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসবে অন্তর্ভুক্ত করা হলো। সিমিন হোসেন রিমি তাজউদ্দীন আহমেদের কন্যা। তবে তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতি অবিচল এবং শেখ হাসিনার প্রতি অবিচল। তিনি দলীয় আদর্শ চিন্তার বাইরে কথাবার্তা একদমই বলেন না। এ কারণেই রিমিকে প্রেসিডিয়ামের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এখন অনেকেই ধারণা করেন যে, সোহেল তাজের বলা একটু কম গুরুত্ব পাবে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭