ইনসাইড গ্রাউন্ড

প্রতিবাদের মঞ্চ কাতার বিশ্বকাপ


প্রকাশ: 27/11/2022


Thumbnail

বিশ্বকাপ ফুটবল দুনিয়ার সর্ববৃহৎ ক্রীড়াযজ্ঞ। যেখানে চোখ থাকে সারা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের। আর তাই নিপীড়ন-নির্যাতিত কিংবা মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ নান বিষয়ে বিশ্বকাপ হয়ে ওঠে প্রতিবাদের মঞ্চ। কাতারে অনুষ্ঠিত হওয়া এই বিশ্বকাপেও ব্যতিক্রম ঘটেনি। নানা ইস্যুতে এবারের আয়োজক দেশ এমনিতেই সমালোচিত হয়েছে। বিশ্বকাপের আগে থেকেই কাতারে দুর্নীতি, অভিবাসী শ্রমিকের মৃত্যু, শ্রমিক উচ্ছেদসহ নানা ঘটনায় স্বাগতিকদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে বিশ্বকাপে অংশ নেয়া অনেকগুলো দলই। সময় গড়ানোর সাথে সাথে আরো নানা বিষয়ে প্রতিবাদের ছবি ফুটে উঠছে বিশ্বকাপের ম্যাচগুলোয়। মাঠের ফুটবলার থেকে গ্যালারির দর্শক-সকলেই সামিল হচ্ছেন নানা প্রতিবাদে।

দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনের উপর আগ্রাসন চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। বিশ্বকাপকে তাই প্রতিবাদের মঞ্চ হিসেবে বেছে নিয়েছেন নির্যাতিত ফিলিস্তিনিরা। পতাকা, ব্যানার ও পতাকার রঙে সজ্জিত পোশাক পরে দোহার স্টেডিয়াম এলাকায় সমবেত হচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। বিশ্বকে জানাতে চান তাদের দুর্দশার কথা। আর তাদের এই আন্দোলনকে অনন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে বিশ্বকাপে ‘ডি’ গ্রুপের দল তিউনিসিয়া। ডেনমার্কের বিপক্ষে ম্যাচের সময় গ্যালারিতে ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ লেখা ব্যানার ওড়ান তিউনিসিয়ার সমর্থকেরা। যার পুনরাবৃত্তি ঘটে আল জানোব স্টেডিয়ামে তিউনিসিয়া-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচেও।

এর আগে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে জাতীয় সঙ্গীত গান নি ইরানের ফুটবলাররা। ইরানে চলমান সহিংসতায় উত্তাল হয়ে উঠেছে দেশটি। হিজাব-বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে পুরো দেশে। আন্দোলনকারিদের উপর নানা দমন-পীড়ন চালাচ্ছে সরকারি বাহিনী। তাই ম্যাচ শুরুর আগে জাতীয় সঙ্গীতের সময় নিরব থেকে আন্দোলনের সাথে একাত্নতা জানায় তাদের ফুটবল দলট।

আর্মব্যান্ড ইস্যুতে ফিফার সাথে জলঘোলা হয় ইউরোপের বেশ কয়েকটি বড় দলের। এমনকি ফিফার জরিমানার ঘোষণার পরও ফিফা নির্ধারিত আর্মব্যান্ড না পরে 'ওয়ান লাভ' আর্মব্যান্ড পরে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলো ইংল্যান্ড-জার্মানি-ডেনমার্কসহ অনেকেই। পরে ফিফা জানায়, নিয়ম না মানলে ম্যাচ শুরুর সাথে সাথে হলুদ কার্ড দেখবেন সংশ্লিষ্ট দলের অধিনায়ক। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়ে নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হয় দলগুলোকে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে অফিশিয়াল ফটোশুট্যের সময় মুখে হাত দিয়ে প্রতিবাদ করে জার্মান ফুটবল দল।

১৯৮৬ বিশ্বকাপে হাত দিয়ে গোল করেছিলেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি দিয়েগো ম্যারাডোনা। যা‘হ্যান্ড অব গড’ নামে পরিচিত। পশ্চিমা বিশ্ব বা মিডিয়া এ ঘটনায় তার মুন্ডুপাত করলেও, এ নিয়ে কোন আফসোস বা অনুশোচনা ছিলো না ম্যারাডোনার। ফকল্যান্ড যুদ্ধ বাঁধানো সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে এই গোলকে প্রতিবাদ হিসেবে দেখেছিলেন তিনি।

আর এভাবেই নিপীড়িত-শোষিতদের অধিকার আদায়ের পথে বিশ্বকাপ হয়ে উঠে প্রতিবাদের উন্মুক্ত মঞ্চ। যেখানে ফুটবল ও দর্শন মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭