ক্লাব ইনসাইড

সেই সহকারী প্রক্টরের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের তদন্তের দাবি


প্রকাশ: 01/12/2022


Thumbnail

জাবিতে সহকারী প্রক্টরের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ছাত্রীর সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন এবং তাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগের তদন্ত দাবি করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষকবৃন্দ।

বৃহস্পতিবার (১লা ডিসেম্বর) বিকেল তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাবির শিক্ষকবৃন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টরের পদ ব্যবহার পূর্বক রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ছাত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন এবং তাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগে প্রভাব বিস্তার, আরেক ছাত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন ও অন্য এক ছাত্রীর সাথে একই শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে তাকে গর্ভপাত ঘটাতে বাধ্য করার অভিযোগের তদন্ত দাবি করা হয়।

'জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ' ব্যানারে হওয়া এই সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বিবৃতিতে শিক্ষকবৃন্দ বলেন, এসব ঘটনার সত্যতা স্পষ্ট হয়ে উঠে বেশকিভহু ফটোগ্রাফ, চ্যাটবক্সের স্ক্রিনশট এবং অডিও ক্লিপের মাধ্যমে।অভিযোগগুলো প্রমাণের পক্ষে বেশকিছু তথ্য-উপাত্ত আমাদের কাছেও রয়েছে। আমরা মনে করি, প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত থেকে এটা স্পষ্ট যে, অভিযুক্ত ব্যক্তি শিক্ষকতার পদে যুক্ত থাকার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছেন। আমরা অভিযোগগুলো তদন্তের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং নিম্নলিখিত দাবি জানাচ্ছি।

এছাড়াও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ লিখিত বিবৃতিতে তাদের ৩দফা দাবি পেশ করেন। দাবিগুলো হলো- অভিযোগ তদন্তে অবিলম্বে একটি স্ট্রাকচারাল কমিটি গঠন; প্রাথমিক সত্যতা থাকায় বিধি অনুযায়ী অভিযুক্তকে তার সকল পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত এবং তদন্ত সাপেক্ষে তাকে চাকুরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক।

সংবাদ সম্মেলনে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আনিছা পারভিন জলি বলেন, ফাঁস হওয়া কল রেকর্ড শোনার পর আমাদের মনে হয়েছে তার শিক্ষক থাকার যোগ্যতা নেই। অনেক সময় ভিকটিমকে অভিযোগ করার সুযোগ দেয়া হয় না। বিভিন্ন হুমকি দেয়া হয়। এক্ষেত্রে কেউ অভিযোগ করুক বা না করুক, জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রমাণসহ নিউজ হওয়ার পর প্রশাসনের উচিত এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা। আর এরকম অভিযোগ জাহাঙ্গীরনগরে প্রথম না। আগেও এরকম ঘটনা ঘটেছে এবং প্রশাসন শক্ত অবস্থান নিয়েছিলো। এই শিক্ষকের বিষয়েও একই অবস্থান কাম্য।

এসময় তিনি স্ট্রাকচারাল কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে আরো বলেন, আগামী ৮ ডিসেম্বর সিন্ডিকেট সভা আছে। সেই সভায় অভিযুক্ত শিক্ষকের অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য সকল মতের সকল দলের শিক্ষকদের সমন্বয়ে স্ট্রাকচারাল কমিটি গঠনের দাবি জানাই। যদি তা না হয় অতীতে যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে যেমন আন্দোলন জাবি দেখেছে এই ইস্যুতেও সেরকম আন্দোলন হবে।

দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি একজন সহকারী প্রক্টর। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য নিয়োজিত ব্যক্তিই যদি শিক্ষার্থীদের জন্য অনিরাপদ হয়ে দাঁড়ায় তাহলে তার সেই পদে বহাল থাকার কোন যোগ্যতাই থাকে না।


সংবাদ সম্মেলনে নৃবিজ্ঞানের অধ্যাপক মানস চৌধুরী, পরিবেশ বিজ্ঞানের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শামীমা নাসরীন জলি, নৃবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক ফাহিমা আল ফারাবী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগে প্রভাষক নিয়োগে সহকারী প্রক্টর মাহমুদুর রহমান জনির বিশেষ তদবিরের অভিযোগ রয়েছে । এছাড়াও বিভিন্ন সু্যোগ সুবিধা ও চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ছাত্রীদের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করার সত্যতা প্রমানিত হয়েছে। এছাড়াও একছাত্রীকে জোড়পূর্বক গর্ভাপাত করানোর কিছু কল রেকর্ড পাওয়া গেছে। ইতোপূর্বে সহকারী প্রক্টর মাহমুদুর রহমান জনির এরকম ঘৃন্য ঘটনার নিন্দা জানিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি সংসদ।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭