ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপি না হেফাজত: কার সাথে জামায়াত


প্রকাশ: 02/12/2022


Thumbnail

১০ ডিসেম্বর নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে মাতামাতি চলছে । সবার অলক্ষ্যে রয়ে গেছে ১৭ ডিসেম্বর। ১০ ডিসেম্বর বিএনপির মহাসমাবেশে উত্তেজনা হতে পারে, উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে, হতে পারে রাজনৈতিক সহিংসতা এমন আশঙ্কা করছেন। আর তা নিয়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য এবং কথা চালাচালি চলছে। কিন্তু এর মধ্যেই নীরবে-নিভৃতে হেফাজত ১৭ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিএনপির মহাসমাবেশ হবে একক ভাবে। দলগত শক্তিতে বিএনপি ঢাকার মহাসমাবেশ সফল করতে চায় এবং তারা বলেছে যে, নয়াপল্টনে যেকোনো মূল্যে এই সমাবেশ তারা করবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সরকার তাকে নয়াপল্টনে সমাবেশ করে দিবে কিনা এ নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। কিন্তু এই সংকটের মধ্যেও বিএনপির পাশে নেই অন্য কোনো রাজনৈতিক দলগুলো। ২০ দলীয় জোট ইতোমধ্যে মৃত হয়ে গেছে। জামায়াতের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সম্পর্ক রাখছে না বিএনপি। ফলে ঢাকার মহাসমাবেশে বিএনপির সঙ্গে জামায়াত থাকবে কি থাকবে না এ নিয়ে সংশয় রয়েছে। অবশ্য বিএনপির কোনো কোনো নেতার দাবি জামায়াত প্রকাশ্যে না থাকলেও গোপনে তাদের সঙ্গে থাকবে। কারণ জামায়াত বিএনপির সঙ্গ ত্যাগ করতে পারবে না তাদের অস্তিত্বের কারণে। এবং দুটি দলের সম্পর্ক পরস্পরের উপর নির্ভরশীল। তবে বিএনপি সাম্প্রতিক সময়ে যে ২২টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করার লক্ষ্যে দুই দফা সংলাপ করেছিল সেই রাজনৈতিক দলগুলো বিএনপির সমাবেশ নিয়ে তেমন আগ্রহী নয়। তারাও এ সমাবেশে থাকছে না বলে জানা গেছে। ফলে বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ তার নিজস্ব সাংগঠনিক শক্তি দিয়ে করতে হবে। তবে জামায়াতের ভূমিকা নিয়ে এক ধরনের রহস্য এবং ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। 

একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বাংলা ইনসাইডারকে নিশ্চিত করেছে হেফাজতের ১৭ ডিসেম্বরের সমাবেশ সফল করার জন্য জামায়াতের কর্মীরা মাঠে নেমেছে। তারা বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট বৈঠক করছে। বিভিন্ন মাদ্রাসা গুলোতে তাদের নেটওয়ার্ক সচল করেছে এবং জামায়াতের কর্মীদেরকে ১৭ ডিসেম্বরের হেফাজতের কর্মসূচি সফল করার জন্য নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। তাহলে জামায়াত কার সঙ্গে থাকছে? বিএনপির সঙ্গে? নাকি হেফাজতের সঙ্গে? রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জামায়াত আসলে দুই পক্ষের সঙ্গে থাকছেন। বিএনপির সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে গাঁটছাড়া না বাধঁলে ১০ ডিসেম্বরের সন্ত্রাস সহিংসতা উস্কে দেওয়ার জন্য জামায়াত স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এখনো জামায়াতের সাথে বিএনপির গোপন সম্পর্ক রয়েছে এবং বিভিন্ন জনসভাতে জামায়াতকে বিএনপি পাশে পাচ্ছে। বিশেষ করে কুমিল্লার জনসভায় জামায়াতের কর্মীদের উপস্থিতি সবার নজর কেড়েছে। রাজশাহীতেও আগামীকালের জনসভায় জামায়াত থাকবে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ঢাকায় জামায়াত থাকবে না এটি অসম্ভব বলেই মনে করেন কোনো কোনো বিশ্লেষক। 

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, ঢাকায় একটি বড় ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। এর জন্যই বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশ করার ব্যাপারে অনড় অবস্থানে রয়েছে। আর এখানে যদি কোনো সহিংসতা তৈরি হয় তাহলে পল্টনসহ ঢাকা শহরে সহিংসতা ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে জামায়াত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং জামায়াতের সে ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। অন্যদিকে হেফাজতের সমাবেশেও যেন বিপুল পরিমাণ জনসমাগম হয় এবং সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় সেজন্য জামায়াত কাজ করে যাচ্ছে। অর্থাৎ সরকারের বিরুদ্ধে যারাই কাজ করছে বা যারাই সংগঠিত হবে তাদের পাশেই জামায়াত থাকছে এবং সঙ্গে থাকছে জঙ্গিরা। জামায়াত সরকারের বিরুদ্ধে যেকোনো উদ্যোগে সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে আগ বাড়িয়ে কাজ করছে। এটিই এখন জামায়াতের প্রধান রাজনৈতিক কৌশল বলে বিভিন্ন মহল মনে করছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭