ইনসাইড থট

১০ ডিসেম্বরকে অবশ্যই প্রতিহত করতে হবে


প্রকাশ: 03/12/2022


Thumbnail

১০ ডিসেম্বর বিএনপি ঢাকায় একটি সমাবেশ ডেকেছে। এটি শুধু বাংলাদেশে নয় বিদেশেও এখন আলাপ আলোচনা হচ্ছে। বিদেশে অনেকের ভেতরেই এটি নিয়ে উৎকণ্ঠা কাজ করছে। কারণ তাদের সবারই ঢাকায় আত্মীয় স্বজন আছে। বিএনপি বলছে বিপুল সংখ্যক লোক তাদের এই সমাবেশে যোগদান করবে। তাদের সহযোগিতার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বলছেন, কোন যানজটের ধর্মঘট যেনো না হয় সেটি বিষয়টি খেয়াল রাখতে এবং ছাত্রলীগের সম্মেলনকেও তিনি এগিয়ে এনেছেন যাতে বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মঞ্চসজ্জা থেকে শুরু করে সকল পুর্বপ্রস্তুতি নিতে পারে। এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে তিনি ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছেন বলে আমরা বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। ব্যাক্তিগতভাবে অনেকের সাথে যোগাযোগ করেও আমি জানতে পেরেছি যে, তিনি তার দল এবং যারা আইন রক্ষাকারী বাহিনী কেউ যাতে বাড়াবাড়ি না করে এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তারা যেনো শান্তিতে তাদের মহাসমাবেশ করতে পারে এবং সরকারের পক্ষ থেকে যতটুকু সাহায্য সহযোগিতা করা প্রয়োজন সেটুকু তারা করবেন। যদিও এটি কোনো পত্রিকায় আসেনি কিন্তু আমার ধারণা যেহেতু মহাসমাবেশে বিপুল সংখ্যক মানুষ আসবে বলে দাবি করছে বিএনপি, সেখানে পানির অসুবিধা হতে পারে, আমার ধারণা সরকার সেখানে তাদের জন্য পানির ব্যাবস্থাও করে দিবেন। সুতরাং আমার মনে হয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১০ তারিখ বিএনপির সমাবেশ করতে কোন অসুবিধা হবে না।

 

এই বিষয় নিয়ে আমাকে হঠাৎ করে গতরাত্রে ওয়েলস থেকে একজন ফোন করলেন। তার বাবা ছিলেন মরহুম সমাজকল্যাণ মন্ত্রী মহসিন সাহেবের বন্ধু। তারা আওয়ামী লীগ পরিবারের হলেও সরাসরি আওয়ামী লীগ দলের সাথে যুক্ত নয়। তার পিতাও দলের সাথে যুক্ত ছিলেন না। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে তিনি অনেক শ্রদ্ধা করতেন। তারা সকলেই খুবই নিভৃত মনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারন করেন এবং তার কন্যাকেও খুবই সম্মানের চোখে দেখেন। আর এ কারণে তাদের সাথে আমার গত ৩০ বছরের যোগাযোগ। তিনি আমাকে বললেন, একটা সংবাদ এই মাত্র তিনি তার ছোট ভাইয়ের মাধ্যমে পেয়েছেন। কথাটি শুনে মনটা খুবই খারাপ হয়ে গেলো। বিষয়টি হলো কেনো ১০ ডিসেম্বর তারা মহাসমাবেসের তারিখ ঠিক করল। ১০ ডিসেম্বর আমরা জানি মানবাধিকার দিবস। তার চেয়ে গুরুত্বপুর্ন যে বিষয়টি তা হলো ১০ ডিসেম্বর প্রথম ১৯৭১ সালে এ দেশে বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে যেয়ে রাজাকার আল-বদররা হত্যা করে। যাতে দেশ স্বাধীন হলেও কোনো বুদ্ধিজীবী যেনো জীবিত না থাকে। একটি গোষ্ঠী যদি ধরি তাহলে ১৯৭১ সালে চিকিৎসকরা সবচেয়ে বেশি জীবন দিয়েছে এবং ব্যাক্তিগতভাবে আমারও একটি দুর্বলতা আছে, কারণ আমার সরাসরি ২ জন শিক্ষক অধ্যাপক আলিম চৌধুরী এবং অধ্যাপক ফজলে রাব্বি। অধ্যাপক ফজলে রাব্বির অধীনে মিয়া চাকরীও করেছি। এই দুইজনকেও একই ধারাবাহিকতায় হত্যা করা হয়। বুদ্ধিজীবী হত্যার দিবসটি তাই আমার কাছে একটি ব্যাক্তিগত বেদনারও বিষয়। ওয়েলসের আমার সেই ছোট ভাই বললো পাকিস্তানের ইন্টিলিজেন্ট ব্রাঞ্চ আইএসআই’র টাকা দিয়ে এবং আইএসআই এর বুদ্ধিমতো বিলেতে অবস্থিত রাজপুত্রের মাধ্যমে ১০ডিসেম্বরকে ঠিক করা হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও যাতে এগিয়ে না যেতে পারে তার সর্বশেষ চেষ্টা হচ্ছে ১০ ডিসেম্বর। এটা শোনার পর আমার মনে হলো কেবল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নয়, শুধু মাত্র শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ছাড়া আর কোথাও কোনো গনজামায়াত বা কোনো কিছু হতে দেওয়া উচিত না।  আর সেইখানে বিএনপি দাবি করছে তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান নয় পল্টন ময়দানে সমাবেশ করবে। এটাতো মামা বাড়ির আবদার না। আমি মনে করি ৯ তারিখ রাত ১২ টার পর শহীদ মিনারে প্রতিকি মোমবাতি জালিয়ে আমাদের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করা উচিত এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আসে পাশে না করে বাকি বিভন্ন জায়গায় আমরা ৯ তারিখ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত ছোট ছোট আকারে হলেও সভা করা উচিত। তাদের আত্মা যাতে শান্তি পায়। তাদেরকে ভুলে যাইনি। কেননা এটা সরাসরি আমাদেরকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। যারা সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বন্দবন্ধুর নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে, ৩০ লক্ষ মানুষ তাদের জীবন দিলো, ২ লক্ষ মা বোন তাদের ইজ্জত দিলো তাদের কি আমরা স্মরণ করবো না? আমরা মৃত্যুর আগের যদি তাদের ভুলে যাই তাহলে কিভাবে হবে। ৯ এবং ১০ ডিসেম্বর হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নিবেদিত। যেহেতু সরকার তাদের অনুমতি দিয়েছে তারা তাদের সমাবেশ করুক। কোন প্রকার পেশি শক্তি দেখি আমরা তাদের সমাবেশ নষ্ট করতে চাই না। এটা কোনো রাজনীতির ভাষা নয়। যেহেতু দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক নির্দেশ দিয়েছেন এখানে তাদের গনজামায়াত হবে তাই এই ব্যাপারে আমরা কোনো কথা বলবো না। তারা সমাবেশ করুক। কিন্তু বাকি শহরগুলোতে সকলে মিলে নিজের দলের পরিচয় ভুলে গিয়ে আমরা ৯ এবং ১০ ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় অবশ্যই শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করবো এবং এই আইএসআইের পরিকল্পনা মতো ঠিক করা ১০ ডিসেম্বরকে অবশ্যই প্রতিহত করতে হবে। কেননা তা না হল আমাদের আরেটি পরাজয় গ্রহণ করতে হবে। আমরা পরাজিত হবার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করিনি। পরাজিত হবার জন্য দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক দেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন না। এটাতে অবশ্যই দার্শনিক রাষ্ট্রনায়কের হাত শক্তিশালী করা হবে এবং একই সাথে আওয়ামী লীগও উপকৃত হবে। কিন্তু আওয়ামী লীগকে সাহায্য করার জন্য আমরা এটি করছি না। আমরা করছি বঙ্গবন্ধুর কথা মনে করে, আমরা করছি দার্শনিক রাষ্ট্র নায়ক শেখ হাসিনার নির্দেশিত কথা মনে করে এবং সর্বোপরি যারা এ দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন তাদের স্মরণ করে এবং তাদের পরিবারের সাথে একতা ঘোষণার জন্যে। সুতরাং, আইএসআই এর দেওয়া ১০ তারিখে বিএনপি এবং জামাতসহ অন্যান্য ধর্মান্ধরা আমাদের আই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মাকে অপমান করবে এটাকে কিছুতেই গ্রহণ করা যায় না। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭