ইনসাইড বাংলাদেশ

বাংলাদেশ নিয়ে কি হচ্ছে ওয়াশিংটনে?


প্রকাশ: 03/12/2022


Thumbnail

আগামী ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস। প্রতিবছর মানবাধিকার দিবসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর পুরো বিশ্বের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এই প্রতিবেদনে বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি কি তা পর্যালোচনা করা হয় এবং যে সমস্ত দেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি খারাপ সে সমস্ত দেশের করনীয় কি, সে সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়। গত বছর এই মানবাধিকার দিবসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের এলিট ফোর্স র‍্যাবের ঊর্ধ্বতন কয়েকজন কর্মকর্তাসহ র‍্যাবের ওপর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলো। এক বছর হলো এই নিষেধাজ্ঞা চলছে। আর এই নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে নানারকম আতঙ্ক এখন ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশে। এবার মানবাধিকার দিবস কি এরকম কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা আসতে যাচ্ছে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে দেখা গেছে যে, এবার বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে তাতে নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা দেয়া হচ্ছেনা। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। বরং বাংলাদেশে গত এক বছরে মানবাধিকার পরিস্থিতির ক্ষেত্রে যে ইতিবাচক পরিবর্তন গুলো হয়েছে সে সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে।

বাংলাদেশে গত এক বছরে নতুন করে গুম হয়নি এবং সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রেও অনেক বেশি সহনশীল হয়েছে বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে। তবে যে ৭৬ জন গুমের ব্যাপারে তথ্য চেয়েছিলো সেই তথ্যগুলো সম্পর্কে এখনও বেশকিছু রহস্য রয়েছে এবং অসম্পূর্ণ বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করে। গত বছর মানবাধিকার রিপোর্ট যখন প্রকাশিত করা হয় তখন বাংলাদেশ পুরোপুরি অন্ধ ছিল। তৎকালীন ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এই রিপোর্টের ব্যাপারে কোনো কিছুই করেননি। তিনি বিএনপি-জামাত ঘরানার একজন কূটনীতিক ছিলেন, যার জন্য তিনি বিষয়টি উপেক্ষা করেছেন অথবা ইচ্ছে করেই এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটুক সেটি কামনা করেছিলেন বলেই বিভিন্ন কূটনৈতিক মহল মনে করেন। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। এবার বাংলাদেশের দূতাবাস গভীরভাবে পুরো পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ রাখছে। তাছাড়াও বাংলাদেশে একটি লবিস্ট ফার্ম নিযুক্ত করেছে, তারাও বাংলাদেশের প্রকৃত পরিস্থিতি তুলে ধরেছে। তবে এবারের প্রতিবেদন বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বেশকিছু ঘটনা উল্লেখ করা হবে বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

বিশেষ করে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে বেশকিছু কথাবার্তা থাকতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছেন। এছাড়াও বাংলাদেশে বিনা বিচারে আটক এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশাসনের বাড়াবাড়ির বিষয়টিও উঠে আসবে। তবে গত এক বছরে মানবাধিকার পরিস্থিতির ক্ষেত্রে বেশকিছু ইতিবাচক ঘটনার বিষয়টিও এবারের প্রতিবেদন আসতে পারে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। বিশেষ করে গুমের ব্যাপারে সরকারের সর্তকতা প্রশংসিত হতে পারে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল বা আইন সংশোধনের ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি না হলেও বাংলাদেশের গত এক বছরে এই আইনের যথেচ্ছ প্রয়োগ হয়নি বলেও মার্কিন কূটনীতিকরা মনে করছেন। তবে এবারের প্রতিবেদনে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বিষয়টি উঠে আসবে, উঠে আসবে রাজনৈতিক সহিংসতা এবং সকলের মত প্রকাশের অধিকারের প্রসঙ্গটিও। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, এবারের ওয়াশিংটন থেকে যে মানবাধিকার রিপোর্টটি প্রকাশিত হবে তা অন্যান্য দেশগুলোর ওপর। প্রতিবছরই বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সমালোচনা করে থাকে, শোবো আমলেই এই সমালোচনাগুলো করে থাকে। এর লক্ষ্য এই নয় যে সরকারকে চাপে ফেলা, এর প্রধান লক্ষ্য হলো যেন মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সারাবিশ্বে মানবাধিকার পরিস্থিতি সংরক্ষণে এবং মানবাধিকার উন্নয়নে অঙ্গীকারাবদ্ধ। সেই অঙ্গীকারের অংশ হিসেবেই এই ধরনের প্রতিবেদন তৈরি করা হয় বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সূত্র জানিয়েছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭