কালার ইনসাইড

বাবার জন্য অল্পের জন্য বেঁচে গেলেন ফারিন, দিলেন লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা


প্রকাশ: 04/12/2022


Thumbnail

অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিনের সঙ্গে শুক্রবার রাজধানীর কুড়িলের শপিং মলের চলন্ত সিঁড়িতে ঘটে যায় দুর্ঘটনা। বিষয়টি নিয়ে এক দিন পরে কথা বলেছেন অভিনেত্রী।র্ঘটনার সময় তাঁর সঙ্গে বাবা ও ভাই না থাকলে তিনি হয়তো প্রাণে বাঁচতেন না বলে জানান তিনি। 

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ফারিন ফেসবুকে লিখলেন, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার আশেপাশে যমুনা ফিউচার পার্কের প্রথম ফ্লোর থেকে গ্রাউন্ড ফ্লোরে নামার সময় গেট দিয়ে ঢুকেই যে মেইন অ্যাস্কেলেটরটা, সেখানটায় আমার দুর্ঘটনা ঘটে।

সিঁড়ির নিচে যে অ্যালুমিনিয়ামের নাকি স্টিলের সেটা জানি না, সে পাত খুলে বের হয়ে ধারালো কোনা আমার পায়ে আঘাত করে। বাবা ধাক্কা না দিলে দুজনই মারা যেতে পারতেন জানিয়ে তাসনিয়া ফারিন বলেন, আমি সিঁড়ির ডান পাশে ছিলাম। আর ওটা ছিল ঊর্ধ্বমুখী। আমার পরনের প্যান্ট ছিঁড়ে যায় অনেকটুকু আর পায়ের বিভিন্ন স্থানে ছিলে যায় ও ডিপ কাট হয়, যেটা পরবর্তী সময়ে টের পাই। কিন্তু ওই মুহূর্তে শুধু একটা ইমেজ আমার মাথায় ঘুরেফিরে বারবার আসছে, তা হলো- কিছু বোঝার আগে সবাই গগনবিদারি চিৎকার করে উঠল আর আমি দেখলাম ডান পা স্ক্র্যাচ করে পায়ের পাশ দিয়ে মাঝখান হয়ে বাঁ পায়ের ওপরের দিকে একটা পাত ঢুকে যাচ্ছে আর চলন্ত সিঁড়িটিও আমাকে আরো সেদিকেই ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে! যদি গতকাল কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আমাকে আমার ভাই পেছন থেকে টান দিয়ে না সরাত বা আমার বাবা যদি আমাদের দুইজনকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে না দিতেন, আমি জানি না আজকে এই স্ট্যাটাস লেখার জন্য আমি বেঁচে থাকতাম কি না। 

ফারিন বলেন, মজার ব্যাপার হলো, আমার এই ঘটনাকে আমি অ্যাকসিডেন্ট মানতে নারাজ। কারণ আমার এই ঘটনা ঘটার কমপক্ষে পনেরো মিনিট আগে আরেক ব্যক্তির সঙ্গে একই ঘটনা ঘটে। তার পায়ের মাংস ভেদ করে ওই পাতের কোনা ঢুকে যায়। উনি নিজে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে লোকজনকে নাকি সাবধান করছিলেন এবং দায়িত্ববান কাউকে খুঁজছিলেন। শেষে কাউকে না পেয়ে হেল্প ডেস্কে যান এবং এর মধ্যে আমার এই ঘটনা ঘটে, সাথে আরো একজন ভুক্তভোগী খুঁজে পাই। আমার চিৎকার-চেঁচামেচিতে ফাইনালি একজন স্টাফ আসে এবং অনেকবার বলার পর ম্যানেজার কল করে। ততক্ষণে প্রচুর মানুষ জড়ো হয়ে যাচ্ছে আর ব্যথার চেয়ে বেশি ফিল হচ্ছিল হিউমিলিয়েশন। 

অভিনেত্রী বলেন, ওখানে কোনো সিনক্রিয়েট করার চেয়ে আমার মনে হয়েছে ঠাণ্ডা মাথায় এটার সমাধান করা দরকার। তাই আমি বলার পর দুজন কর্মচারী আমাদের তিনজন আহত ব্যক্তি ও তাদের সঙ্গে যারা ছিল, সবাইকে বেজমেন্ট ১-এ নিয়ে যায়। আমাদের ধারণা ছিল, নিশ্চয়ই দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। আশ্চর্য বিষয় হলো, এত বড় মলে কোনো অ্যাম্বুল্যান্স অথবা ফাস্ট রেসপন্ডার তো দূরে থাক, একটা ফাস্ট এইড বক্স-ও নেই! পনেেরা-বিশ মিনিট তারা শুধু এই ফার্মেসি-সেই ফার্মেসি ফোন করল। কেউ নাকি দোকান ছেড়ে আসতে পারবে না। অবশেষে আধা ঘণ্টা পর একজন আসে আর ওই দুই ব্যক্তির চিকিৎসা করে। 

‘কারাগার’খ্যাত অভিনেত্রী বলেন, ফিমেল ডক্টর ছাড়া আমার চিকিৎসা সম্ভব ছিল না। এর মধ্যে আমার ভাইকে পাঠালাম একটা ট্রাউজার কিনে আনার জন্য। যমুনা ফিউচার পার্ক কর্তৃপক্ষের মতে, এই দুর্ঘটনা নাকি বেশি লোক ওঠার কারণে হয়েছে! তার মানে কি আপনারা আগে থেকেই জানতেন? নাকি ধারণক্ষমতার বেশি লোড নিয়ে আগে থেকেই এই অবস্থায় ছিল তা আপনারা টেরই পাননি? আর একজনের সাথে এটা হওয়ার পরও কেন কোনো অ্যাকশন নেননি আপনারা? এস্কেলেটরের দায়িত্বে থাকা কাউকে ডাকতে বললে বলে সে আসেনি। আর আমার এই পরিস্থিতিতে তারা আমাকে চা-কফি অফার করে, যেখানে আমার বসার মতো পরিস্থিতিও নেই। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭