ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির বিপন্ন বিস্ময়


প্রকাশ: 04/12/2022


Thumbnail

বিভিন্ন বিভাগীয় সমাবেশ করে বিএনপি অনেকটাই চাঙ্গা হয়েছিলো। বিএনপি মনে করেছিলো সমাবেশে জনসমাগমের উপস্থিতি প্রমাণ করছে যে, বিএনপির জনপ্রিয়তা আগের ছেয়ে বেড়েছে এবং সরকারের প্রতি জনগণ আস্থাহীনতায় ভুগছে। কিন্তু পাল্টা আঘাত হিসেবে আওয়ামী লীগ যে রাজনৈতিক কৌশল নিয়েছে সেই রাজনৈতিক কৌশল বিএনপিকে বিস্মিত করেছে। যশোরের জনসভার পর আজ চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে জনসভা অনুষ্ঠিত হলো আওয়ামী লীগের। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন। এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির একই মাঠে পাল্টাপাল্টি জনসভা এটি। বিএনপির জনসভায় যে লোকসমাগম হয়েছিলো তারচেয়ে কয়েকগুণ বেশি লোক সমাগম হলো চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডে আওয়ামী লীগের জনসভায়। এ থেকে বুঝা যায় যে, আসলে জনপ্রিয়তায় আওয়ামী লীগ পিছিয়ে নেই বরং এ ধরনের জনসভায় কর্মী সমাবেশের দিক থেকে বিএনপির চেয়ে আওয়ামী লীগ অনেক এগিয়ে। এটি বিএনপির জন্য ছিল এক ধরনের বিপন্ন বিস্ময়।

বিভিন্ন সমাবেশের মাধ্যমে বিএনপি যেভাবে উচ্ছ্বসিত হয়েছিলো, আওয়ামী লীগের পাল্টা সমাবেশের মধ্য দিয়ে সেই উচ্ছ্বাস অনেকটাই চুপসে গেছে। আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির জনপ্রিয়তা যদি জনসভা দিয়ে বিচার করা হয়, তাহলে জনসভায় জনসমাগমের দিক থেকে বিএনপির তুলনায় আওয়ামী লীগ অনেক এগিয়ে। আর এটি ১৬ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির জন্য একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। বিএনপির অনেক নেতাই মনে করেছিলো যে, রাজশাহী, কুমিল্লা, সিলেট, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহে তাদের জনসভা এক একটি মাইলফলক এবং এই সমস্ত জনসভায় অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে গেছে এবং জনগণ তাদের পক্ষে আছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি ডয়েচে ভেলেতে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, জনগণ সরকারের প্রতি অনাস্থা জানাতেই তাদের জনসভায় এসে উপস্থিত হচ্ছেন। কিন্তু তার এই বক্তব্য যে কত বড় ভুল যশোর এবং চট্টগ্রামের জনসভা তা প্রমাণ করে দিলো।

জনগণ আসলে কথা শুনতে চান। জনগণ জানতে চান যে, তাদের জন্য রাজনৈতিক দলগুলো কি দিতে চাচ্ছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন অন্য কথা। তারা বলছেন, এই সমস্ত জনসভাগুলোতে সাধারণ মানুষের উপস্থিত ছিলো খুবই কম। কর্মীদের উপস্থিতি ছিলো উল্লেখযোগ্য এবং কর্মীরাই এই জনসভাগুলোর প্রাণ। আর এই প্রেক্ষাপটে কর্মীর দিক থেকে বিএনপির চেয়ে যে আওয়ামী লীগ যোজন-যোজন এগিয়ে তা আরেকবার প্রমাণিত হলো। আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করছেন যে, এভাবে যদি আওয়ামী লীগ সভাপতি বিভিন্ন জেলায় বা বিভাগে সমাবেশ করেন তাহলেই চিত্র পাল্টে যাবে। কর্মীরা উচ্ছ্বসিত হবে এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হবে। এটি বিএনপির সমাবেশ করে সরকার হটানোর দিবাস্বপ্নকে বানচাল করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। তবে আওয়ামী লীগ-বিএনপি বা অন্যকোনো রাজনৈতিক দলের জনসভায় লোকসমাগম দেখে তার জনপ্রিয়তা যাচাই করা উচিত নয় বলেই মনে করছেন। কিন্তু বিএনপি আসলে ভুল কৌশল গ্রহণ করেছিলো এবং সেই ভুল কৌশলের ফাঁদে বিএনপি পড়েছে। বিএনপি জনসভাকে জনপ্রিয়তার মাপকাঠি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু এখন প্রমাণিত হলো যে, আসলে এই জনসভায় জনসমাগমের দিক থেকে আওয়ামী লীগের তুলনা একমাত্র আওয়ামী লীগই। কাজেই বিএনপির জনপ্রিয়তার দাবি যে আসলে গ্রহণযোগ্য নয়, আওয়ামী লীগের জনসভাগুলো তা হাতে-কলমে প্রমাণ করে দিলো।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭