ইনসাইড গ্রাউন্ড

বিবর্ণ সেনেগালকে নাচালো ইংল্যান্ড


প্রকাশ: 05/12/2022


Thumbnail

যে কোন প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে এটিই ছিলো দুই দলের প্রথম সাক্ষাৎ। ইংল্যান্ড শক্তি-সামর্থ্যে এগিয়ে থাকলেও লড়াইয়ের প্রত্যাশা ছিলো সেনেগালের কাছে। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে এদিন বিবর্ণ থেকে লড়াই তো দূরের কথা নূন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বীতাও করতে পারেনি সেনেগাল। আল বাইত স্টেডিয়ামে সেনেগালকে ৩-০ গোলে হারিয়ে চতুর্থ দল হিসেবে কোার্টার ফাইনালে পা দিয়েছে ইংল্যান্ড। আর ছন্নছাড়া ফুটবলের খেসারত দিয়ে রাউন্ড অব সিক্সটিনেই বিশ্বকাপ যাত্রা শেষ হলো সেনেগালের।

ম্যাচের শুরু থেকেই দুই দল বলের দখল রাখার চেষ্টা করে। ৬ মিনিটে বুলায়ে দিয়া ভাল সম্ভাবনা তৈরি করেছিলেন সেনেগালকে এগিয়ে নেয়ার। হ্যারি ম্যাগুয়ারকে পরাস্ত করলেও তার নেয়া দুর্বল শট ধরতে খুব একটা কষ্ট করতে হয়নি পিকফোর্ডকে। ২১ মিনিটে  সেনেগালের রক্ষণে হানা দেন জন স্টোনস। তবে সেখান থেকে কোন বিপদ ঘটেনি আফ্রিকরা দলটির।

২২ মিনিটে আবারো দিয়ার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। ডান প্রান্ত থেকে পাওয়া ক্রস থেকে পিকফোর্ডকে পরাস্ত করতে পারেনি তিনি। সেখান থেকে ফিরতি বল পেয়ে তা বারের উপর দিয়ে পাঠান ইসমাঈলা সার। হ্যান্ডবলের আবেদন জানায় সেনেগালের ফুটবলাররা। তবে তাতে সাড়া দেননি রেফারি।

তবে ৩২ মিনিটে সেনেগালের নিশ্চিত গোল ঠেকিয়ে ইংল্যান্ডকে আরো একবার রক্ষা করেন পিকফোর্ড। গোলমুখে দিয়ার নেয়া শট বাম হাত দিয়ে প্রতিহত করে দেন এই গোলরক্ষক। এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ হারায় সেনেগাল। উল্টো ৩৯ মিনিটে ইংল্যান্ডকে প্রথম সাফল্য এনে দেন হেন্ডারসন। বেলিংহামের ডিফেন্স চেরা পাস থেকে গোল করেন জর্ডান হেন্ডারসন। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় ইংলিশরা।

সেই গোলের রেশ না কাটতেই ব্যবধান বাড়ায় ইংলিশরা। এবারো দারুণ বোঝাপড়ায় মাঝমাঠ থেকে ফোডেনর উদ্দেশ্যে দারুণ এক থ্রু বাড়ান বেলিংহাম। বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডান পাশে থাকা কেইনের দিকে বাড়িয়ে দেন ফোডেন। সেখান থেকে ঠান্ডা মাথায় শট নিয়ে সেনেগালের গোলরক্ষকের পায়ের নিচ দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন হ্যারি কেইন। ২-০ গোলে এগিয়ে যায় থ্রী লায়ন্সরা। আর গ্রুপ পর্বে গোলের দেখা না পেলেও, নকআউটে চলতি বিশ্বকাপে নিজের প্রথম গোল করলেন কেইন।

এতে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যরা।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই একাদশে দুটি পরিবর্তন আনেন সেনেগাল কোচ আলিউস সিসে। ক্রিপিন দিয়াত্তা-ইলিমান দিয়ায়ের বদলি হিসেবে মাঠে নামান পাপে সার ও চিইক দিয়েংকে। ৫০ মিনিটে পাপে সার আক্রমণে গেলেও গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেন নি। দ্বিতীয়ার্ধেও নিজেদের আক্রমণের ধার ধরে রাখে ইংলিশরা। টানা আক্রমণে চাপ বাড়াতে থাকে সেনেগালের রক্ষণে। ৫৪ মিনিটে শাকার নেয়া শট সাইড পোষ্টের পাশ দিয়ে চলে যায়। দুই মিনিট পর হ্যারি কেইনের দূরপাল্লার শট ঠেকিয়ে দেন মেন্ডি।

তবে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি ইংলিশদের। পরের মিনিটেই ব্যবধান ৩-০ করেন শাকা। ফোডেনর পাস থেকে ডি-বক্সের মধ্যে বল পান তিনি। কোণাকোণি শটে তা জালে জড়িয়ে বিশ্বকাপে নিজের তৃতীয় গোল করেন এই তরুণ স্ট্রাইকার। ম্যাচে চালকের আসনে বসে ইংল্যান্ড।

ম্যাচের ৬৫ মিনিটে শাকা ও ফোডেনকে উঠিয়ে নেন সাউথগেট। মাঠে নামেন জ্যাক গ্রিলিশ এবং মার্কাস রাশফোর্ড। ৬৯ মিনিটে আবারো দলকে হতাশ করেন পাপে সার। ৭৬ মিনিটে হ্যারি কেইনকে ইচ্ছাকৃত ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন কলিবালি। দেখেন ম্যাচের প্রথম হলুদ কার্ড।

গ্রুপ পর্বে লড়াকু মানসিকতা এদিন দেখা যায়নি সেনেগালের ফুটবলারদের মাঝে। যেন নিজেদের ছন্দ হারিয়ে এলোমেলো ফুটবলের পসরা বসিয়েছেন মাঠে। আর একের পর আক্রমণে তাদেরকে কোণঠাসা করে ফেলে ইংলিশ ফুটবলাররা। সেখান থেকে আর বের হয়ে আসতে পারেনি আফ্রিকার দলটি।

ম্যাচের বাকি সময়ে বেশ কয়েকটি আক্রমণ চালায় দুই দলই। তবে সেখান থেকে কাঙ্খিত গোলের দেখা পায়নি কেউই। তবে আগের সাফল্য ধরে রেখে জয় নিশ্চিত করে উল্লাসে মাতে রাশফোর্ড-গ্রিলিশরা। কোয়ার্টার ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭