ইনসাইড গ্রাউন্ড

দক্ষিণ কোরিয়াকে হেসে-খেলে উড়িয়ে শেষ আটে ব্রাজিল


প্রকাশ: 06/12/2022


Thumbnail

একদিকে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের সামনে হেক্সা মিশনে একধাপ এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ। অন্যদিকে এশিয়ার একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠার হাতছানি। তাই ম্যাচটিতে জমজমাট লড়াইয়ের প্রত্যাশা ছিলো সকলের। তবে দোহার স্টেডিয়াম ৯৭৪ এ অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে তার কোন রেশও পাওয়া গেলো না। ব্রাজিলের দাপুটে ফুটবলের সামনে দাড়াতেই পারলো না ২০০২ সালের সেমিফাইনালিষ্টরা। ৪-১ গোলে দক্ষিণ কোরিয়াকে বিধ্বস্ত করে শেষ আটে পা রেখেছে নেইমার-ভিনিসিউসরা।

ম্যাচের শুরু থেকেই ব্রাজিলের আক্রমণাত্নক ফুটবলের সামনে খোলসবন্দী হয়ে পড়ে দক্ষিণ কোরিয়া। বেশ কয়েকবার দক্ষিণ কোরিয়ার আক্রমণভাগে ঢোকার চেষ্টা করলেও ঠিকঠাক গুছিয়ে নিতে পারছিলেন না ব্রাজিলের ফুটবলাররা। সে সুবিধা ব্রাজিল পায় ম্যাচের ৭ মিনিটেই। ডান প্রান্ত থেকে রাফিনিয়ার দারুণ এক ক্রস থেকে বুদ্ধিমত্তার সাথে বল জালে জড়ান ভিনিসিউস জুনিয়র। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় সেলেসাওরা। বিশ্বকাপে এটি ভিনির প্রথম গোল। আর ব্রাজিলের জার্সি গায়ে দ্বিতীয়।

সেই রেশ কাটতে না কাটতেই ম্যাচের ১১ মিনিটে রিচার্লিসনকে ফাউল করে পেনাল্টি পায় ব্রাজিল। সেখান থেকে লক্ষ্যভেদ করে ব্যবধান ২-০ করেন নেইমার। ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফিরেই গোল পেলেন এই তারকা ফুটবলার। তবে উড়ন্ত সূচনা পায় ব্রাজিল। একের পর এক আক্রমণ করে চাপ বাড়াতে থাকে সেলেসাওরা। ম্যাচের ২৯ মিনিটে ব্রাজিলের হয়ে তৃতীয় গোল করেন রিচার্লিসন। থিয়াগো সিলভার পাস থেকে বুদ্ধিমত্তার সাথে বোকা বানান গোলরক্ষককে। নেচে-গেয়ে উদযাপন করে নেইমার-থিয়াগো সিলভারা।

৯ মিনিট পর আবারো লক্ষ্যভেদ ব্রাজিলের। বাম প্রান্ত পাওয়া ক্রসে দারুণ এক শটে গোল করেন লুকাস পাকুয়েতা। যা বিশ্বকাপে তার ব্রাজিলের জার্সি গায়ে প্রথম গোল। প্রথমার্ধেই ৪-০ গোলে এগিয়ে গিয়ে ম্যাচে চালকের আসনে বসে ব্রাজিল। রাফিনিয়াকে ফাউল করে ৪৪ মিনিটে ম্যাচের প্রথম হলুদ কার্ড দেখেন জুং উ ইয়াং।

পুরো ম্যাচেই বলের দখল থেকে আক্রমণ দুই দিকেই এগিয়ে ছিলো সেলেসাওরা। আর প্রথমার্ধেই চার গোল হজম করে এলোমেলো হয়ে যায় এশিয়ার একমাত্র প্রতিনিধিরা।

বিরতির পর ব্যবধান কমানোর দারুণ সুযোগ পেয়েছিলো দক্ষিণ কোরিয়া। মাঝমাঠ থেকে দারুণ এক ক্রস থেকে ডিফেন্ডারকে কাঁটিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন সন হিউং মিন। সামনে ব্রাজিল গোলরক্ষককে একা পেয়েও নিশ্চিত গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন তিনি। অ্যালিসনের কাঁধে লেগে বলের গতিমুখ বদলে গেলে গোল পাওয়া হয়নি এশিয়ার দলটির।

৫৪ মিনিটে রাফিনিয়ার শট দক্ষিণ কোরিয়ার গোলরক্ষক ঠেকিয়ে না দিলে ব্যবধান বাড়তো ব্রাজিলের। সেখান থেকে ফিরতি বল পেয়ে পোষ্টের বাইরে পাঠান ভিনিসিউস। ৫৭ মিনিটে সন জুন হো নেইমারকে ফাউল করলে ডি-বক্সের বাইরে সুবিধাজনক স্থানে প্রি-কিক পায় ব্রাজিল। রাফিনিয়ার নেয়া ফ্রি-কিকটি কোরিয়ান ডিফেন্ডারদের গায়ে লেগে বাইরে চলে যায়। কর্নার পায় লাতিন আমেরিকার দলটি। ৬২ মিনিটে আবারো দারুণ এক গোছানো আক্রমণ করে সেলেসাওরা। রাফিনিয়ার নেয়া শটটি আটকে দিয়ে ব্যবধান বাড়াতে দেননি কিম সিউন গিউ। ৬৩ মিনিটে দলে প্রথম পরিবর্তন আনেন তিতে। মিলিতাও এর বদলি হিসেবে মাঠে নামেন অভিজ্ঞ দানি আলভেজ।

৬৬ মিনিটে রাফিনিয়ার ব্যাক পাস থেকে পেনাল্টি বক্সে ফাঁকা জায়গায় বল পেলেও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন নি রিচার্লিসন। তবে পরের মিনিটে দক্ষিণ কোরিয়ার সামনে আবারো বাঁধা হয়ে দাড়ান অ্যালিসন বেকার। হোয়াং হি চানের নেয়া বাঁকানো শট বাম পাশে ঝাঁপিয়ে প্রতিহত করেন তিনি। সেখান থেকে ফিরতি বল পেয়ে তা জালে জড়াতে ব্যর্থ হন সন হিউং মিন।

৭২ মিনিটে ভিনিসিউস ও দানিলোর জায়গায় মাঠে নামেন মার্টিনেল্লি এবং ব্রেমার। ৭৬ মিনিটে অবশ্য একটি গোল করে ব্যবধান কমায় দক্ষিণ কোরিয়া। দূরপাল্লার এক শটে পাইক সিউং হো পরাস্ত করেন বেকারকে। চার মিনিট পর আবারো বদলি ফুটবলার নামান তিতে। ইনজুরি থেকে ফিরে ম্যাচের ৮০ মিনিট পর্যন্ত মাঠে থাকেন নেইমার। অ্যালিসনের বদলি হিসেবে মাঠে আসেন ওয়েভারটন।

৮৯ মিনিটে মার্টিনেল্লি জিরো লাইন থেকে দারুণ এক ক্রস দেন আলভেজকে। সেখান থেক ভলিতে গোল করতে পারতেন আলভেজ। তবে কোরিয়ান ডিফেন্ডার হোং চুলের পিঠে লেগে তা ক্লিয়ার হয়ে গেলে ব্যবধান বাড়াতে পারেনি ব্রাজিল। নির্ধারিত সময়ে দুই দলের কারোর প্রচেষ্টাই কাজে আসেনি।

রেফারির শেষ বাঁশি বাজার সাথে উল্লাসে মেতে উঠে ব্রাজিলের ফুটবলাররা। ম্যাচ শেষে মাঠেই ব্রাজিল কিংবদন্তি পেলের সুস্থতা কামনা করে ব্রাজিল ফুটবল দল।‌ কোয়ার্টার ফাইনালে সেলেসাওদের প্রতিপক্ষ বর্তমান রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়া।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭