ইনসাইড থট

মালেক ভাইয়ের স্থান কখনোই পূরণ হবে না


প্রকাশ: 07/12/2022


Thumbnail

হঠাৎ করেই খবর পেলাম যে আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা মণ্ডলীর এক নম্বর সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি মালেক ভাই আমাদের ছেড়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। মালেক ভাইয়ের সাথে আমার অনেক স্মৃতি আছে। তার কথা বলে শেষ করা যাবে না। তবুও দুই একটি বিষয় উল্লেখ না করলেই নয়।

১৯৯৬ সালে যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে তখন বাংলাদেশ মেডিকেল এ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন হয় তখন সেই নির্বাচনের দায়িত্ব নেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে এককভাবে প্রদান করেন। মালেক ভাইয়ের সাথে আলাপ করেই নির্বাচন পরিচালনার সকল দায়িত্ব পালন করছিলাম। তিনি একদিন আমাকে উনার চেম্বারে যেতে বললেন। তো আমি মালেক ভাইয়ের সাথে দেখা করতে উনার চেম্বারে গেলাম। যেয়ে দেখি সেখানে মালেক ভাইয়ের সাথে আমাদের মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ভাইও আছে। মালেক ভাই আমাকে বললেন, মোদাচ্ছের তুমি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনকে বিএমএ’তে মহাসচিব হিসেবে নমিনেশন দাও। আমি বললাম, এটা আপনাকে বলতে হবে কেন? আপনি না বললেও এটা আমার বিবেচনায় ছিল। উনারতো অনেক অবদান আছে। মালেক ভাই আমাকে কোক এনে খাওয়ালেন। মালেক ভাইকে হয়তো বলা হয়েছিল আমি মহিউদ্দিন ভাইকে দিতে চাচ্ছি না, অন্য কাওকে দিতে চাচ্ছি।

বাহাউদ্দিন নাসিম তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এপিএস। তার সাথে আমার তখন থেকেই অনেক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। বাহাউদ্দিন নাসিম আমাকে নিজের বড় ভাইয়ের মত না, আমাকে নিজের বড়ভাই ই মনে করতেন এবং এখনও করেন। নির্বাচনের ১-২ দিন আগে রাত প্রায় ১২ টার কাছাকাছি সময় বাহাউদ্দিন নাসিম আমার সাথে দেখা করতে আসে। এসে আমাকে বলে, মোদাচ্ছের ভাই নেত্রী এই লিস্ট দিয়েছে আপনাকে দেয়ার জন্য। তিনি জেনেছেন আমাদের অবস্থা ভাল না এবং তাতে বিএমএ’তে আমরা জিততে পারব কিনা এটা সম্বন্ধে আপনাকে ওয়াকিবহাল করতে বলেছে। আমি একটু হাসলাম, ওর কাগজটা নিয়ে দেখে বললাম যে তুমি নেত্রীকে বলে দিও যে, তিনি যেহেতু নির্বাচনের দায়িত্ব আমাকে দিয়েছেন, বিরাট ভোটেই আমাদের প্যানেল জিতবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। মালেক ভাইকে আমি ব্যাপারটি পরের দিন ভোরে জানালাম। মালেক ভাই আমাকে জিজ্ঞাস করলেন, তোমার কি মনে হয়? আমি তাকে বললাম অবশ্যই আমরা ভাল ভোটে জিতবো। মালেক ভাই বললেন, তোমার প্রতি আমার একশত ভাগ বিশ্বাস আছে। সেই নির্বাচনে আমরা বিপুল ভোটে জয়লাভ করি। তখন মালেক ভাইয়ের সাথে আমরা দেখা করতে গেলাম। উনি ভীষণ খুশি এবং আমাকে বললেন যে, আমি তখনই নেত্রীকে বলেছিলাম যে এটাই হবে।

মালেক ভাইয়ের সাথে এমন অনেক ব্যাপারে আমি আলাপ আলোচনা করতাম। সবসময় তার একটা ইতিবাচক মনোভাব ছিল। নিজের ছোট ভাইয়ের মত তিনি আমারে আদর করতেন। মালেক ভাইয়ের বাড়িতে যে কত গিয়েছি, কত খেয়েছি তার কোনো হিসাব নেই। আজকে মালেক ভাই আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন মানে বলা যাই একটি ইতিহাস চলে গেলো।

২০০১ সালে দেশের খুব খারাপ একটি সময় রাজধানীর রাসেল স্কয়ারে কোনো একটি দাবি নিয়ে রাস্তায় দাড়িয়ে প্রতিবাদ করছিলাম। এতো বয়স হওয়া সত্ত্বেও মালেক ভাই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আমি তার কাছে যেয়ে বললাম, আপনি এত কষ্ট করেও এসেছেন। মালেক ভাই বললেন, যতদিন জীবন আছে অবশ্যই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সাথেই থাকব, নেত্রীর যেহেতু ডাক দিয়েছেন, আমি এসেছি এবং ভবিষ্যতেও আসব। আজকে মালেক ভাই আমাদেরকে এতিম করেই চলে গেলেন। মালেক ভাইয়ের স্থান কখনোই পূরণ হবে না।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭