ইনসাইড পলিটিক্স

ক্ষুব্ধ তারেক


প্রকাশ: 10/12/2022


Thumbnail

তারেক জিয়া ক্ষুব্ধ হয়েছেন। কয়েক দিন ধরেই তার মেজাজ বিগড়ে আছে। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপির নেতাদের কাছে। একই সাথে ক্ষুব্ধ হয়ে ডেভিড বার্গম্যানকে গালাগালি করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফোন করে মুশফিকুল ফজল আনসারীর কাছ থেকে টাকা ফেরত চেয়েছেন। বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। তারেক জিয়ার যে পরিকল্পনা ছিল সেই পরিকল্পনা পুরোপুরি ভেস্তে গেছে। শেষ পর্যন্ত তারেক জিয়ার ভবিষ্যৎবাণী সত্যি হয়নি, ভবিষ্যৎবাণী সত্যি হয়েছে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের। ১০ ডিসেম্বর নিয়ে তারেক জিয়ার ত্রিমাত্রিক পরিকল্পনা ছিল এবং এই ত্রিমাত্রিক পরিকল্পনার কিছুটা স্থায়ী কমিটির সভায় তিনি প্রকাশ করেছিলেন। যখন সরকারের পক্ষ থেকে বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার জন্য অনুমতি দেওয়া হয় তখন স্থায়ী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রবীণ নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছিলেন, আমাদের কৌশলগত কারণে এখন সংঘাতে যাওয়া ঠিক হবে না। বরং আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করি। কারণ এখানে সমাবেশ করে আমরা শক্তি সঞ্চয় করে সকল রাজনৈতিক দলকে নিয়ে পরবর্তী আন্দোলন কর্মসূচিতে যেতে পারবো। কিন্তু তার এই প্রস্তাবে রাজি হননি। তিনি প্রবীণ বিএনপির এই নেতাকে রীতিমতো ভর্ৎসনা করেছিলেন। তারেক বলেছিলেন রাজনীতির নতুন করে শিখতে হবে। যেকোনো মূল্যে নয়াপল্টনে সমাবেশ করার একটা বিস্তারিত পরিকল্পনা তিনি উপস্থাপন করেছিলেন। 

তারেক জিয়া এটিও বলেছিলেন যেকোনো মূল্যে নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে হবে এবং সমাবেশের পর সেখানে অবস্থান গ্রহণ করতে হবে। সমাবেশের দিন ঢাকার বিভিন্ন সড়কে যেন বিএনপির কর্মীদের উপস্থিতি থাকে সেটিও তিনি নিশ্চিত করতে বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন ইঙ্গিত দিয়ে বলেছিলেন ওই দিন আরও ঘটনা ঘটবে। আপনাদের এই সমাবেশই সব কিছুই নয়। কিন্তু ৭ ডিসেম্বর থেকে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে থাকে। প্রথমে বিএনপির জড় হওয়া নেতাকর্মীদেরকে বিচক্ষণতার সাথে সরিয়ে দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরপর বিএনপির একাধিক নেতা গ্রেপ্তার হন। ফলে শেষ পর্যন্ত বিএনপিকে পরাজয় স্বীকার করে, বাধ্য পিছু হটে। তারেক জিয়া এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। তিনি গতকালও বিএনপির একাধিক নেতাকে বলেছেন তারা কাওয়ার্ড, তারা সরকারের কাছ থেকে টাকা খেয়ে নয়াপল্টনে সমাবেশ করেনি, ইচ্ছা করলেই তারা পারতো। কিন্তু বাংলাদেশের বাস্তবতা তারেক জিয়া বুঝে না এমনটি মনে করছেন বিএনপি নেতারা। 

তারেক জিয়ার অন্য যে পরিকল্পনা ছিল তা হলো বাংলাদেশের ওপর একযোগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে। বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর কতিপয় সদস্যের ওপর একটি নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য শত কোটি টাকা খরচ করেছিলেন তারেক জিয়া। কারা কারা নিষেধাজ্ঞার আওতায় হতে পারে সেই তালিকাও সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু আজ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে কারো ওপর বাংলাদেশের কারো ওপর কেউই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি। ডেভিড ব্যাগমান এবং মুশফিকুল ফজল আনসারীকে তারেক জিয়া টেলিফোন করে ইচ্ছেমতো গালমন্দ করেছেন। মুশফিকুল ফজল আনসারীর কাছ থেকে টাকাও ফেরত চেয়েছেন। তারেক জিয়া মোটামুটি নিশ্চিত ছিলেন যে, বাংলাদেশের ওপর একটি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। ফলে সরকার বড় ধরনের চাপে পড়বে। কিন্তু বাস্তবতা হয়েছে উল্টো। তারেক জিয়ার ভুল রাজনীতির কারণে যেমন ২০১৪ এবং ২০১৮ তে বিপর্যস্ত হয়েছিল এবার আরেকবার সেই একই ঘটনা ঘটল বলেই বিএনপি নেতাকর্মীরা মনে করছেন।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭