ইনসাইড পলিটিক্স

প্রকাশ্যে ‘না’, আড়ালে বিএনপি সঙ্গে মাঠে নামছে জামায়াত


প্রকাশ: 11/12/2022


Thumbnail

জামায়াতে ইসলামী প্রকাশ্যে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক না থাকার কথা বললেও আড়ালে বিএনপির সাথেই সরকারবিরোধী আন্দোলন করছে জামায়াত। এর বাস্তব প্রমাণ পাওয়া গেছে গত শনিবার ঢাকায় গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির গণসমাবেশে। ওই সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর কয়েক হাজার নেতাকর্মী যোগ দিয়েছিল বলে জানা গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপি এবং জামায়াতের একাধিক নেতা বাংলা ইনসাইডারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে বিএনপি ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে আগামী ২৪ ডিসেম্বর ঢাকাসহ দেশের বিভাগীয় শহর ও জেলায় জেলায় গণমিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এর কিছুক্ষণ পর একই দিনে একই কর্মসূচি দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান যুগপৎ আন্দোলনের লক্ষ্যে ১০ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। একই দিনে বিএনপি-জামায়াতের কর্মসূচি রাজনৈতিক মহলে এক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। প্রশ্ন উঠেছে বিএনপি-জামায়াতের সম্পর্ক নিয়ে। প্রকাশ্যে জামায়াতের সাথে সম্পর্ক থাকা নিয়ে কথা না বললেও আড়ালে বিএনপি জামায়াতের সাথে সম্পর্ক রেখেছে কিনা এই প্রশ্নটি এখন বড় হয়ে সামনে আসছে।

এদিকে বিএনপি-জামায়াতের একই দিনের কর্মসূচি ঘোষণার পর বিস্ময় প্রকাশ করেছে পশ্চিমা কূটনীতিক মহল। কারণ পশ্চিমা কূটনীতিকদের কাছে জামায়াত একটি আতঙ্কের নাম। জামায়াতের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার শর্তে পশ্চিমা কূটনীতিকরা সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপিকে সমর্থন দিয়ে আসছিল বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। কিন্তু এক্ষেত্রে বিএনপি জামায়াতের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন না করে কৌশল অবলম্বন করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের সেই কৌশলের কথা ফাঁস হয়ে গেলো। অর্থাৎ প্রকাশ্যে জামায়াতের সাথে বিএনপির সম্পর্ক না থাকলেও গোপনে গোপনে বিএনপি-জামায়াত জোট এখনো সক্রিয় আছে এবং তারা এক সাথে কাজ করছে। যা পশ্চিমা কূটনীতিকদের জন্য অস্বস্তিকর বটে। ফলে রাজনীতিতে বিএনপি-জামায়াতের সম্পর্ক নিয়ে পশ্চিমা কূটনীতিকরা এখন নতুন করে হিসেব-নিকেষ করবে বলে জানা গেছে। জামায়াত যখনই প্রকাশ্যে আসলো তখনই বিএনপি আবার নেই পুরনো চরিত্রে ফিরে গেছে। আর সেই পুরনো চরিত্র তারা প্রয়োগ করেছে গত ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে পুলিশের ওপর ককটেল নিক্ষেপ করে। তার মানে আগে থেকেই বিএনপির সাথে জামায়াতের সম্পর্ক ছিল কিন্তু বিএনপি সেটা আড়াল করেছে। 

উল্লেখ্য যে, গত একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জামায়াতকে ২০ টি আসন দেয়। এখন বিএনপি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে আবার সরকারবিরোধী আন্দোলন করছে। আর আন্দোলনে তারা জামায়াতকে পাশে পেয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে বিএনপি যদি আবার রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে তাহলে বিএনপি-জামায়াত জোট আবার সরকার গঠন করবে এবং যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে স্বীকৃতি জামায়াত আবার সংসদে যাবে। অর্থাৎ বিএনপি আবার সেই ২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী সময়ের মতো যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে পতাকা তুলে দিবে। যা হবে বাঙালি জাতির জন্য একটি দুভাগ্যজনক ঘটনা। আবার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস কলঙ্কিত হবে। অর্থাৎ বিএনপি যে জামায়াতকে কখনো ছাড়তে পারবে না এটা গতকালের ঘটনায় স্পষ্ট হয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আফগানিস্তান তালেবানদের উত্থানের পর পশ্চিমা কূটরীতিকরা বিএনপি কতটুকু সমর্থন দিবে সেটি একটি চিন্তার বিষয়।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭