ইনসাইড পলিটিক্স

সাত আসনে উপনির্বাচন: আওয়ামী লীগ সুযোগ হিসেবে দেখছে


প্রকাশ: 12/12/2022


Thumbnail

জাতীয় সংসদে বিএনপির ছয়জন সংসদ সদস্যের পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে। এ সংক্রান্ত গেজেটও গতকাল প্রকাশিত হয়েছে। খুব শিগগির আরেক জন সংসদ সদস্যের পদত্যাগ পত্রের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। ধারণা করা হচ্ছে এই পদত্যাগপত্র গৃহীত হবে এবং এ সংক্রান্ত গেজেট খুব শীঘ্রই জারি হবে। সংবিধান অনুযায়ী এখন ৯০ দিনের মধ্যে জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে হবে। নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশের পর এ সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানা গেছে। নির্বাচন কমিশন বলছে যে, এখন নির্বাচন সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা। জাতীয় সংসদের মেয়াদ যেহেতু আরও এক বছর রয়েছে কাজেই এই সময়ের মধ্যে সংসদের সাত আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠান করতেই হবে। সেই উপনির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন খুব শীগ্রই তফসিল ঘোষণা করবে বলেও জানা গেছে। আওয়ামী লীগ এই উপনির্বাচনকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছে এবং এটা আওয়ামী লীগের জন্য একটা বিরাট সুযোগ বলে আওয়ামী লীগ মনে করছে। আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা বলছেন যে, উপনির্বাচন এতো অবাধ সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হবে যে সকলে তাক লাগবে এবং সকলেই সন্তুষ্ট হবে। এর ফলে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি চিরতরে ধামাচাপা পড়বে। 

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে যে, এই সাতটি আসনের উপনির্বাচন হবে ১৯৯৬ এবং ২০০৮ নির্বাচনের মতো যেখানে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের একটি মাইল ফলক রচিত হবে। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রতিযোগিতা করবে। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কৌশল হলো অন্যান্য রাজনৈতিক দলও যেন এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সে ব্যাপারে তাদেরকে আগ্রহী করে তোলা। এই নির্বাচনের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টির সঙ্গে কথা বলবে এবং আওয়ামী লীগের ধারণা অন্যান্য ইসলামপন্থী দলগুলো এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। এই নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্য জয়-পরাজয়ের বিষয় নয়। এই নির্বাচন আওয়ামী লীগ সরকার যে অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর এবং অঙ্গীকারাবদ্ধ সেটি প্রমাণের নির্বাচন। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলছেন যে, নির্বাচনের আগেই আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ নির্বাচন নিয়ে কোন রকম বাড়াবাড়ি, কোনরকম কারচুপি না করার জন্য নির্দেশনা দিবে এবং কেউ যেন নির্বাচনী আইন লঙ্ঘন করে, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অমান্য করে, কেউ জন্য বাড়াবাড়ি না করে সে ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগের এই নির্বাচনের মাধ্যমে একটি জনমত যাচাইও করতে চায়। 

গত ১৪ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায়। দেশে এই সময়ের মধ্যে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এই উন্নয়ন গুলোর প্রতি জনগণের আস্থা কতটুকু, জনগণ উন্নয়নের কতটা সন্তুষ্ট সেটি প্রমাণ হবে এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। আর এ কারণেই অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন করাটা আওয়ামী লীগের জন্য জরুরী। এই নির্বাচনটা এমন একটা সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন জাতীয় সংসদের সময় গড়িয়ে এসেছে এবং ১১ এপ্রিলের মধ্যেই এই অনুষ্ঠান করতে হবে। কাজেই এই নির্বাচনের পরপরই জাতীয় সংসদের নির্বাচনের দামামা বাজবে বাংলাদেশ। অতএব নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় এবং একটি দৃষ্টান্ত মূলক নির্বাচন হয় তাহলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির চিরতরে মৃত্যু ঘটবে এবং এই দাবির প্রতি আগ্রহ দেখাবে না। বরং এটি প্রমাণিত হবে যে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার নয় বরং নির্বাচন কমিশন চাইলেই অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনেই অনুষ্ঠান করা সম্ভব। আওয়ামী লীগের জন্য এই উপনির্বাচন হলো সেটি প্রমাণের। আর সে কারণেই আওয়ামী লীগ এটাকে একটা সুযোগ হিসেবে দেখছে।


প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭