ইনসাইড বাংলাদেশ

পটুয়াখালীর দুমকিতে ফলের বাগান করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা কাজেম আলীর


প্রকাশ: 13/12/2022


Thumbnail

অন্যের কাছ থেকে জমি লিজ নিয়ে ফলের বাগান করেছেন পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার মুরাদিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের উত্তর মুরাদিয়া গ্রামের কাজেম আলী মৃধা। ২'একর জমি ১০বছর মেয়াদী লিজ নিয়ে গড়ে তুলেছেন বড় আকারের ফল ও শাক-সবজির বাগান। 

তার বাগানে রয়েছে মাল্টা, কুল, কমলা, পেয়ারা, লেবু ও আমসহ বিভিন্ন ফলের গাছ। বেশ ভালো ভাবেই বেড়ে উঠছে এ ফলের গাছ গুলো। ফল বাগানের ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন রকমারি শাকসবজি এবং পেঁপেও চাষ করেছেন। খনন করেছেন তিনটি পুকুর যেখানে চাষ করেছেন দেশী জাতের শিং, টেংরা,কার্প ও সাদা মাছ। গোটা বাগান জুড়ে রয়েছে সবুজের সমারোহ। কোন কোন গাছে ধরেছে মাল্টা , বড়‌ই গাছে ফুল, কুঁড়ি ও ফল ধরেছে। 

তিনি জানান, পূর্বে তার চট্টগ্রামে চাকুরী ছিল, করোনার কারণে চাকরি চলে যাওয়ায় ব্যবসায় নামেন, সেখানেও লোকসান দিয়ে অবশেষে বাগান করার উদ্যোগ নেন। মার্চ ২০২২ এ  তিনি ৩টি পুকুর খনন করে জমিতে মাটি দিয়ে বাগান প্রস্তুত করেন এবং এপ্রিল-মে  মাস থেকে বাগানে বারি-১জাতের ২৭০টি মাল্টা, অস্ট্রেলিয়ান উদ্ভাবিত বলসুন্দরী ও ভারতের ভারতসুন্দরী উচ্চ ফলনশীল জাতের ১২০টি কূঁলের চারা, দার্জিলিং জাতের ৫০ টি কমলা, দেশী জাতের ২০টি কাগজি লেবু চারা ও এছাড়াও রয়েছে উচ্চ ফলনশীল গোল্ডেন-৮ জাতের ৪০/৫০টি পেয়ারা  গাছ। এসকল ফলজ গাছে ইতিমধ্যে মাল্টা, পেয়ারা,কূঁল ও লেবুর ফলন ধরা শুরু করেছে। এসকল ফলজ চারা তিনি ঝিনাইদহের বিখ্যাত রফিকুল ইসলামের  নার্সারি থেকে সংগ্রহ করেছেন এবং প্রতিটি চারায় ১৪৫টাকা খরচ হয় । ফলের বাগানের ভিতর থাইল্যান্ডের রেডলেডি ও লাল তীর জাতের শতাধিক পেঁপে গাছ  রয়েছে, এর থেকে গড়ে প্রতিদিন শতাধিক পাকা পেঁপে বিক্রি করেন। এছাড়াও  বারমাসি বেগুন, লাউ, লাল শাক, ধনিয়া, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বরবটি ও টমেটোর চাষ করেছেন। শাক-সবজি বিক্রয় করে গড়ে ২২/২৫ হাজার টাকা আয় করেন। তিনি ৩টি পুকুরে দেশী জাতের ১৫হাজার শিং, ১লক্ষাধিক গুলিশা ও টেংরা, ১০হাজার কার্প জাতীয় মাছ চাষ করেছেন। কত টাকা খরচ হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাগান তৈরিতে এ পর্যন্ত ১০ লক্ষাধিক টাকা বিনিয়োগ করেছেন। তিনি বাগানে রাসায়নিক সারের চেয়ে নিজের তৈরি জৈব সার বেশি প্রয়োগ করেন এ লক্ষ্যে তিনি গোবর ও অন্যান্য জৈব পদার্থ দিয়ে সার প্রস্তুত করেন এবং নিজে  কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শক্রমে জৈব কীটনাশক তৈরি করে প্রয়োগ করেন। উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ মোতাবেক তিনি বাগানের ফলজ ও শাক-সবজির পরিচর্যা করে থাকেন। তবে তিনি উল্লেখ করেন যে, তার এখন অর্থের দরকার, নিজের যা ছিল তা ইতিমধ্যে বিনিয়োগ করেছেন। সংসারে স্বামী-স্ত্রী, বড় ছেলে চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১বর্ষে  ও ছোট ছেলে জয়গুননেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেনীতে পড়াশোনা করে। এমতাবস্থায় বাগান থেকে যে আয় হয় তাতে সংসার ও ছেলেদের পড়াশোনার খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। একজন বাগান খামারি উদ্যোক্তা হিসেবে কোন ব্যাংক বা এনজিও থেকে ঋণ প্রয়োজন বলে জানান তিনি।

দুমকি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মেহের মালিকা বাংলা ইনসাইডার কে জানান, কাজেম আলী মৃধা একজন দক্ষ এবং শিক্ষিত নতুন কৃষি উদ্যোক্তা। আমাদের প্রকল্প থেকেও তাকে ফলের চারা, শাক-সবজির বীজ, সার, কীটনাশক দিয়ে সহায়তা করে আসছি।  তিনি আমাদের পরামর্শক্রমে উক্ত বাগানের সফলভাবে ফলজ গাছের চারা রোপণ করেছেন,  কোন কোন গাছে স্বল্প সময়ের মধ্যেই ফল দিতে শুরু করেছে। বাগান পরিচর্যা রোগবালাই দমন, সার কিট-নাশক প্রয়োগের ব্যাপারে উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগন নিয়মিত মনিটরিং করছেন।৷ আমি সময় পেলে নিজে  গিয়ে পরিদর্শন করি। পটুয়াখালী জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খায়রুল ইসলাম মল্লিক‌ও বাগানটি পরিদর্শন করেছেন।

একই এলাকার নিজাম উদ্দিন বাংলা ইনসাইডার কে জানান, পটুয়াখালীর দুমকিতে আজগর আলীর বাগান এবং ঘেরে আমি নিজে গিয়ে দেখেছি তার বাগানে অনেক রকমের ফল এবং গাছ মাছ শাকসবজি ইত্যাদি চাষাবাদ করতে। সে অল্প কিছু পূজি নিয়ে হালকা কিছু গাছ লাগিয়ে ব্যাবসা শুরু করে। সে অনেক বড় ব্যাবসায়ী হোক এই আশা করি এবং দোয়া করি তার পাশে কৃষি কর্মকর্তা এবং কৃষি গবেষণাবিদেরা থাকুক। 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭