জামায়াতের আমীর ডা. মোঃ শফিকুর রহমানকে গত সোমবার গ্রেপ্তার করা হয়। রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। তাকে এখন সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু জামায়াতের আমিরের টেলিফোনের কল লিস্ট এবং অন্যান্য তথ্য উপাত্ত ঘেটে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তিনি জামায়াতের আমীর হলেও সার্বক্ষণিকভাবে লন্ডনে যোগাযোগ করেছেন এবং জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেছেন যে, তারেক জিয়ার সঙ্গে তাঁর দিনে অন্তত তিন থেকে চারবার যোগাযোগ হয়। ডা. মোঃ শফিকুর রহমান এটাও স্বীকার করেছেন যে, জামায়াতের সঙ্গে বিএনপি এখনো ঘনিষ্ঠ এবং গভীর যোগাযোগ রয়েছে। বিএনপি গত কিছুদিন ধরেই বলার চেষ্টা করছে যে জামায়াতের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নাই। এই জন্য ২০ দলকেও অকার্যকর করে রেখেছে। কিন্তু থলের বিড়াল বেরিয়ে আসে যখন বিএনপির ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। বিএনপির ১০ দফা আন্দোলনকে জামায়াত সমর্থন করে সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপির সঙ্গে সুর মিলিয়ে প্রায় একই রকম দাবি দাওয়া দিয়ে যুগপৎ আন্দোলন শুরু করে। ১৩ ডিসেম্বর তারা
বিক্ষোভ মিছিলও করে। আর এর পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জামায়াতের সঙ্গে জঙ্গিদের সংশ্লিষ্টতাসহ সন্ত্রাসবাদ এবং জঙ্গিবাদ উসকে দেওয়ার একাধিক অভিযোগ পায়। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে জামায়াতের আমিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেফতার করার পর এখন জিজ্ঞাসাবাদে ডা. শফিকুর রহমান অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, জামায়াতকে মূলত বিভিন্ন নাশকতা সৃষ্টি করার কাজে তারেক জিয়া ব্যবহার করছিলেন। আর একারণেই জামায়াতের আমিরের সঙ্গে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ করছিলেন। জামায়াতকে তারেক জিয়া তিনটি দায়িত্ব দিয়েছিল।
প্রথম দায়িত্ব হলো, বিএনপি যে আন্দোলনের কর্মসূচি গুলো করছে সেই আন্দোলনের কর্মসূচি প্যারালাল কর্মসূচি পালন করা। এর জন্য জামায়াত যুগপৎ কর্মসূচি গ্রহণ করেছিল।
দ্বিতীয়ত, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থাপনা এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ওপর আক্রমণ চালানো এবং হামলা করা। যাতে সমাজে একটি আতঙ্ক তৈরি হয়।
তৃতীয়ত, বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনগুলোর নেটওয়ার্ক তৈরি করা এবং এই জঙ্গী সংগঠন গুলো যেন বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাস সহিংসতা এবং আচমকা হামলার ঘটনা ঘটায় সেই ব্যাপারে তদারকি করা।
আর এই তিন কাজের জন্য জামায়াতের আমিরকে তারেক জিয়া ব্যবহার করতেন এবং তারেক জিয়ার নির্দেশেই তিনি এই কাজগুলো করছিলেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বলছেন যে, ডা. শফিকুর রহমান এখন রিমান্ডে আছেন। রিমান্ডে তার কাছ থেকে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে। আর তাহলেই তারেক জিয়ার পরিকল্পনার নীলনকশাটাও পরিষ্কার হবে। তবে তারেক জিয়ার সঙ্গে জামায়াতের আমিরের কথোপকথন একটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করেছে যে, তারেক জিয়া কি তাহলে জামায়াতের প্রধান নেতা?