স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীসহ দলের শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত শতাধিক নেতাকর্মীকে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। এব্যাপারে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা দলের মধ্যে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছে তাদের মধ্যে শতাধিক নেতা ক্ষমা চেয়ে আবেদন করেছেন। সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমা করেছেন। জাতীয় কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে ক্ষমা করা হয়েছে। এর বাইরে কেউ থাকলে তারাও আবেদন করতে পারবে। অথচ কিছুদিন আগেও বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে ছিল আওয়ামী লীগ।
দল থেকে বলা হয়েছিল যে, নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে যারা প্রার্থী হবেন তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে এবং ভবিষ্যতে তাদের আর কখনো নৌকা প্রতীক দেয়া হবে না। বিদ্রোহী প্রার্থীদের বরদাস্ত করা হবে না এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোথাও কোথাও বিদ্রোহী প্রার্থীদের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে বহিষ্কার করা হয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে সেই অবস্থান থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ এবং তারই ফলশ্রুতি হলো গতকাল শতাধিক নেতাকে সাধারণ ক্ষমা দেয়ার ঘোষণা।
আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, দল বহিষ্কার করার ব্যাপারে নীতিগত অবস্থান থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে আর মাত্র এক বছর বাকি রয়েছে। দলের জয় সুনিশ্চিত করতে সংগঠনকে শক্তিশালী করা একান্ত অপরিহার্য একটি বিষয়। এমনিতে এখন সরকারবিরোধী শক্তিগুলোর এক সঙ্গে চোখ রাঙ্গাচ্ছে। ফলে যেকোনো ষড়যন্ত্র বা প্রতিপক্ষ শক্তিকে মোকাবিলা করতে দলের ঐক্যের প্রয়োজন আছে।
এছাড়া যারা দলের মতামতকে উপেক্ষা করে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছে তাদের অতীত রাজনীতির ইতিহাস ইতিবাচক। দলের জন্য তাদের ত্যাগ রয়েছে। যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন তারাও বিভিন্ন জন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। স্থানীয় পর্যায়ে দলের মধ্যে তাদের একটি শক্ত বা কর্তৃত্ব রয়েছে। এখন যদি তারা দলের বাইরে থাকেন তাহলে দলের মধ্যে একটা বিভক্তি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেই ঝুঁকি আওয়ামী লীগ নির্বাচনের এক বছর আগে নেবে না বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। আর এ সমস্ত কারণেই বিদ্রোহী প্রার্থীদের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ নমনীয় হয়েছে বলে জানা গেছে।